আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ‘তৃতীয় নিরাপদ দেশ’ হিসেবে কাজ করতে সম্মত হলো বেলিজ
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে মধ্য আমেরিকার ছোট দেশ বেলিজ, যার মাধ্যমে দেশটি এখন থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য “তৃতীয় নিরাপদ দেশ” হিসেবে কাজ করবে। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব অভিবাসীকে বহিষ্কার করা হবে, তারা নিজ দেশে ফেরার পরিবর্তে বেলিজে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
বেলিজের প্রধানমন্ত্রী জন আন্তোনিও ব্রিসেনো জানান, এই চুক্তি এখনো সংসদের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। তিনি বলেন, “এটি মূলত এক ধরনের কর্মসূচি হবে, যেখানে যোগ্যতাসম্পন্ন মানুষ বেলিজে এসে আমাদের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।”
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে চুক্তিটিকে “অবৈধ অভিবাসন বন্ধ এবং আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক” বলে অভিহিত করেছে। এর আগে আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্যারাগুয়ের অনুরূপ একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এছাড়াও চলতি বছর পানামা, কোস্টারিকা, এল সালভাদর এবং হন্ডুরাস যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো কিছু অভিবাসীকে গ্রহণ করেছে।
তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই ধরনের চুক্তির কড়া সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, এতে আশ্রয়প্রার্থীরা এমন দেশে পাঠানো হতে পারে যেখানে তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে।
বেলিজের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছে, “চুক্তিটিতে জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।” মন্ত্রণালয় আরও জানায়, “বেলিজের হাতে সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব থাকবে কোনো স্থানান্তর অনুমোদন বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষেত্রে। নির্দিষ্ট কিছু জাতীয়তার মানুষই কেবল এই সুবিধা পাবে, এবং প্রত্যেকের ব্যাপারে বিস্তারিত ব্যাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে।”
অন্যদিকে বিরোধী দলীয় নেতা ট্রেসি টেগার প্যানটন চুক্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তার মতে, “এটি বেলিজের অভিবাসন ও আশ্রয় ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে, করদাতাদের ওপর আর্থিক চাপ বাড়াবে এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে।”
চুক্তির বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতীক এবং আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যৌথ প্রতিশ্রুতি জোরদার করবে।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কারে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। জুন মাসে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় যে, ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশ ছাড়া অন্য দেশে পাঠাতে পারবে, এমনকি তারা ঝুঁকির আশঙ্কা জানালেও।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন