আপডেট :

        শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ , পত্রিকা অফিসে আগুন

        সেনা-স্থাপনায় হামলা, অস্বীকার পাকিস্তানের

        আওয়ামী লীগের বিষয়ে ফয়সালা

        জম্মু বিমানবন্দরে বিস্ফোরণ

        জন্ম নিচ্ছে ৬ হাজার শিশু

        ডিমের দাম বাড়ছে, কিন্তু মুরগি পালন কি সত্যিই সাশ্রয়ী? অভিজ্ঞ খামারিদের মতামত

        থ্রি ডোরস ডাউন ব্যান্ডের ব্র্যাড আর্নল্ডের স্টেজ-৪ ক্যানসার, সামার ট্যুর বাতিল

        গ্রিনল্যান্ডে গুপ্তচরবৃত্তি: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করলো ডেনমার্ক

        লিবিয়ায় অভিবাসীদের বহিষ্কার পরিকল্পনা সাময়িকভাবে স্থগিত করলেন মার্কিন বিচারক

        কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভে পুলিশের অভিযান, বহু শিক্ষার্থী আটক

        চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে তরুণকে ফেলে দেয় ছিনতাইকারীরা

        ট্রাম্পের বিলাসবহুল ডিনারে মাথাপিছু দেড় মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করা হয়

        দুই কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে

        ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল

        এই হামলাকে কাপুরুষোচিত বলে উল্লখে করেছেন পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমির ও মাহিরা খান

        স্কুলে আশ্রয় নিয়েও রক্ষা পাচ্ছে না বাস্ত্যুচ্যুতরা, ইসরায়েলি হামলায় নিহত ১৫

        মার্কিন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে এখন থেকে রিয়েল আইডি বাধ্যতামূলক

        সরকারি চাকরি ফিরে পাচ্ছেন জিয়া পরিবারের সদস্য ডা. জোবাইদা রহমান

        আগুন নিয়ে খেলছে ভারত

        ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উদ্বেগ

এক বাংলাদেশী বাঙালির আত্মপক্ষ সমর্থন

এক বাংলাদেশী বাঙালির আত্মপক্ষ সমর্থন

আমি আমার এই দীর্ঘ জীবনে নিজেকে প্রতিটি ক্ষেত্রেই "বাঙালি" হিসেবে পরিচয় দিয়েছি, গর্ববোধ করেছি। "বাংলার মাটি বাংলার জল" গানটি গাইবার সময় বিশেষ করে, "বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন-এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান ॥" এই দুটো পঙক্তিতে এসে অশ্রুসজল হয়েছে দু'চোখ।
 ভারতীয় দল ক্রিকেটের মাঠে সার বেঁধে দাড়িয়ে, "জন গন মন" গাইবার সময় কণ্ঠ মিলিয়ে অন্তরের সবটুকু শুভেচ্ছা ছড়িয়ে দিয়েছি হাওয়ায় হাওয়ায়। আমার ঘরের সবাই আমাকে একজন অত্যন্ত নির্ভেজাল, নির্বিবাদী আবেগী বাঙালি হিসেবেই জেনে এসেছে। আড়ালে আবডাালে হেসেছেও। আমি উপভোগ করেছি ওদের এই লুকোচুরি। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ছাত্রজনতার আন্দোলনে ভারত এবং ভারতীয় কিছু "বন্ধু"(?) দের ব্যবহার আমাকে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে। আমি শঙ্কিত হয়েছি। এবং সবশেষে আমি নিশ্চিত হয়েছি, আমার পরিচয় প্রকৃতপক্ষে একজন "বাংলাদেশী বাঙালি। না হলে, একটা দেশের গণতান্ত্রিক জাগরণকে এত নেতিবাচক তকমা দেয়ার চেষ্টা কেন? যে সমস্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি, তাদের কিছুর নমুনা একটু দিতে চাই। প্রশ্ন ১। হঠাৎ করে সব বদলে গেল এমন করে, যা নিশ্চয়ই কাম্য ছিল না কারো।বুঝতে পারছি না অথবা হয়তো আঁচ পাচ্ছি।অনেক প্রশ্ন?
প্রশ্ন ২। খুব সামান্য একটা কথা জানতে চাইঃ  একটা রাষ্ট্রে এতো বড়ো ধরনের বিপ্লব করতে গেলে এবং বিপ্লব পরবর্তী অরাজক পরিস্থিতিতে বিপুল অঙ্কের অর্থ প্রয়োজন হয়। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা যতদূর জানি, খুবই খারাপ। তবে কি ভারতের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য বৃহত্তর অন্য কোনো তৃতীয় শক্তি অর্থ ও ইন্ধন যোগাচ্ছে? এরকম আরো বহুকিছু আমার নজরে এসেছে। যেখানে যতটুকু সম্ভব সংক্ষিপ্ত উত্তর দিয়েছি। আঁচ করেছি, আমার জবাব তাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি।এরপর থেকে, নিয়ম করে প্রতিদিন ভারতীয় মিডিয়াগুলোর প্রচার শুনে বুঝতে চেষ্টা করেছি, পাশের দেশে উন্মত্ত উত্তাল এই আন্দোলনের হৃদস্পন্দন বুঝতে তাদের কোথায় অসুবিধে হচ্ছে এবং কেন অসুবিধা হচ্ছে। দেখলাম ও শুনলাম, "রিপাবলিক বাংলা" নামে একটি চ্যানেলে যে পরিমান প্রোপাগান্ডাএবং মিথ্যে প্রচার হচ্ছে তা বিশ্বের ইতিহাসে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু, তবুও প্রশ্ন থেকে যায় তাদের কাছে, যারা মানবতার কথা বলেন, গল্প লেখেন, কবিতা লেখেন, তাদের বোধ এতটা বুদ্ধিহীন কেন? নতুন যে ইতিহাসের সূচনা হলো, তার একটু রেশ টেনে বলি ছাত্রআন্দোলন শুরু হয়েছিল, এক দফা দাবীতে। এবং সেটা হলো, "কোটা সংষ্কার"।  শেখ হাসিনা চীন সফর শেষে ফিরে এসে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিতে বসলেন। তার বৈঠকী কায়দার প্রেস বিজ্ঞপ্তি বেশীক্ষণ শোনা যায় না। একজন প্রধানমন্ত্রীর শব্দ ও বাক্য চয়নে যে ওজন থাকা অতি আবশ্যক সেটা তার মধ্যে কোনোদিনই ছিল না। প্রভাস আমিন নামে এক সাংবাদিক জানালেন যে, "ছাত্ররা তো রাস্তায়- তারা কোটা সংস্কার চায়। আমার কাছে যদি একজন মুক্তিযোদ্ধা আর রাজাকারের আবেদনপত্র আসে, তা হলে তো আমি মুক্তিযোদ্ধাকেই চাকরী দেব"। 
শেখ হাসিনা ভীষণই পছন্দ হলো, তিনি লুফে নিলেন। হাসিমাখা কণ্ঠে বললেন, "চাকরী মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা পাবে? না রাজাকারের নাতিপুতিরা? এই বেলা আমার একটা প্রশ্ন আমি জানিয়ে রাখি। "বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশরত্ন, মাননীয়া, আপনি কি রাজাকারের নাতিপুতিদের একটি তালিকা তৈরি করেছিলেন? না কি , রাজাকারের নাতিপুতিদের নাগরিকত্ব বাতিল করেছিলেন? যদি না করে থাকেন, সকল নাগরিককে সংশয়মুক্ত করার দায় কি আপনার নয়"? যাই হোক, আমি তারুণ্যের সীমা পেরিয়ে এসেছি বহুদিন আগেই। আমার রক্তে প্রতিবাদী উন্মাদনা প্রায় স্তিমিত। যারা তরুণ ছাত্রছাত্রী, এতদিন ধরে রাজপথে ছিল যাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান, এই তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে ভরা মন্তব্য তাদের বুকে বুলেটের মতো বিঁধছিল। এই বয়স অপমান সইতে জানে না। জানে প্রতিবাদ করতে, জানে রুখে দাঁড়াতে। ১৯৭১ এর পর গত হয়েছে প্রায় পাঁচ দশক। এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভেদাভেদ জানে না। স্পষ্টবাদীতা এবং স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী। ধুনফুন দিয়ে এদের বলা যায় না, "তফাৎ যাও"। এরা রক্তচক্ষুকে পরোয়াও করে না। এই ছাত্রছাত্রীগুলো যে ইতিহাস পড়ে বড় হয়েছে, সে ইতিহাস খণ্ডিত। এরা প্রশ্ন তুলেও কোনো সদুত্তর পায়নি। এরা বড় হতে হতে বুঝে গিয়েছে, এ দেশের সমীকরণ কী? এরা বঞ্চিত হয়েছে একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার 'ভোট' থেকে। তার মানে, এরা কি ভোট দিতে যেতে পারতো না? অবশ্যই পারতো। কিন্তু, গিয়ে কী লাভ? যেখানে ব্যালট বাক্স ভরে যাবে বিনা ভোটে, সেখানে রিক্সা ভাড়া খরচ করে গিয়ে কোনো লাভ নেই, এইটা এরা বুঝে গিয়েছিল। যে বয়সটাতে ওরা রাজপথে, তাদের অভিভাবকরা অথবা পরিবারের কেউই হয়তো মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেনি। তবে কী তারা রাজাকার? এজন্যই কী তাদের ঐ ৪৩% কোটা নিয়ে মারামারি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না? "মেধাভিত্তিক কোটা চাই, চাকরীর নিশ্চয়তা চাই"- এই সব স্লোগান পাল্টে গেল সেই বিকেলে। রাতের মধ্যে লেখা হলো নতুন স্লোগান, "তুমি কে আমি কে ,রাজাকার, রাজাকার। কে বলেছে কে বলেছে,স্বৈরাচার, স্বৈরাচার। চেয়েছিলাম অধিকার,হয়ে গেলাম রাজাকার।" রাজাকার বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঘৃণ্য নাম। স্লোগানটির প্রথম দুটো লাইন নিয়ে সরকারী ও আওয়ামী লীগের তোষামদি স্তাবকরা চাউর করতে লাগলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করা হয়েছে। এরা সকলেই স্বাধীনতার বিপক্ষের লোক। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিলেন, "এই রাজাকারদের ট্যাকেল করতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট"। রাজপথে হাসিনার আদেশে নেমে গেল আওয়ামী লীগের পেটোয়া গুণ্ডা বাহিনী আর পুলিশ। যে পুলিশ জন সাধারনের হেফাজতে নিয়োজিত, হাসিনার আদেশে তাদের হাতে উঠে এলো অটোমেটিক রাইফেল। কয়েকদিন ধরে চললো, একতরফা মারপিট, খুন।রংপুরের আবু সাঈদ খুন হলো নির্মম নৃশংসতায়।যে দেখেছে একমাত্র সেই বলতে পারবে, তার মৃত্যুর দৃশ্য ছিল কতটা ভয়াবহ। "মুগ্ধ"- যে পানি এবং বিস্কুট দিতে এসেছিল তার সহযোদ্ধাদের, তার মাথা এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে গেল এক সেকেন্ডে। এই ঘটনার পর যে ছেলেটি স্কুলে পড়ে, যার এ মুহূর্তে কোটার দাবীতে পথে নামার কথা নয়, সেও নেমে এলো। কলেজের ছাত্রছাত্রী তাদের ভাইদের হত্যার প্রতিবাদে মিছিলে শামিল হলো। অভিভাবকরা সম্মুখ সমরে নামলেন, বললেন, গুলি করলে তাদেরকে গুলি করতে হবে প্রথম। শিক্ষকরা চুপ করে বসে থাকাকে অনৈতিক মনে করে ছাত্রদের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। শামিল হলো মুদি দোকানদার, রিকসাওয়ালা মামা, বাংলাদেশের জনগন। হত্যাকাণ্ডের এই অন্যায় খেলায় প্রতিবাদ করলোনা শুধুমাত্র দলদাসেরা, যাদেরকে আমি বিনা দ্বিধায় বলবো এবং আমাদেরই মাঝে মিশে থাকা ছদ্মবেশী লীগের পাণ্ডারা। এর মধ্যে মহামান্যকে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন দফা সহ ছাত্রদের দাবীদাওয়া। যেমন, ক্ষমা চাইতে হবে, কয়েকজন মন্ত্রিকে পদত্যাগ করতে হবে। নিহত ছাত্রদের পরিবারে গিয়ে তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইত্যাদি। কিন্তু, মহামান্য তো শেখের কন্যা। বাংলাদেশ তার বাপের তালুকাত। জনসাধারণের কাছে তিনি কেন জবাবদিহি করবেন। তিনি, মেট্রোরেল দিয়েছেন বাংলাদেশকে। তিনি পদ্মাসেতু দিয়েছেন। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়েছেন। বিনিময়ে কেড়ে নিয়েছেন, ভোটের অধিকার, কেড়ে নিয়েছেন বাক স্বাধীনতা। অবাধ্য নাগরিককে তিনি ভরেছেন আয়নাঘরে, করেছেন শতাধিক গুমখুন। ভোট চুরি করে গদি আঁকড়ে রেখেছেন একটানা পনের বছর।তিনি এই ভেবে সুখ পান, এ সবই তার অধিকার। তিনি মনে করেন এ দেশটা তার , কারণ দেশকে স্বাধীন করেছেন তার বাবা। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেননি, জনগনকে বাদ দিয়ে কোনো রাজনীতি টেকসই হয় না। তিনি ভুলে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশের মাটিতে দাম্ভিক ও স্বৈরাচারী সরকারের পতনের নিদর্শন রয়েছে। ধীরে ধীরে ছাত্র আন্দোলন রূপান্তরিত "ছাত্রজনতার আন্দোলনে"। হলো সব দফার দফারফা। ১৬ই জুলাইয়ের পর থেকেই ঢাকার রাজপথের উত্তাল বিক্ষোভ ও প্রতিরোধের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগে, জেলা এবং অঞ্চল থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে। রক্তাক্ত জুলাইয়ের ভয়ার্ত চিৎকার দেশের ঘরে ঘরে ১৯৭১ এর হানাদার বাহিনীর অত্যচারের থেকেও যে ভয়ঙ্কর আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, তা অবর্ননীয়। পথে ঘাটে যে কোনো ছাত্রদের, সাধারণ মানুষদের ধরে ধরে চালান করে দেয়া হচ্ছে কারাগারে। প্রতি রাতেই চলছে crack down. পাক হানাদার বাহিনী যা করেছিল, ঠিক একই কায়দায়। পার্থক্য শুধু এই যে, ৭১ এ, দরজায় বা সিঁড়িতে পাওয়া যেতো রাজাকারের "ঠক ঠক ঠক" বা পায়ের আওয়াজ। আর ২০২৪ শে দরজায় কড়া নেড়েছে সরকারী দলের পাণ্ডারা। ডিবি অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে যাকে তাকে। পরিবারের স্বজনরা ডিবি অফিসে দেখা করতে গেলে তাঁরা অস্বীকার করছেন। শুনেছি, দরজা খোলার পর একটাই প্রশ্ন ছিল, "বাড়িতে ছাত্র আছে?" এ যেন ৭১ এর সেই প্রতিধ্বনি, "স্যার একটু বাইরে আসবেন? কথা আছে"- তারপর চোখ বেঁধে গুম খুন। ঘরে ঘরে সেই একই হিমশীতল আতঙ্ক, একই আর্তনাদ।শুধুমাত্র পাল্টেছে শোষকের গায়ের জামা, এই দৃশ্যে রক্ষক হয়েছে ভক্ষক। একাত্তরে ভক্ষকই ছিল ভক্ষক। ১৮ই জুলাই কোটা আন্দোলন তখন আর কোটা আন্দোলন নেই। রূপ নিয়েছে 'বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে, জনমানুষের তখন একটাই দাবী। স্বৈরাচারী সরকারের পতন। সরকারী খবর এ প্রকাশ ছাত্ররা হানা দিয়েছে মেট্রোরেল, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন, ডাটা সেন্টার ইত্যাদি আরও বেশ কয়েকটি KPI ( key performance indicator). আমার ধারণা এবং অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, যে সমস্ত স্থাপনাকে KPI বলা হচ্ছে সেখানে থাকা উচিত কঠিন নিরাপত্তা। এমন না যে, একজন পুলিশকে একটা ছররা বন্দুক দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়। বরং Automatic Rifle টা এখানেই দরকার ছিল। এমন একটা অস্থিতিশীল অবস্হায় সে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি কেন? বিটিভি ভবন একটা দুর্গের মতো। ওখানে গান গাইতে গাইতে প্রবেশ করা যায় না। বেশ কয়েকটা ধাপ পেরোতে হয়। ওখানে নিরাপত্তা ছিল না কেন? শোনা যায়, কর্মকর্তারা জিম্মি হয়ে ছিলেন কয়েক ঘণ্টা। এবং অনেক পরে আর্কাইভ পুড়িয়ে দেয়া হয়। জিম্মি করে রাখবার কোনো কারণ তো দেখি না। যদি, ধ্বংসই লক্ষ্য হতো তাহলে এ তো এক ঘণ্টারও কাজ না।খবরে আরও প্রকাশ, ডাটা সেন্ঢুটারে ডুকে পদ্মা সেতুর জরুরী দলীলপত্র পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এবার একটু নড়ে চড়ে বসলাম। পদ্মা সেতুর দলীল দস্তাবেজ "নাই" হয়ে গেলে কার লাভ সবচেয়ে বেশি? প্রশ্নবিদ্ধ হয়, হামলাকারীরা আসলে কারা? বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয়া সেদিন প্রেস ব্রিফিংএ শোক ভারাক্রান্ত কণ্ঠে মেট্রোরেলের জন্য কেঁদে দিলেন প্রায়। একবারের জন্যও নিহত ছাত্রদের জন্য শোকাকূল হলেন না। বরং দুঃখ প্রকাশ করলেন, নিহত পুলিশের জন্য এবং লিগের কতিপয় গুণ্ডাদের মৃত্যুর জন্য, যারা নিরস্ত্র মানুষকে মারতে গিয়ে মরেছিল। পরদিন থেকে রাজপথে নেমে গেল সেনাবাহিনী। নামলো কারফিউ। ইন্টারনেট শাট ডাউন। বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। কারণ দেখানো হলো ছাত্রছাত্রীরা ডাটা সেন্টার পুড়িয়ে দেবায় ইন্টারনেট যোগাযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। একটা মিশমিশে কালো অন্ধকারে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দেয়া হলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে।তথ্যমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদের অসংলগ্ন মিথ্যে কথায় বোঝাই যাচ্ছিল এটি, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয়ার আদেশ ছিল। মিথ্যে বলার জন্য তিনি জনসাধারণের কাছে মাফ চেয়েছেন, হয়তো দোয়াও চেয়েছিলেন।  অন্যায়কে অন্যায় বলতে না পারা মৌলিক অনৈতিকতার পরিচয়। অনেক যশস্বী ব্যাক্তিকেই সেই কৈশোর থেকে পছন্দের শীর্ষতালিকায় রেখেছিলাম। এদের থেকে শিক্ষা নিতে ভালো লাগত। শিল্প , সংস্কৃতি এবং সাহিত্য মাধ্যমের মানুষদের উপস্থিতিই অধিক ছিল। টের পাচ্ছিলাম, এরা ঝরে যাচ্ছেন একের পর এক। অবাক বিস্ময়ে দেখেছি নিবেদিত প্রাণে নির্লজ্জের মতো, বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয়ার প্রেমে তারা তখনও হাবুডুবু খাচ্ছেন। বন্দনা করছেন, পূজো করছেন অন্ধ শিষ্যের মতো। অথচ, আপনারাই একদিন কবিতায়, গানে, নাটকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার কথা বলেছিলেন। শিখিয়েছিলেন ব্যক্তিপুজোর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হয়।হায়রে দলকানা বুদ্ধিজীবির দল।হায়রে দলদাসের পঙ্গপাল, আত্মাটাকে বিক্রি করলেন কী মূল্যে? জানতে ইচ্ছে হয় বড়ো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে যে বিপ্লবের জন্ম হয়েছিল, জুলাই এর শেষের সপ্তাহে তা তুঙ্গে পৌঁছেছিল। জল গড়িয়েছে অনেকটাই। জটিল হয়েছে পরিস্থিতি। এর মধ্যে একজন প্রধান সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় টিবির সাদা পোষাক পরা লোকজন। একদিন পর, চোখ বাঁধা অবস্থায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। তার সারা শরীরে ছিল আঘাতের চিহ্ন, জমাট বাঁধা রক্ত শরীরের এখানে ওখানে। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল তাকে। আরও একজন সমন্বয়ককেও তুলে নিয়ে গিয়ে অত্যচার করার সময়টুকু ছাড়া কড়া ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়, এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। খুব সম্ভবত ২৬/২৭শে জুলাই হবে, খবর পেলাম ৬ জন প্রধান সমন্বয়ককে ডিবি (Detective Branch) তুলে নিয়ে গেছে। কাউকে হাসপাতাল থেকে, কাউকে বাড়ি থেকে। এদের পরিবার থেকে স্বজনরা দেখা করতে গেলে দেখা করতে দেওয়া হয় না। তিনদিন ধরে এদের কোথাও কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আইনজীবিরা মাঠে নামলেন। কারণ, বিনা মামলায় কাউকে তিনদিন আটকে রাখার নিয়ম নেই। ৬ জনকেই আদালতে সোপর্দ করার দাবী নিয়ে তাঁরা বিবৃতি দিলেন। হঠাৎই একদিন, একটা ভিডিও ক্লিপ ছাড়া হলো সামাজিক মাধ্যমে, যেখানে রেকর্ড করা হয়েছে, এই ৬ জন সমন্বয়ক দেশের সকল ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন প্রত্যাহার করতে আহ্বান জানিয়েছেন। এই ছয় জনের অভিব্যক্তি, শরীরের ভাষা দেখে পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছিল, এদেরকে জোর করে ভুলভাল একটা স্ক্রিপ্ট পড়ানো হচ্ছে। টিবির অফিসে যখন আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি পড়ছিল, তখন ওরা প্রায় প্রত্যেকেই Morse code এর মাধ্যমে ওদের সহযোদ্ধাদের সংকেত বার্তা পাঠিয়েছিল। বিভিন্ন শহর থেকে অন্যান্য সমন্বয়করা পাল্টা বিবৃতি দিলেন, বিপ্লব চলবে। এবং সপ্তাহব্যাপি তাঁদের কার্যক্রম প্রকাশ করলেন। দোসরা অগাস্টঃ ব্রড ব্যান্ড ইন্টারনেট খুলে দেওয়া হয়েছিল খুব সম্ভবত ২৯ তারিখে। ঐ সপ্তাহান্তে আমার প্রচুর ব্যস্ততা চলছিল। সকালে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যাই। রাতে ফিরি। মন পড়ে থাকে দেশে। বের হওয়ার আগে যতটুকু সময় পাই, টেলিভিশন, সামাজিক মাধ্যম, প্রিন্ট মিডিয়া থেকে জানতে চেষ্টা করি, কী চলছে বাংলাদেশে। আবার রাত বারোটার দিকে ঘরে ফিরে দু'টো তিনটে পর্যন্ত সেই একই প্রচেষ্টা। যাই হোক, ফেসবুকে এক বন্ধুর পোস্ট নজর কাড়লো। রক্তাক্ত লাল রঙে লেখা "৩৩"। আমরা Baby Boomers প্রজন্ম। নিউরনগুলো নড়ে চড়ে উঠতে একটু সময় লাগে। মাথার মধ্যে "৩৩" নিয়ে বেরোলাম। এ'কাজ করি সে'কাজ করি, কিছুতেই মন থেকে সরাতে পারছি না তেত্রিশকে। আচানক যেন মাথার মধ্যে একটা বিজলীর ঝিলিক খেলে গেল। হায় রে বাচ্চারা, আমাদের লক্ষীমন্ত বাচ্চারা ! তোমাদের Gen Z দের এই অভিনব কায়দা আমাকে ক্রমশই মুগ্ধ করে চলেছে।আমি ছোট ছোট সব বিন্দুগুলোকে মালায় গাঁথলাম।বুঝতে পারলাম, ছেলেমেয়েগুলো "জুলাইকে" শেষ হতে দেবে না যতদিন না পর্যন্ত এই নির্মম প্রহসনের শেষ না হচ্ছে। "৩৩" শে জুলাই অর্থাৎ ৩ রা অগাস্ট বাংলাদেশের সকল আন্দোলেনকারীদের কর্মসূচি হলো, "Complete Shutdown". এর মধ্যে, "শান্তি রক্ষার্থে" সেনাবাহিনী তখনও রাজপথে আছে। জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয়া "Shoot at sight" আদেশ অব্যাহত রেখেছেন, এবং নির্দিষ্ট সময় ধরে কারফিউ চলছে। কিন্তু, জনগনের জোয়ার থামানোর কোনো পথ খোলা নেই। সেদিনও নিরস্ত্র ছাত্রদের সাথে লীগের পেটোয়া হেলমেট বাহিনী আর বিজিবি পুলিশের আর এক রক্তক্ষয়ী কাউন্টার হলো। ছাত্র মরছে। পুলিশ মরছে। গুণ্ডারাও আহত নিহত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন মাননীয়া হাসিনা তবুও গদি আঁকড়ে ধরে পড়ে আছেন। তাঁর প্রেস ব্রিফিংগুলো বিরক্তিকর হয়ে উঠছে আরও প্রকটভাবে। প্রতিটি প্রেস ব্রিফিং-এ তাঁর স্বজন হারানোর অভিনয় বিষময় হয়ে উঠছে। তিনি বলছেন বটে স্বজন হারানোর দুঃখ তিনি বোঝেন। কিন্তু, তাঁর কাজে প্রমাণ নেই , নেই প্রকাশ, এতগুলো মৃত্যুতে কোনো শোক নেই। সম্ভবতঃ তিনি তাঁর স্বজন হারানোর ব্যথা ছাড়া আর কারোটা আসলেই বোঝেন কিনা, তা মর্মান্তিক ভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। এই সময়ের একটা স্লোগান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। যার মধ্যে ছিল তীব্র শ্লেষ।"দিনে নাটক রাতে আটক" কার্যত মাননীয়া তাই করছিলেন। হাসপাতালে যাচ্ছেন, নিহতদের পরিবারের সাথে কথা বলছেন। আহতদের পাশে তার কৃত্তিম সমবেদনা জানাচ্ছেন। কিন্তু, রাতের বেলা লেলিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ বাহিনীদের। বিভিন্ন এলাকায় তারা ত্রাস সৃষ্টি করে রাতের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে। দেয়ালে দেয়ালে ছাত্ররা লিখেছিল, "নাটক কম করো পিও"। ৩৩ শে জুলাইএর Complete Shutdown কার্যক্রম শেষ হলো সফল ভাবে। যানবাহন বন্ধ, জনজীবন বাধাপ্রাপ্ত, ব্যবসা বানিজ্য স্থগিত, কিন্তু তাদের কোনো অভিযোগ নেই। আপামর জন সাধারণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল ঐতিহাসিক। মাননীয়া তার ভাষণে জানালেন গণভবনের দরজা খোলা। ছাত্রছাত্রীদের সাথে তিনি আলাপে রাজী আছেন। যা যা দাবী আছে তিনি ভেবে দেখতে রাজী। যা সম্ভব, তিনি মেনে নেবেন। এই প্রস্তাবে পরিষ্কার , তিনি গদি ছাড়বেন না এবং অচিরেই আরও একটি প্রহসনের সম্ভাবনা। আলাপের প্রস্তাবও এতটাই বিলম্বিত যে, ততক্ষণে তিনি Checkmate এর challenge নিয়ে দাবার বোর্ডে একাকী হিমশিম খাচ্ছেন। মন্ত্রীরা তাকে একা করে দিয়ে পালিয়েছেন যে যার মতো। ৩৪ শে জুলাইঃ গণভবন ঘেরাও - এক দফা এক দাবী, স্লোগানে ধ্বনিত হলো, স্বৈরতন্ত্র নিপাত যাক, স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ চাই"। আগেই উল্লেখ করেছি যে এই সপ্তাহটা বিশেষ ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে চলছিলাম। আমাদের সবারই বুক দুরু দুরু। আজ কিছু একটা হবেই। নিজেদের মধ্যেও আলোচনা হচ্ছিল, যে আমরা যতজন সম্ভব টেক্সাসের রাজধানী অস্টিনে যাবো এবং ক্যাপিটাল হাউসের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করবো এই স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে। কিন্তু, অতটা সময় আমাদের হাতে আছে কি? রাতে বাড়িতে ফিরবার পর আবারও সেই সংবাদ সংগ্রহের কাজ। প্রায় রাত বারোটা। সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল ঢাকার অবস্থা। বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্ন ভাবে গণজমায়েত শুরু হয়েছে। সে এক অভাবনীয় দৃশ্য।ধীরে ধীরে গমগম করতে শুরু করল আনাচ কানাচ। গর্জে উঠেছে সমগ্র বাংলাদেশ আবার। কোনোরকমে রাত দেড়টা পর্যন্ত জেগে থেকে ঘুমিয়ে পড়েছি। ইচ্ছে করছিল আরও একটু সময় জাগবার কিন্তু সারাদিনের ক্লান্ত অবসন্ন শরীর সায় দেয়নি।  ৩৫ শে জুলাই :৫ই অগাস্ট বিজয়ঃ ভোরবেলা অ্যালার্মের আওয়াজে ধড়ফড় করে উঠলাম। বুকের ভেতরে বাজছে ডামাডোল। কী হলো কী হলো উদ্বেগ। ঘুমের ঘোর কেটে গেছে বহু আগে। আহা, এও সম্ভব হলো শেষ পর্যন্ত। সামাজিক মাধ্যমে ভেসে আসছে বিজয়ের আনন্দ। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয়া মহোদয় পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, এবং শুধু তাই নয়, দেশত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। এই কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গণভবনে ঘটে গেছে অনেক কিছু। সেনাবাহিনী তার পাশে থাকতে রাজী হয়নি। শেষ অস্ত্র হিসেবে তিনি পুলিশ বাহিনীকে ইস্তেমাল করেছিলেন, বলেছিলেন আরও হাজার খানেক লাশ ফেলে দিতে। ইতিহাসের ঘৃণ্যতম অধ্যায়ের একদিন শেষ হতে হয়। জনগণই নির্বাচন করে তাদের অভিভাবক। অভিভাবককে দাঁড়াতে হয় জনগনের পাশে। নতুবা, বিশ্বের ইতিহাস বাদই দিলাম— বাংলাদেশ বার বার প্রমান করেছে, এই দেশে স্বৈরাচার গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের এই বাংলাদেশে ২০২৪ শে তারূণ্যের হাত ধরে যে বিপ্লব এল- অনেকেই বলছে এর নাম, "Monsoon Revolution". এই লেখার সময়কাল পর্যন্ত কোথাও কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ঘোষণা আমি দেখিনি। তবে, একথা অনস্বীকার্য, এক যুগেরও বেশী একটি বিষাক্ত স্বৈরতন্ত্রকে হটিয়ে দেয়ার জন্য এই বিপ্লবী এবং অকুতোভয় সেনানীদের সোচ্চার প্রতিবাদ বিশ্বের দরবারে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। সুতরাং এমন একটা গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের মাটিতেই সম্ভব। এমন শিরদাঁডা বাংলাদেশীদেরই আছে। চারটে গুলি বুক ঝাঁঝড়া করে দেয়ার পরও বুক চিতিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে একজন আবু সাইদ। টিয়ার শেলে চোখ রক্তলাল, তারপরও মুগ্ধ চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে, "পানি লাগবে? পানি লাগবে? সেই মুহূর্তেও সে জানে না. এক সেকেন্ড পরেই সে রক্তাক্ত হবে। একজন মুদি দোকানওয়ালা, তার দোকানের সব বিস্কুট চানাচুর নিয়ে বের হয়ে বিলিয়ে দেয় ক্ষুধার্ত ছেলেমেয়েদের হাতে হাতে। লাভ ক্ষতির হিসেব তখন মূল্যহীন।শত শত মা, তার নিজের হাতে রান্না করা খাবার খাইয়ে দেয় যে ছেলেটি বা মেয়েটির সাথে তার পথে দেখা হয়ে যায়। অথচ জানে না, তার সন্তান কই? এই আন্দোলনে জনসাধারণরাই অর্থসংকট দূর করে।যারা জন্মাবধি এই নজীরবিহীন প্রতিবাদের চেহারা দেখেননি, তারা তো সন্দেহের গন্ধ খুঁজবেনই। জেনে নিন, দেখে নিন - এই সাহস অকল্পনীয় , অপ্রতিরোধ্য। 
পনের বছরের এক কুৎসিত জীবন যাপনের পরিসমাপ্তি হোক—এই দাবী ছিল দলকানা, দলদাস, জাতীয় পর্যায়ের চোর ছ্যাচ্চর ছাড়া গোটা বাংলাদেশের। হ্যাঁ, আমরা সকলেই এই স্বৈরাচারী খুনি হাসিনার পতন চেয়েছিলাম এবং জনগনই ছিল, আর এক বৃহৎ শক্তি।

 

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত