ক্যালিফোর্নিয়ায় এক মাসে সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ১০ গুন!
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
গত এক মাস আগে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করার পর থেকেই ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে আশংকাজনকভাবে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিদ্রুত কোন পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
লস এঞ্জেলস কাউন্টি বুধবারে (১৪ জুলাই) ১৩১৫টি নতুন করোনা কেস রিপোর্ট করেছে। এক মাস পূর্বে কাউন্টি ১৩৫টি করোনা কেস রিপোর্ট করেছিলো। দেখাই যাচ্ছে যে, পুনরায় সবকিছু খোলার পর কেসের সংখ্যা দশগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই নিয়ে বিগত ছয়দিন ধরে দৈনিক ১০০০ এর বেশি করোনা রোগী পাওয়া গিয়েছে।
কাউন্টির কর্মকর্তারা একটি বিবৃতিতে বলে “কাউন্টিতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের হার মাঝারি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৃদ্ধির হার সহজে থামবে না। যদি সবাই তাদের সংক্রমণের ঝুঁকি ও করোনা বিস্তারের হার কমানোর জন্য কাজ করে তাহলেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।‘
রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিডারস-সিনাইয়ের ইমার্জেন্সি ডিপার্টমেন্টের মেডিকেল ডিরেক্টরের ধারণামতে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যেতে পারে।
ড. স্যাম তোরবাতি বলেন ‘হঠাত করে কয়েক সপ্তাহ ধরে করোনা রোগীর সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃদ্ধি হার সাতগুণের চেয়েও বেশি।‘
তোরবাতি জানান যে জুন মাসে দৈনিক ১টি নতুন করোনার রোগী পাওয়া যেতো। এখন দৈনিক ৮ জনের অধিক রোগী পাওয়া যায়। নতুন পাওয়া রোগীদের শতকরা ৮০ভাগই ২০-৪০ বছর বয়সী।
তিনি আরো বলেন ‘বর্তমানে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সিংহভাগই যুবক ও তরুণ বয়সের। তারা তুলনামূলকভাবে বেশি সামাজিকভাবে সচল ও তারা মাস্ক পড়ছে না। এর পাশাপাশি তাদের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে ভ্যাক্সিনেটেড ব্যাক্তির হারও খুব কম। এই কারণে তাদের মধ্যে করোনা অত্যধিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।‘
লস এঞ্জেলস কাউন্টিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার ফলে নতুন কেসের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, কাউন্টির হাসপাতালগুলোতে যেসব করোনা রোগী ভর্তি হয়েছে তাদের মধ্যে কেউ ভ্যাক্সিন নেয়নি।
তোরবাতি বলেন ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সিংহভাগ মানুষই ভ্যাক্সিন নেননি।‘
তিনি জানান যে কিছু কিছু মানুষ ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরেও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। মূলত যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা ভ্যাক্সিন নিলেও করোনা থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা পাবে না।
তোরবাতি বলেন ‘যাদের ভ্যাক্সিন নেওয়ার সুযোগ নেই তাদের হাতে কিছু নেই। কিন্তু যাদের কাছে সুযোগ আছে ভ্যাক্সিন নেওয়ার, তাদের উচিত ভ্যাক্সিন নিয়ে ফেলা।‘
নতুন তথ্য প্রমাণ করে যে ভ্যাক্সিন করোনার বিপক্ষে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ৬ জুলাই পর্যন্ত মারা যাওয়া মানুষগুলোর প্রতি হাজারে একজন ছিলেন টিকাপ্রাপ্ত। তোরবাতি বলেন ‘এই ছোট ছোট ঘটনাগুলোই একটা সময় বিরাট দুর্ঘটনা ঘটাবে। তাই আমাদের উচিত, প্রতিনিয়ত মানুষকে ভ্যাক্সিন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া।
তোরবাতি আরো বলেন ‘আমাদের এটি মনে রাখতে হবে যে, আমাদেরকে একসাথে কাজ করতে হবে। একে অপরের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে ও একে অপরকে সাহায্য করতে হবে।‘
এলএবাংলাটাইমস/এমডব্লিউ
শেয়ার করুন