ভিয়েতনামী পিতা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আটক: ক্যালিফোর্নিয়ায় পরিবার বিচ্ছেদের আশঙ্কা
লস এঞ্জেলেসে ব্যাপক অভিবাসন অভিযান: ফাঁস হওয়া সরকারি নথি
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
লস এঞ্জেলেসে ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে বড় আকারের অভিবাসন অভিযান পরিচালিত হতে পারে বলে একটি সরকারি নথি ফাঁস হয়েছে, যা লস এঞ্জেলেস টাইমস পর্যালোচনা করেছে।
প্রকাশনাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অভিযানে মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) নেতৃত্ব দেবে এবং এতে বিশেষভাবে টার্গেট করা হবে যাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র নেই বা যাদের বিরুদ্ধে বহিষ্কারের আদেশ রয়েছে। এক ফেডারেল আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, জানান যে এই অভিযানে অতিরিক্ত জনবলের প্রয়োজন হবে, যা একাধিক সংস্থার অংশীদারিত্বের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে, এলএফবিআই এবং ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (DEA) কর্মকর্তাদের এই অভিযানে সহায়তার জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
ফাঁস হওয়া তথ্য ও প্রতিক্রিয়া
লস এঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদনের পর, হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব ক্রিস্টি নোম ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI)-কে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ আখ্যা দিয়ে অভিযানের তথ্য ফাঁস করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, "FBI এতটাই দুর্নীতিগ্রস্ত যে আমরা সব ধরনের সংস্থার সঙ্গে কাজ করব যাতে এই ফাঁস হওয়া বন্ধ করা যায় এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।"
তবে, আইসের সূত্র জানিয়েছে যে তারা জানে না নোম কোথা থেকে এই তথ্য পেয়েছেন বা তিনি কোন ভিত্তিতে এমন মন্তব্য করেছেন।
লস এঞ্জেলেসে অভিবাসন অভিযান
ইউএসসি’র ইকুইটি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, লস এঞ্জেলেস কাউন্টিতে ৮ লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসী বসবাস করছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পরপরই আইসিই বড় শহরগুলোতে অভিযান চালানো শুরু করে, যার মধ্যে রয়েছে লস এঞ্জেলেস, শিকাগো এবং আটলান্টা। এরপর তিনি আইসিই'র অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন, যা আগে স্কুল, গির্জা ও হাসপাতালের মতো ‘সংবেদনশীল স্থানগুলোতে’ অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা ছিল।
আইসিই'র লস এঞ্জেলেস ইউনিট তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত গ্রেপ্তারের তথ্য শেয়ার করে আসছে, যার মধ্যে একজন ভেনিজুয়েলার ট্রেন দে আরাগুয়া গ্যাং সদস্য এবং এক মেক্সিকান নাগরিক রয়েছেন, যিনি একটি নাবালকের প্রতি ‘অশ্লীল বা লাস্যপূর্ণ কার্যকলাপ’-এর জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে প্রেসিডেন্টের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লস এঞ্জেলেসে, বিক্ষোভকারীরা ডাউনটাউন এলএ, রিভারসাইড, সান্তা আনা, সান ডিয়েগোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একাধিক দিন ধরে সমবেত হন এবং ক্যালিফোর্নিয়াকে অভিবাসীদের জন্য নিরাপদ রাখার দাবি জানান।
বিক্ষোভকারীরা ছয় দিন ধরে ডাউনটাউন এলএ-তে অবস্থান নেন এবং ব্যস্ত মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান সংযোগস্থল অবরোধ করেন। এছাড়াও, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দিনে ক্লাস বর্জন করে অভিবাসী অধিকারের পক্ষে প্রতিবাদ জানায়।
অভিবাসন নীতি ও পূর্ববর্তী প্রশাসনের তুলনা
রয়টার্সের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির পরও তার প্রথম মেয়াদে ওবামার তুলনায় কম সংখ্যক অভিবাসী বহিষ্কার করা হয়েছিল। তবে, ২০২৪ সালে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের যেকোনো একক বছরের তুলনায় বেশি সংখ্যক মানুষ বহিষ্কৃত হয়েছেন।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন