আপডেট :

        নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট

        লস এঞ্জেলেসে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুইজনের মৃত্যু, পাঁচজন হাসপাতালে

        সরকারি শাটডাউনে বিপর্যস্ত পরিবারগুলোর জন্য কার্ল’স জুনিয়রের ১ ডলারের খাবার উদ্যোগ

        লস এঞ্জেলেসের সান ফার্নান্দো ভ্যালিতে গুলিবর্ষণ, আহত একাধিক ব্যক্তি

        ভেনেজুয়েলার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর সম্ভাবনা অস্বীকার করলেন ট্রাম্প

        শাটডাউনের সময় খাদ্য সহায়তা বন্ধ করা যাবে না: মার্কিন আদালতের রায়

        মেক্সিকোতে সুপারমার্কেটে বিস্ফোরণে নিহত ২৩

        নিউহলে হ্যালোইন পার্টিতে গুলিবর্ষণ, নিহত ১

        যুক্তরাষ্ট্রে আরও এক রোগীর শরীরে মাংকিপক্স শনাক্ত, নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছিলেন আক্রান্ত ব্যক্তি

        নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান হত্যার অভিযোগে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি ট্রাম্পের

        লস এঞ্জেলেসে ডজার্সের বিজয় উৎসব: সোমবার অনুষ্ঠিত হবে ওয়ার্ল্ড সিরিজ প্যারেড

        লস এঞ্জেলেসে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ১, আহত ১

        মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাস্থ্যবিমা খরচে তীব্র উল্লম্ফনের আশঙ্কা

        মার্কিন বিমানবন্দরে মারাত্মক বিশৃঙ্খলা: কর্মী সংকটে ব্যাহত বিমান চলাচল

        মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আইরিশ নাগরিকদের নির্বাসন ৫০% এর বেশি বেড়েছে

        বলিউড বাদশাহর আজ ৬০ বছর, শুভ জন্মদিন শাহরুখ খান

        বলিউড বাদশাহর আজ ৬০ বছর, শুভ জন্মদিন শাহরুখ খান

        খ্রিস্টানদের হত্যার অভিযোগে নাইজেরিয়ায় সামরিক অভিযান চালানোর হুমকি ট্রাম্পের

        বিরতির পর লিটনের ট্রাস্ট: বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি স্কয়াডে নতুন জীবন!

        অর্ধেকেরও বেশি ব্যাংক সাইবার হামলা প্রতিরোধে অক্ষম

চরম হতাশায় আত্মহত্যায় মৃত্যু আর নয়

চরম হতাশায় আত্মহত্যায় মৃত্যু আর নয়

মানুষ বাঁচে আশা বুকে নিয়ে।সর্বদা সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে।মানুষের মাঝে সীমাহীন সম্ভাবনার প্রাচুর্য বিদ্যমান।মানুষ কখনোই সহজে হার মানে না।কিন্তু কিছু কিছু সময় ঠিক তার উল্টোটা ঘটে।আত্মহত্যায় মৃত্যু যার বিষপোড়ায় প্রতিবছর অনেককে আমরা হারাচ্ছি।গত শনিবারের দৈনিক প্রথম আলোর ৩নং পৃষ্ঠায় চোখ আটকে গেল হঠাৎ। গেল এক বছরে ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা!আমি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে কলামটি খুব কষ্টে পড়েছি।ভিতরটা একরকম হাহাকার করে উঠল।বিনা কারণে ১০১ জন মায়ের বুক খালি হল আত্মহত্যার দুষ্ট আবর্তে পড়ে।এই সন্তানগুলো বিভিন্ন নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া ছিল।হয়তো আমরা তাদের নামও জানি না।কোথায় বাড়ী বা কাদের সন্তান,আত্মীয় জানার ইচ্ছেও নেই সাধারণ মানুষের। কিন্তু ভিতরে ভিতরে আত্মহত্যার প্রবণতা এই দেশে বেড়েই চলেছে তা এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।অথচ এই বিষয়টি নিয়ে নেই কোন গঠনমূলক আলোচনা,টকশো না আছে কোন গবেষণামূলক কোন ফিচার আর সামাজিক,রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ।কারো যেন মাথা ব্যথা নেই কেন নতুন চৌকস মেধাবী প্রজন্ম অকারণেই টুংক্কু তুচ্ছ ঘটনাকে সামলে উঠতে না পেরে নিজের প্রাণ নিজেই সংহার করছে।কী ভয়ানক ব্যাপার!ভাবতেই গা শিউরে ওঠে।
সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করব না বরং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে তুলনামূলকভাবে সঠিক তথ্য ও উপাত্ত সবিস্তারে জানানোর জন্য। তরুণ সমাজের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় সতর্কবাতাও বটে।
আঁচলের হিসাব অনুযায়ী ২০২০ সালে ৭৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছিল।গতবছর সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে।গতবছর ১০১ জনের মধ্যে ৬২ জন বা ৬১. ৩৯ শতাংশই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। একই সময়ে অনার্স ও মেডিকেল পড়ুয়া ১২ জন যা মোট আত্মহত্যা কারীর ১১.৮৮ শতাংশ।গতবছর প্রকৌশলী পড়ুয়া ৪ জন আত্মহত্যা করেছে।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মহত্যার হার ২২.৭৭ শতাংশ যা সংখ্যায় ২৩।
গতবছর ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ জন,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ জন,শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ৫ জন ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সবোর্চ্চ ৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।আরো হয়তো অজানা কত জন আত্মহত্যা করেছে তার হিসেব সত্যিই নেই।বিষয়টি এখন দাঁড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না বিজ্ঞজনের মতে।কেন এতগুলো মেধাবীমুখ হতাশার অতল গহব্বরে হারিয়ে যাবে?এর জন্য দায়ী কে বা কারা? কোন সিস্টেমের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে মেধাবী সমাজ?মনের জোর না থাকলে শরীরও চলে না একটা কথা আছে।অথচ আমরা সেই মনকে সুস্থ রাখতে চাই না যতটা না শরীরকে সুস্থ রাখতে মরিয়া।মনের রোগ সারাতে এখন সত্যিই ডাক্তারের প্রয়োজন,ভাল পরিবেশ আর ইতিবাচক কাউন্সিলিং বোধহয় খুব বেশি দরকার।বিষয়টি নিয়ে আমাদের গুরুত্বের সাথে ভাববার সময় এসেছে বৈকি।
সময়টা এখন মারাত্মক স্যাটেলাইট,ইন্টারনেটমুখী।সবার হাতে হাতেই মোবাইল।মুহুর্তেই ভাল এবং মন্দ খবর পৌঁছে যায় বাছবিচার ছাড়াই। তারুণ্যের শক্তির কাছে কিছু কিছু আবেগঘন ঘটনা হতাশায় নিমজ্জিত হয়।আর্থিক টানাপোড়ন,পারিবারিক সমস্যা,পরীক্ষা,চাকরী প্রাপ্তির অনিশ্চয়তা,অভিমান ইত্যাদি  আত্মহত্যা প্রবণতার দিকে মানুষকে দিন দিন ধাবিত করছে।বিশেষজ্ঞগণের মতে,বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আর্থিক প্রণোদনা দেয়া দরকার যাতে মাইনে দিয়ে হলেও শিক্ষার্থীদের মানসিক শক্তি ও সাহস বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় কাউন্সিলিং করা,নানা ধরনের বাস্তব সময়োপযোগী ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।শিক্ষার্থীদের চাকরীর ভূত মাথা থেকে বের করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখানো দরকার।প্রয়োজনে বিনাশর্তে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।পাশাপাশি পারিবারিক সম্পর্কগুলো শীতল ও মধুময় হওয়া খুবই জরুরি। প্রতিটি মানুষের দিন শেষে আশ্রয়স্থল নিজ পরিবার।আর সেই পরিবারে নিজের সম্মানজনক অবস্থান না থাকলে, মায়ার বন্ধন না অটুট না থাকলে ছেলেমেয়েরা বেপরোয়া হয়ে যায়।অনেক সময় কাছের মানুষজন ভেবে খারাপ বন্ধু বান্ধবদের প্ররোচনাও একসময় জীবনের বড় ভুল আত্মহত্যার দিকে ঝুঁকে পড়ে।নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে যায়।মাদক সেবন করে।সবকিছুর জন্য দায়ী একটি অপরিপক্ক পরিকল্পনা বয়সের এবং মানুষের সেই বিষয়ে গুরত্বসহকারে মূল্যায়ন না করা ।ভালভাবে বাঁচতে দিতে মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হবে।হতাশা নয় বরং জীবনের ছোট ছোট আনন্দ, আবেগকে উপভোগ করিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।আমরা আর কোন আত্মহত্যা চাই না।আত্মা প্ররোচিত হোক স্বাভাবিক, নৈতিক এবং স্বপ্নের সিঁড়িতে আরোহনের জন্য।আত্ম প্রত্যয়ে এগিয়ে যাক আমাদের সন্তানরা।

লেখক: শিক্ষক, কবি ও প্রাবন্ধিক।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত