ব্যাংকের ভেতরে অচেতন হয়ে পড়ে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, করছিলেন বমি
শ্রীদেবীকে হারানোর ৭ বছর
হরিণী চোখের মায়ায় মোহিত করা রূপ, পর্দায় দেবীর মতো জাদুকরী উপস্থিতি—বলিউডের অমর তারকা শ্রীদেবী। সোমবার বলিউডের ‘চাঁদনি’ শ্রীদেবীর সপ্তম প্রয়াণ দিবস। কিন্তু স্মৃতির আলোয় এখনো উজ্জ্বল তিনি। ২০১৮ সালের এই দিনেই দুবাইয়ের একটি হোটেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের এই আইকন। তার আকস্মিক মৃত্যু পুরো দেশকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল।
বলিউডে আশির দশকে জনপ্রিয় নায়িকা ‘মিস হাওয়া হাওয়াই’ শ্রীদেবী। শুধু বলিউডে নয়, চুটিয়ে কাজ করেছিলেন দক্ষিণী বিনোদন জগতেও। অভিনয় আর নাচ দিয়ে আশি আর নব্বই দশকের হিন্দি সিনেমার দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছিলেন।
অভিনয় চর্চার পাশাপাশি একাধিক দক্ষিণ ভারতীয় ভাষা শিখেছিলেন শ্রীদেবী। তিনি অনর্গল তেলেগু, তামিল, মালায়ালম, কন্নড় ও হিন্দি বলতে পারতেন। যা পরবর্তীকালে দক্ষিণ ভারতে তার অভিনয়ের দরজা খুলে দিয়েছিল।
১৯৭০ সালে মাত ৪ বছর বয়সে তেলেগু সিনেমার মাধ্যমে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে সিনেমা জগতে। সেখানে তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ছিল ‘মা নান্না নির্দোষী’।
এরপরের বছর ‘পুমপাত্তা’ সিনেমায় অভিনয় করে সেরা শিশুশিল্পী হিসেবে কেরালা রাজ্য চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন শ্রী। ১৯৭৬ সালে কে বালাচন্দরের সিনেমা ‘মুন্ড্রু মুদিচ্চু’ সিনেমা শ্রীদেবীর ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল।
তারপর আর এই অভিনেত্রীকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে, ‘সোলা শাওন’ ছবি দিয়ে শ্রীদেবীর বলিউডে অভিষেক হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। ১৯৮৩ সালে মুক্তির পর সিনেমাটি বক্স অফিসে ঝড় তোলে। তুমুল জনপ্রিয় ওঠেন শ্রীদেবী।
অভিনয়, নাচ আর গ্ল্যামার দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি। তাই বক্স অফিসে সব সময় হিট থাকতেন অভিনেত্রী।
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে শ্রীদেবী অভিনয় করেছেন প্রায় তিন’শ সিনেমায়। এর মধ্যে ৭৪টি তামিল, ২৫টি মালায়লাম, ৬টি কন্নড়, ৯১টি তেলেগু এবং ৭২টি হিন্দি সিনেমা রয়েছে।
তবে চাঁদনি, চালবাজ, মিস্টার ইন্ডিয়া এবং ইংলিশ ভিংলিশের মতো বিখ্যাত সব সিনেমা তাকে দর্শক হৃদয়ে করে রেখেছে চিরস্মরণীয়।
সৌন্দর্য ও অভিনয় গুণে দক্ষিণ ভারতের ভক্তদের পাশাপাশি দেশের বাইরে তার অসংখ্য ভক্ত রয়েছে।
২০১৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৫৪ বছর বয়সে খুব রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। যে রহস্যর সমাধান আজ পর্যন্ত সমাধান হয়নি।
এক জীবনে শ্রীদেবীর অর্জনের শেষ নেই। দর্শকদের কাছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছাড়াও পেয়েছেন অসংখ্য স্বীকৃতি। এর মধ্যে ভারতীর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আইফা অ্যাওয়ার্ড, জি সিনে অ্যাওয়ার্ড, স্টারডাস্ট অ্যাওয়ার্ড অন্যতম। ভারত সরকার তাকে সম্মানজনক পদ্মশ্রী-তে ভূষিত করেছিল।
২০১৩ সালের এক জরিপে শ্রীদেবী শতাব্দীর সেরা অভিনেত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন।
পর্দায় তার অনন্য উপস্থিতি, নাচ, অভিব্যক্তি—সব মিলিয়ে তিনি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন দর্শকদের মনে।
আজ, সাত বছর পরও তার সিনেমাগুলো নতুন প্রজন্মের দর্শকদের মুগ্ধ করে চলেছে। কিংবদন্তির মৃত্যু হয় না, শ্রীদেবীও থেকে যাবেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা এক নাম হিসেবে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন