২০০৯ সালের পর সর্বনিম্ন নিয়োগ পরিকল্পনা, চাকরির বাজারে অনিশ্চয়তা
অনুমোদন পেতে পারে চতুর্থ টিকা: জেনে নিন চার টিকার পার্থক্য!
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রে করোনার চতুর্থ টিকা হিসেবে অনুমোদন পেতে পারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দাদের উপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা করোনা থেকে ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার ও বায়োএনটেক, মডার্না, জনসন এন্ড জনসনের টিকা অনুমোদন পেয়েছে ও বাসিন্দাদের উপর এসব টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার অনুমোদন পাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই টিকাগুলোর প্রস্তুতপ্রণালীতে কিছুটা ভিন্ন রয়েছে। একই সাথে টিকাগুলোর কার্যকারীতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভিন্নতাও রয়েছে। ফাইজার ও বায়োএনটেক, মডার্না, জনসন এন্ড জনসন এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার স্বতন্ত্রতাগুলো জেনে নিন-
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে কোন টিকাগুলো পাওয়া যাচ্ছে?
যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম ফাইজার ও বায়োএনটেকের টিকা অনুমোদন পেয়েছে। এরপর দ্বিতীয় টিকা হিসেবে মডার্নার টিকা অনুমোদন পেয়েছে। কিছুদিন আগে তৃতীয় টিকা হিসেবে অনুমোদন পেয়েছে জনসন এন্ড জনসনের টিকা। এই তিনটি টিকাই তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান। এবার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা। আগামী সপ্তাহে ইউএস ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে অনুমোদনের আবেদন করবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
টিকাগুলোর কার্যকারীতা কেমন?
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে দেখা গেছে, ফাইজার ও বায়োএনটেকের তৈরি টিকা উপসর্গসহ করোনার বিরুদ্ধে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকরী। একই সাথে মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতা থেকে এটি ১০০ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
মডার্নার টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকারীতার হার ৯৪ শতাংশ ও মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতা থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত সুরক্ষা দিতে সক্ষম বলে ফলাফলে দেখা গেছে।
অপরদিকে জনসন এন্ড জনসনের তৈরি টিকার কার্যকারীতা পরীক্ষায় দেখা গেছে, করোনা থেকে এদের টিকা সুরক্ষা দিতে সক্ষম ৭২ শতাংশ এবং মারাত্মক শারীরিক অসুস্থতা থেকে ৮৬ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম।
অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার কার্যকারীতা পরীক্ষায় দেখা গেছে, করোনা থেকে এদের টিকা ৭৯ শতাংশ সুরক্ষা দিতে সক্ষম এবং মারাত্মক রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত সক্ষম।
কোন টিকা সবচেয়ে কার্যকরী?
এখন পর্যন্ত কোন টিকা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী, সেটির সুস্পষ্ট কোনো জবাব দেননি বিজ্ঞানীরা। এর কারণ, প্রতিটি টিকাই আলাদা আলাদা সময় এবং ভিন্ন অবস্থায় পরীক্ষা করা হয়েছে। যেমন, জনসন এন্ড জনসনের টিকার কার্যকারীতা পরীক্ষা করা হয়েছে যখন যুক্তরাষ্ট্রে নিত্য-নতুন ভ্যারিয়েন্টের খোঁজ মিলছে এবং অনেক বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। এজন্যই স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ডাক্তার যেই টিকা নিতে বলবেন, সেটিই আপনার জন্য সবচেয়ে কার্যকরী টিকা হবে।
টিকাগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী?
সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) সূত্র জানিয়েছে, অনুমোদিত তিনটি টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রায় একই রকম। সেগুলো হলো-
১) টিকা নেওয়ার সাথে ব্যথা, লাল র্যাশ বের হওয়া কিংবা চুলকানো।
২) ক্লান্তি, মাথাব্যথা।
৩) স্বর্দি কিংবা মৃদু জ্বর।
৪) বমি-বমি ভাব।
এছাড়া অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা গেছে, টিকা নেওয়ার পর অনেকের রক্ত জমাট বাঁধার মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইউরোপের কিছু দেশে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে পরে পরীক্ষা করে জানা গেছে, অ্যাস্ট্যাজেনেকার টিকার সাথে রক্ত জমাট বাঁধার কোনো সম্পর্ক নাই। এছাড়া সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ২০ হাজার বাসিন্দার উপর পরীক্ষা চালিয়ে রক্ত জমাট বাঁধার মতো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে প্রচলিত টিকা কোনটি?
তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত ৭৭ মিলিয়ন ফাইজার ও বায়োএনটেকের ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে। এরপর মডার্নার ৭৫ মিলিয়ন ডোজ ও জনসন এন্ড জনসনের ৪ মিলিয়ন ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, পরিপূর্ণ কার্যকারীতার জন্য ফাইজার ও বায়োএনটেক এবং মডার্নার টিকার দুটি ডোজ শরীরে গ্রহণ করতে হয়। অপরদিকে, জনসন এন্ড জনসনের এক ডোজ টিকাই করোনা থেকে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট।
নিজের পছন্দ অনুযায়ী টিকা নেওয়া যাবে কী?
এখন পর্যন্ত কোন বাসিন্দা কোন টিকা নিবেন, সেটি কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দিচ্ছে। নিজেদের পছন্দ করার কোনো সুযোগ নেই। তবে টিকার উৎপাদন বেড়ে গেলে নিজের পছন্দ মতো টিকা গ্রহণের সুযোগ থাকতে পারে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন