যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজনে মেক্সিকো উপসাগরে তাড়া করবে ইরান
যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানে আক্রমণ করে, তবে তেহরান পাল্টা আক্রমণ করতে প্রস্তুত বলে সতর্ক করেছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) শীর্ষ নৌ কমান্ডার আলিরেজা তাংসিরি। তার মতে, তেহরান যে কোনো শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে সক্ষম। এমনকি যদি মেক্সিকো উপসাগরে শত্রুদের তাড়া করতে হয়, তাও করা হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পুনরায় আলোচনা শুরু করার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেহরানকে দুই মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে। তবে ইরান চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে বারবার জানিয়ে আসছে।
আজ শনিবার (২৯ মার্চ) আল-মায়াদিন টিভি চ্যানেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইরানি কমান্ডারও মার্কিন প্রেসিডেন্টের 'আল্টিমেটামের' তীব্র বিরোধিতা করেন। তাংসিরি বলেন, ট্রাম্পের চিঠি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই, আর আমি এটি বিশ্লেষণ করতেও আগ্রহী নই। আমি তার হুমকি শুনি, তার কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করি এবং তাদের মোকাবেলা করার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি।
তিনি বলেন, আমাদের সকল শত্রুঘাঁটিতে আঘাত করার ক্ষমতা আছে, তারা যেখানেই থাকুক না কেন...কেউ আমাদের আক্রমণ করে পালাতে পারবে না। এমনকি যদি আমাদের মেক্সিকো উপসাগরে তাদের তাড়া করতে হয়, আমরা তাও করব।
তাংসিরি তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র অস্ত্রাগার বা এই অঞ্চলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমর্থন নিয়ে যে কোনো আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ইরান কখনই তার ক্ষেপণাস্ত্র বা প্রতিরোধ ফ্রন্টের সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা করবে না।
তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্র প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায়। আমরা সর্বদা এই অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেই। মুসলিম হিসেবে, আমরা আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য কোনও হুমকি তৈরি করি না।
গত শুক্রবার ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইরানি কমান্ডারের এসব মন্তব্য এলো। ট্রাম্প তার পাঠানো চিঠির প্রসঙ্গ তুলে বলেছিলেন, 'আপনাকে যে কোনোভাবে হোক না কেন, সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।'
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, 'আমাদের হয় কথা বলে সমাধান করতে হবে, নইলে ইরানের সাথে খুব খারাপ কিছু ঘটবে। আর আমি চাই না যে এটা ঘটুক।'
তবে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি বলেছেন, চিঠিটি হুমকিস্বরূপ মনে হলেও এতে তেহরানের জন্য 'কিছু সুযোগও' রয়েছে।
তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলা উত্তেজনার পর বর্তমান অচলাবস্থা আরও প্রকট হয়েছে। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, রাশিয়া এবং অন্যান্য বিশ্বশক্তির সঙ্গে একটি চুক্তি সই করে ইরান, যেখানে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে তারা পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করতে সম্মত হয়। তবে ২০১৮ সালে ট্রাম্প একতরফাভাবে আমেরিকাকে এই ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন এবং এটিকে 'ভয়ঙ্কর একতরফা চুক্তি' বলে অভিহিত করেন।
ইরান এ বিষয়ে পরোক্ষ আলোচনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়নি। তবে চাপের মুখে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তেহরান আরও বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন