আপডেট :

        এখনও পিআর পদ্ধতি বুঝতে পারছেন না গয়েশ্বর

        লুকানো অর্কিডের সন্ধান

        ক্যালসিয়াম কম? দুধ ছাড়া পূরণ করুন এই খাবারে

        আয়ের বড় অংশ খাদ্য কেনায় যায়: ১০% পরিবার

        তৃতীয় সিজনে অ্যালিস ইন বর্ডারল্যান্ড কেমন হলো?

        জামায়াত আমিরের উষ্ণ শুভেচ্ছা বার্তা

        পুলিশের কাছে অসংগতিপূর্ণ বক্তব্য মামুনুর রশীদের

        ফেনী-১ আসন থেকে ভোটে অংশ নিতে পারেন খালেদা জিয়া

        চোরের বদলে চোর নিয়ে সরকার করল? — ফয়জুল করীমের তোপ

        ১৭ জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি

        রিকশার সমস্যার সমাধান কোথায়?

        পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের প্রস্তাব এশিয়া কাপে ভারতের জন্য

        মোদিকে কড়া জবাব ওয়াইসির

        সরকারি বালিকা স্কুলে চ্যাম্পিয়নসত্তা অর্জন

        সিলেটের গরম: ৩৭ ডিগ্রি পার, শনিবারের আবহাওয়া

        বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মদদের অভিযোগ

        হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের উদ্বেগ

        বাংলায় ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

        টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে গাজায় নতুন প্রশাসন ভাবনা

        নেতানিয়াহুর বক্তব্যে সদস্য রাষ্ট্রের ওয়াক আউট

রিকশার সমস্যার সমাধান কোথায়?

রিকশার সমস্যার সমাধান কোথায়?

সিলেটের এই সময়ের আলোচিত সমস্যা ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল। সমস্যাটি দিনে দিনে এতই তীব্র হচ্ছে যে, যখন তখন অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে।


অন্তত গত বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভ মিছিলটি যারা দেখেছেন, তারা তাই মনে করছেন।

সম্প্রতি সিলেট মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাসহ অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে পুলিশের বিশেষ অভিযান। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলা এই অভিযানে ২৬১টি যানবাহন আটক করা হয়েছে। এর অধিকাংশই ব্যাটারিচালিত রিকশা।


সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী পিপিএম, এসব রিকশাকে মহানগরীর বাইরে না গেলে আটকের ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা কঠোরভাবে বাস্তবায়নও করছেন। এমনকি, বিভিন্ন গ্যারেজে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু মিটার, বৈদ্যুতিক কেবল এবং চার্জিং পয়েন্টও জব্দ করা হয়েছে।


এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক শ্রমিকরা। বৃহস্পতিবার তারা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। মিছিল থেকে কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভাঙচুর ও কয়েকজন চালক এবং যাত্রীকে মারধোরও করা হয়েছে। মানে, সহিংস আন্দোলনের পথে হাটতে শুরু করেছেন ব্যাটারিচালিত রিকশার মালিক বা শ্রমিকপক্ষ।


এই ত্রিচক্রযানটি নানা কারণে সারাদেশের একটি অন্যতম প্রধান আলোচিত সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সিলেট মহানগরীকে যানজট ও দুর্ঘটনা মুক্ত রাখতে পুলিশের এই উদ্যোগকে অনেকেই সাধুবাদ জানাচ্ছেন। গত কয়েকদিন তাদের বিরুদ্ধে যে অভিযান চালানো হয়েছে, এর সুফলও পাচ্ছেন নগরবাসী। নগরীতে আগের মতো আর তীব্র যানজট নেই।


তবে এ যানবাহনের সঙ্গে জড়িত আছে অন্তত ২ লাখ মানুষের জীবন ও জীবিকা। সিলেট শহরে আনুমানিক ব্যাটারিচালিত রিকশার সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। প্রতিটি চালকের উপর নির্ভরশীলের সংখ্যা গড়ে ৫জন করে হলে ২ লাখ মানুষের রুটি রোজগারের প্রশ্ন এসেই যায়। নগরীতে তাদের চলতে দেওয়া না হলে তারা যাবে কোথায়? খাবেন কী?
বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছেন সিলেটের নবাগত জেলা প্রশাসক মো. সারোয়ার আলম। সম্প্রতি তিনি সিলেটভিউর সাথে আলাপকালে জানিয়েছিলেন, এ বিষয়টি নিয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন। তাদের কোথায় চলতে দেওয়া হবে না হবে সেটি নিয়ে আমরা ভাবছি।


এদিকে সচেতন মহলের ধারণা, ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক যদি বেকার হয়ে যায়, তাহলে নগরীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তেত পারে। কারণ, তাদের একটি অংশ চুরি-ছিনতাইয়ে নেমে পড়তে পড়বে। সেটি হবে আরও বেশী হতাশার। তাই গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়কে তাদের চলাচল নিষিদ্ধ করে পাড়া-মহল্লা বা তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় তাদের চলালচলের অনুমতি দেওয়া উটিৎ। অন্তত তারা যাতে খেয়েপরে বাঁচতে পারেন।


কিন্তু সিলেটের নবাগত পুলিশ কমিশনার মো. আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী পিপিএম ব্যাটারিচালিত রিকশাকে মহানগর এলাকার বাইরে পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে সে অনুযায়ী তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ অভিযান চলছেই।


বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী তার ব্যক্তিগত মতামত ব্যক্ত করেছেন এভাবে। জিন্দাবাজার থেকে স্কয়ার দুই কিলোমিটার বাইরে তাদের চলতে দেওয়া যেতে পারে। কারণ, তাদেরতো রুটি রোজগার প্রয়োজন। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে এ জাতীয় রিকশা ব্যবহারের পক্ষে নই। কিন্তু বিশাল এই জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার কথাওতো সবাইকে ভাবতে হবে।


তিনি আরও বলেন, এটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত মতামত। তারা বৃহস্পতিবার স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলা প্রশাসকের কাছে। নিশ্চয় বিষয়টি নিয়ে তিনি ভাববেন বা সন্তোষজনক সমাধানের একটা পথ বের করবেন।


গত ৫ আগস্টের আগেও সিলেট মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোর  বাইরে পাড়া-মহল্লায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করেছে। সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ তৎকালীন প্রশাসন এমন একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর ট্রাফিক পুলিশ সক্রিয় না থাকায় বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


এ ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন সিলেট জেলা বাসদের সদস্য সচিব ও রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি প্রণব জ্যোতি পাল।


তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে বিআরটিএ’র সমন্বয়ে একটি নীতিমালার জন্য আন্দোলন করছি। একটি নীতিমাল প্রণয়ন করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের প্রশিক্ষণের পর লাইসেন্স দেওয়া যায়। এখন যেভাবে অভিযান আটক করা হচ্ছে, তাতে কেবল আমি নয়, সচেতন মানুষের প্রশ্ন এই ৪০ হাজার চালকের উপর নির্ভর করা প্রায় ২ লাখ মানুষের খাওয়া-পরা কিভাবে চলবে?


তিনি বলেন, আগেও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সময়ে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। পরে মানবিক কারণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের বাইরে পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যতদিন সরকার কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করছেন না, ততদিন সেভাবে চলতে দেওয়া উটিৎ বলে আমি মনে করি। এই দুই লাখ মানুষ ভাতের জন্য কি করবে, কোথায় যাবে, এটা আমাদের সবাইকে ভাবতে হবে। এ দায়িত্ব সরকারের একটু বেশী।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত