আপডেট :

        ইউরোপের ১২ দেশে শিক্ষার্থীদের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ, গ্রেপ্তার ৩০০

        অবমাননাকর আচরণ ট্রাম্পের, সতর্ক করেন বিচারক

        উত্তর কোরিয়া ও ইরানের মধ্যে কি জোট হচ্ছে?

        কাউনিয়া উপজেলায় আনোয়ারুল ইসলাম মায়া এবং পীরগাছায় আব্দুল্লাহ আল মিলন নির্বাচিত

        চিকিৎসা বিজ্ঞানে সাফল্য অর্জনে রোবটিক আর্ম বা মানব দেহে সংযোজনের জন্য কৃত্রিম হাত

        বাংলা সাহিত্য জগতের চর্তুপাশেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিচরণ করেছেন

        প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক

        মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত হলে তার প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে বলে প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা

        তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত প্রসঙ্গে

        দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ

        দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ

        বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন ব্যাংক রিপোর্টারা

        বাংলাদেশ ব্যাংকের সংবাদ সম্মেলন বয়কট করেছেন ব্যাংক রিপোর্টারা

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে

        সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিঃ বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু

        নড়াইল জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ২৮ মে

        ডলারের অফিসিয়াল মূল্য ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১০ থেকে ১১৭ টাকা নির্ধারণ

        বাল্টিমোর সেতুতে আটকা সর্বশেষ শ্রমিকের মৃতদেহ উদ্ধার

        দুই প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, অর্ধশত ককটেল বিস্ফোরণ

        প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হচ্ছে আজ

ইসলামের দৃষ্টিতে জুয়া ও লটারীর বিধান

ইসলামের দৃষ্টিতে জুয়া ও লটারীর বিধান

বর্তমানে আমাদের সমাজের তরুণদের
মাঝে একটি বিষয় খুবই বেশী দেখা
যাচ্ছে আর তাহলো জুয়া ,বাজী বা
লটারী। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়
তাদের পরিবারের বড়রা ই তাদের
উৎসাহিত করে থাকে। এক্ষেত্রে
অনেকে মানে যে যেটা করছে সেটা
হারাম বা অন্যায় আবার
অনেকেই তা জানেনই না।চলুন দেখা
যাক ইসলাম এই সম্পর্কে কি বলে।
কিমার জুয়া অকাট্যভাবে হারাম:
আরবী ভাষায় কিমার এবং মাইসির শব্দ
দু’টি সামার্থবোধক। বাংলা এবং
উর্দুতে এর প্রতিশব্দ হচ্ছে জুয়া। ইসলামী
শরীয়তে জুয়ার যাবতীয় প্রক্রিয়াকে
হারাম এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা করা
হয়েছে।


আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
(হে মুহাম্মদ) ‘তারা আপনাকে মদ এবং
জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি
বলে দিন, এ দুটোর মধ্যে রয়েছে
মহাপাপ। আর এতে মানুষের জন্যে কিছু
উপকারিতাও রয়েছে। তবে এগুলোতে
উপকারিতা অপেক্ষা পাপের পরিমাণ
অনেক বেশি। (সূরা বাকারা,
আয়াত-২১৯)
অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে,
‘‘হে মুমিনগণ! নিশ্চিত মদ, জুয়া প্রতিমা
এবং ভাগ্যনির্ধারক তীর নিক্ষেপ
এসবগুলোই নিকৃষ্ট শয়তানী কাজ। অতএব,
তোমরা তা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত
থাকো, যাতে তোমরা কল্যাণ পেতে
পারো’’। (সূরা মায়িদা, আয়াত:৯০)
আরও এরশাদ হচ্ছেঃ ‘‘নিশ্চয় শয়তান মদ ও
জুয়ার দ্বারা তোমাদের পরস্পরে
শক্রতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং
তোমাদেরকে আল্লাহ্র যিকির ও
নামায থেকে বিরত রাখতে চায়,
সুতরাং তোমরা কি এগুলো থেকে
বিরত থাকবে’’? (সূরা মায়িদা,
আয়াত-৯১)
উপরোক্ত আয়াতসমূহে মাইসির কে
জুয়ার প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করা
হয়েছে। যা কিমার এর সমার্থবোধক।
যেমন: হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাঃ)
বলেন (মাইসির এবং কিমার) এক ও
অভিন্ন।
এছাড়া মুহাম্মদ ইবনে সীরীন, মুজাহিদ,
সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিব, সাঈদ ইবনে জুবাইর,
কাতাদাহ হাসান বসরী, ত্বাউস, আতা
ইবনে আবী রাবাহ, সুদ্দী; যাহ্হাক
প্রমুখগণও এ ব্যাপারে একমত যে, সর্ব
প্রকারের জুয়াই মাইসির শব্দের
অন্তর্ভুক্ত। (তফসীর ইবনে জারীর
তাবারী, ২/৩৫৮)
রাসুল (স:) ইরশাদ করেন -
‘যে ব্যক্তি অপরকে জুয়া খেলার প্রতি
আহবান করবে, তার জন্য উচিত কিছু সদকা
করে দেয়া’’। (বুখারী শরীফ)
উপরোক্ত হাদীসে রাসূল (স.) জুয়া
পরিহার করার প্রতি এতো গুরুত্বারোপ
করেছেন যে, শুধুজুয়াকেই হারাম
করেননি; বরং জুয়ার ইচ্ছা প্রকাশকেও
গুনাহ সাব্যস্ত করেছেন। যে ব্যক্তি
অপরকে জুয়ার প্রতি আহবান করবে,
তাকে তার এই গুনাহ‘র’ প্রায়শ্চিত্ত
হিসেবে কিছু সদকা করার নির্দেশ
দিয়েছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (রাঃ) সূরা
বাকারার ২১৯ নং আয়াতে বর্ণিত
মাইসির এর ব্যাখ্যায় বলেন-মাইসির
কিমারকে বলা হয়। জাহেলী যুগে এক
ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে পরস্পরে
স্বীয় অর্থ-সম্পদ এবং পরিবার-পরিজনকে
বাজির উপকরণ হিসেবে পেশ করত। দু’
ব্যক্তির যে অপরকে জুয়ার দ্বারা
পরাজিত করত, সে অপরের ধন-সম্পদ ও
পরিবার-পরিজকে নিয়ে যেত’’।(তফসীর
ইব্ন জারীর তারাবী ২/৩৫৮)
আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস এর উপরোক্ত
বাণী দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে,
জাহেলী যুগে শুধুমাত্র ধন-সম্পদের
উপরেই জুয়া হত না, বরং কখনো কখনো
স্ত্রীদেরকেও জুয়ার সওদা হিসেবে
পেশ করা হত। জাহেলী যুগে নানা রকম
জুয়ার প্রচলন ছিল। তন্মধ্য আরবে প্রচলিত
ভাগ্য নির্ধারণী জুয়া খেলার প্রথা
সূরা মায়েদায় বর্ণিত হয়েছে। তার
পদ্ধতি ছিল, দশ ব্যক্তি শরীক হয়ে একটি
উট যবাই করত। অতঃপর এর গোশত সমান দশ
ভাগে বন্টন করার পরিবর্তে জুয়ার আশ্রয়
নেয়া হত। দশটি তীরের সাতটিতে
বিভিন্ন অংশবিহীন চিহৃ দেয়া থাকত।
অবশিষ্ট তিনটি তীর অংশবিহীন
সাদা থাকত। এ তীরগুলোকে তুনের
মধ্যে রেখে নাড়াচাড়া করে নিয়ে
একেক অংশীদারের জন্যে একটি তীর
বের করার হত। যত অংশবিশিষ্ট তীর যার
নামে বের করা হত, সে তত অংশের
অধিকারী হত। আর যার নামে
অংশবিহীন তীর হত, সে বঞ্চিত হত।
শুধুবঞ্চিত নয়, বরং বঞ্চিত ব্যক্তিকে
উটের পূর্ণ মূল্য দিতে হত। আরবীতে এ
পদ্ধতিকেই কিসাম বিল আযলাম বলা
হয়।
কুরআনে করীম বিভিন্ন আয়াতে এক
অকাট্যভাবে হারাম ঘোষণা করেছে।
এমনিভাবে ঘোড়াদৌড়েও জুয়ার
প্রচলন ছিল। দু’ব্যক্তি ঘোড়াদৌড়ের
প্রতিযোগিতা লাগাত এবং পরস্পরে এ
চুক্তিতে আবদ্ধ হত, যে পরাজিত হবে
সে বিজয়ী ব্যক্তিকে নির্ধারিত
পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। রাসূল (সাঃ)
একেও জুয়ার অন্তভুক্ত করে হারাম
ঘোষণা করেছেন। (সুনানে আবু দাউদ,
কিতাবুল জিহাদ)
আহলে আরবে জয় পরাজয়ের বিভিন্ন
খেলাধুলাতেও জুয়ার প্রচলন বিদ্যমান
ছিল। উপরে বর্ণিত আয়াতসমূহ দ্বারা
কুরআনে করীম সর্ব প্রকারের জুয়াকে
হারাম এবং নিষিদ্ধ করেছে।
জুয়ার যত ধরন এবং প্রকার হতে পারে,
সর্বপ্রকারের জুয়া হারাম এবং নিষিদ্ধ
হওয়ার ব্যাপারে মুসলিম মিল্লাতের
কেউ দ্বিমত পোষণ করেননি । আহলে
আরবে কিমার শব্দটি এত প্রসিদ্ধ ছিল
যে, প্রত্যেকেই এর মর্মার্থ বুঝতে পারত।
জুয়ার সংজ্ঞা:
ফিকাহবিদগণ বিভিন্ন শব্দে কিমারের
(জুয়ার) সংজ্ঞা দিয়েছেন।
সাধারণত ফিকাহবিদদের মাঝে
কিমারের যে সংজ্ঞাটি বেশি
প্রসিদ্ধ, তা হলো।-‘‘উভয় পক্ষ থেকে
মালিকানাকে সম্পদ এবং ঝুঁকির মাঝে
ঝুলন্ত রাখা’’।
জুয়ার সার্বাধিক সুস্পষ্ট সংজ্ঞা
দিয়েছেন তাফসীরে মাআরিফুল
কুরআনের গ্রন্থকার হযরত মুফতী মুহাম্মদ
শফী রহ.-
তিনি বলেন,‘‘মাইসির এবং কিমারের
সংজ্ঞা হলো, যে ব্যাপারে কোনো
মালের মালিকানায় এমন সমুদয় শর্ত
আরোপিত হয়, যাতে মালিক হওয়া না
হওয়া উভয় সম্ভাবনাই সমানভাবে
বিদ্যামান থাকে; আর এরই ফলে পূর্ণ
লাভ কিংবা পূর্ণ লোকসান উভয়
দিকেই বজায় থাকবে। (শামী-৫:৩৫৫
কিতাবুল হাযবী ওয়াল ইবাহা)
উদাহরণস্বরূপ এতে যায়েদ অথবা আমরের
যেকোনো একজনকে ক্ষতিগ্রস্তহতে
হবে। এর যতোপ্রকার অতীতে ছিল,
বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে এবং
ভবিষ্যতে সৃষ্টি হতে পারে, তার সব
গুলোকে মাইসির, কিমার এবং জুয়া
বলা হবে। (তাফসীরে মাআরিফুল
কুরআন,১:৫৩৩ সূরা বাকারা, আয়াত:২১৯)।
কিমার ও জুয়ার সংজ্ঞা এবং সমুদয়
পদ্ধতির আলোকে একথা সুস্পষ্ট যে,
কিমার- জুয়ার মৌলিক আবশ্যকীয় বিষয়
নিম্নরূপ-
ক. কিমার-জুয়া দুই বা ততোধিক
ব্যাক্তির মাঝে সংঘটিত একটি
ভারসাম্যহীন চুক্তি।
খ. এই চুক্তিতে স্বীয় স্বল্পমাত্রার সম্পদ
বাজি ধরে অন্যের বিপুল পরিমাণ সম্পদ
শোষণের এক অভিনব কৌশল।
গ. জুয়ায় অপরের অর্থ-সম্পদ শোষণ ও
উপর্জিত অনিশ্চিত এমন কোনো
বিষয়ের উপর নির্ভরশীল হয়, যা হওয়া
না হওয়া উভয় সম্ভাবনাই সমানভাবে
বিদ্যমান থাকে।
ঘ. জুয়ায় দু’ পক্ষের একপক্ষ সমূলে
ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর অপর পক্ষ কোনোরূপ
বিনিময় ছাড়াই প্রথম পক্ষের অর্থ-সম্পদ
লুটে নেয়। ফলে একপক্ষ জিতে লাভবান
হয়, আর অপর পক্ষ পরাজিত হয়ে সর্বস্ব
হারিয়ে কেবল ক্ষতিগ্রস্তই হয়।
যে কোনো চুক্তিতে মৌলিক এই
চারটি বিষয় পাওয়া যাবে, সেটি
জুয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে, যা শরীয়তের
দুষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
এ ধরনের চুক্তি বিভিন্ন রকমের হতে
পারে। তবে স্পষ্টত কিমার জুয়া দু’
প্রকার ।
জুয়ার প্রথম প্রকার :
দু পক্ষের কোনো পক্ষ নিশ্চিতভাবে
কোনোকিছিু প্রদান করার ব্যাপারে
বাধ্য নয়। বরং উভয় পক্ষের প্রদান
অনিশ্চিত কোনো বিষয়ের উপর স্থগিত
থাকে।
যেমন, ‘ক’ এবং ‘খ’ এর মাঝে
প্রতিযোগিতা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার
শরুতেই উভয়ে এই চুক্তিবদ্ধ হলো যে, যে
পরাজিত হবে সে বিজীয়কে এক
হাজার টাকা প্রদান করবে।এ উদাহরণে
দু’ পক্ষের কারো জন্যেই কোনো কিছু
প্রদান নিশ্চিত নয়, বরং একটি
অনিশ্চিত বিষয় অথাৎ জয়-পরাজয়ের
উপর স্থগিত। এমনিভাবে যেসব
চুক্তিতে উভয় পক্ষের প্রদান কোনো
অনিশ্চিত বিষয়ের সাথে শর্তযুক্ত করা
হবে তা-ও জুয়ার এই প্রকারে অন্তর্ভুক্ত
হবে।
যেমন, যায়েদ আমরকে বললো, অমুক
প্রতিযোগিতার ‘ক’ জায়লাভ করলে
তুমি আমাকে এক হাজার টাকা দিবে।
এতেও উভয় পক্ষের প্রদান একটি
অনিশ্চিত শর্তের উপর মুওকুফ ।
সুতরাং এই চুক্তি ও জুয়ার প্রথম প্রকারের
অন্তর্ভুক্ত।
তবে এ প্রকারের জুয়ায় কোনো কিছুর
প্রদান উভয় পক্ষের সাথে সংশ্লিষ্ট
হওয়া আবশ্যক। যদি কোনো কিছুর প্রদান
শুধুএকপক্ষের সাথে সংশ্লিষ্ট হয়,
তাহলে জুয়া হবে না।
যেমন, যায়েদ আমরকে বলল, ‘ক’ জিতলে
আমি তোমাকে এক হাজার টাকা
দোবো, কিন্তু ‘ক’ হেরে গেলে আমরের
দায়িত্ব কোনো কিছু প্রদান আবশ্যক
করা হয়নি। এটা এক পক্ষের সাথে
শর্তযুক্ত, বিধায় তা জুয়া হবে না।
জুয়ার দ্বিতীয় প্রকার:
যে চুক্তিতে এক পক্ষের প্রদান নির্দিষ্ট
এবং নিশ্চত, আর অপর পক্ষের প্রদান
অনিশ্চিত। যে নিশ্চিতভাবে প্রদান
করে, সে মূলতঃ যৎসামান্য অর্থ-সম্পদ
দ্বারা এ উদ্দেশ্য বাজি ধরে, হয়তো
তা সম্পূর্ণরূপে গচ্ছা যাবে, তথা
কোনোকিছুর বিনিময় ছাড়া অন্যের
হাতে চলে যাবে অথবা স্বীয় সম্পদের
চেয়ে বহুগুণবেশি সম্পদ কোনো বিনিময়
ছাড়াই নিজের হস্তগত হবে।
লটারি এবং রেফেল ড্র-এর হুকুম:
আধুনিক কালের লটারি এবং রেফেল
ড্র জুয়ার দ্বিতীয় প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।
এতে অংশগ্রহণকারীগণ গুরুতেই ফিস,
টিকেট ক্রয় বা অন্য কোনোভাবে কিছু
টাকা প্রদান করে থাকে। অতঃপর
উদ্যোক্তারা এর অংশবিশেষ
বিজয়ীদের মাঝে পূর্ব নির্ধারিত
হারে পুরস্কার হিসেবে বন্টন করে।
যাদের নাম লটারিতে আসবে না,
তাদের টাকা কোনো কিছুর বিনিময়
ছাড়াই অন্যের হাতে চলে যায়। এর
বিনিময় তারা কিছুই পায় না। আর
যাদের নাম নাম লটারিতে আসে,
তারা বিনা পুজিতে কোনরূপ বিনীময়
ছাড়াই স্বাীয় অর্থ অপেক্ষা বিপুল
পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেয় । উভয়
প্রকারের আলোক জুয়ার সংজ্ঞা
এভাবে করা যেতে পারে ‘‘জুয়া
একাধিক ব্যক্তির মাঝে এমন একটি
চুক্তি যাতে প্রত্যেকেই অনিশ্চিত
কোনো বিষয়ের উপর ভিত্তি করে কিছু
টাকা দিয়ে ( তাৎক্ষণিক প্রদান করে
বা পরবর্তীতে প্রদানের অঙ্গীকার
করে) এমনভাবে বাজি ধরে যে, হয়তো
তা কোনোকিছুর বিনিময় ছাড়া
অন্যের হাতে চলে যাবে, বা অন্যের
মাল কোনোকিছুর বিনিময় ছাড়া তার
কাছে চলে আসবে।
লটারি এবং জুয়ার মাঝে পার্থক্য:
স্মর্তব্য যে লটারি এবং জুয়া এক
জিনিস নয় । তবে কখনো কখনো
লটারিকে জুয়ার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা
হয়।
সুতরাং, শুধুমাত্র ওই লাটারি জুয়া হবে
যাতে জুয়ার পূর্বোক্ত সংজ্ঞা প্রয়োগ
হবে। আর যে লটারিতে জুয়ার
হাক্বীকত বিদ্যামন না থাকবে; বরং
জায়েয কোনো উদ্ধেশ্যে লটারি
দেয়া হবে তাকে না জুয়া বলা হবে,
না শরীয়তের দুষ্টিতে নাজায়েয বলা
যাবে।
যেমন, সরকার ভবঘুরেদের মাঝে ফ্ল্যাট
বিতরণ করতে চায় কিন্তু ভবঘুরেদের
তুলনায় ফ্ল্যাট বিতরণ করতে চায় কিন্তু
ভবঘুরেদের তুলনায় ফ্ল্যাট সংখ্যা
সীমিত । এক্ষেত্রে লটারির মাধ্যমে
নাম নির্বাচন করে বিতরণ করা
নিঃসন্দেহে জায়েয। একে অবশ্যই
জুয়া বলা হবে না। কেননা, জুয়ার
পূর্বোল্লিখিত সংজ্ঞা এর উপর প্রয়োগ
হয় না।
আরেকটি কথা জুয়ার অনিবার্য একটি
মৌলিক বিষয় হলো, যে অনিশ্চিত
বিষয়ের সাথে চুক্তিকে শর্তারোপ
করা হয়েছে, তা পাওয়া না গেলে
বাজির টাকা বিনিময়হীন অন্যের
হাতে চলে যায়। এর কোনো বিনিময়
পাওয়া যায় না।
সুতরাং যেসব ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ
বিনিময় পাওয়া নিশ্চিত হবে, সে
ক্ষেত্রে একে না বাজির টাকা বলা
হবে, না ঝুঁকিপূর্ণ বলা হবে। আর ঝুঁকি
যেহেতু জুয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেহেতু
যে চুক্তি এ ধরনের ঝুঁকিমুক্ত হবে, তাকে
কিমার বা জুয়া বলা হবে না।
কুপন এবং পন্যক্রয়ের উপর পুরস্কার:
কখনো কখনো বিভিন্ন কোম্পানি ও
ব্যবসায়ী অধিকহারে পণ্য বাজারজাত
করার লক্ষে কুপনের নাম্বারের উপর
লটারির মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণ করে
থাকে। একে সর্বাবস্থায় জুয়া বলা
হবে না, বরং এর বিশদ ব্যাখ্যা হলো,
যদি পণ্যের মূল্য তারতম্য না হয়, অর্থাৎ
পুরস্কার প্রদান না করলে ক্রেতাদের
থেকে যে মূল্য নেয়া হতো, পুরস্কার
প্রদানের ক্ষেত্রেও যদি একই মূল্য
নেয়া হয় তাহলে এধরনের পুরস্কার জুয়া
হবে না।
যেমন একটি চায়ের কাপের সাধারণত
বাজার মূল্য ত্রিশ টাকা । পুরস্কার
প্রদানের ক্ষেত্রেও সেই কাপটি ত্রিশ
টাকাই বিক্রি করা হচ্ছে, কিন্তু এর
পাশাপাশি এই ঘোষণা ও দেয়া হচ্ছে
যে, যার কুপনের নাম্বার লটারিতে
প্রকাশ পাবে, তাকে অমুক পুরস্কার
দেয়া হবে। এক্ষেত্রে এটা জুয়া হবে
না। কেননা, ক্রেতার ত্রিশ টাকা বা
এর কোনো অংশ দ্বারা বাজি ধরা
হয়নি। বরং ক্রেতা চায়ের কাপের
মাধ্যমে ত্রিশ টাকার পরিপূর্ণ বিনিময়
নিশ্চিতভাবে পেয়ে গিয়েছে।
পরাজিত হয়ে পুরস্কার না পেলেও তার
কোনো ক্ষতি নেই। অথচ জুয়ার জন্য
অপরিহার্য হলো, পরাজিত হওয়ার
ক্ষেত্রে বাজির টাকা
বিনিময়বিহীন অন্যের হাতে চলে
যাওয়া। আর এখানে ক্রেতা পরিপূর্ণ
বিনিময় পেয়েছে, বিধায় এটা
কোম্পানি বা ব্যবসায়ীদের পক্ষ
থেকে পুরস্কার হিসাবে গণ্য করা হবে।
এটাকে জুয়া বলা হবে না।
তবে পুরষ্কার প্রদানের কারণে পণ্যের
স্বাভাবিক মূল্য হতে যদি অধিক মূল্য
ধার্য করা হয়।
যেমন, যে চায়ের কাপের স্বাভাবিক
মূল্য ত্রিশ টাকা, তা পুরষ্কার
প্রাদানের কারণে বিক্রি করা হচ্ছে
চল্লিশ টাকা। এক্ষেত্রে ক্রেতার
অতিরিক্ত দশ টাকা পুরষ্কার প্রকল্পের
অধীনে বাজি ধরা হিসেবে গণ্য হবে।
সতরাং সে যদি পুরষ্কার না পায়
তাহলে এ দশ টাকা বিনিময়বিহীন
অন্যের হস্তগত হয়ে যাবে। এর উপর জুয়ার
সংজ্ঞা প্রয়োগ হওয়ার কারণে এ
ধরনের পুরষ্কার প্রকল্প হারাম এবং
নিষিদ্ধ ।(আদালতী ফায়সালা)
জুয়ার কতিপর প্রচলিত পদ্ধতি:
হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত ‘‘দাবা
খেলাও জুয়ার অন্তর্ভুক্ত’’। (ইবনে আবী
হাতেম)
আল্লামা উব্ন আব্বাস আব্দুল্লাহ্ ইবনে
উমর রা. কাতাদা, মুআবিয়া ইবনে
সালিহ, আতাও ত্বাউস(রহ) এ উদ্ধৃতি
দিয়ে লিখেছেন -
‘‘সব ধরনোর জুয়াই মাইসির । এমনকি
কাঠের গুটি ও আখরোট দ্বারা
বাচাচদের খেলাও জুয়ার অন্তভূক্ত’’।
(ইবনে কাছীর, ২/৯১)
হযরত রাশেদ ইব্নে সা’দ এবং ইব্নে
হাবীব (রহ.) ও বলেন, বাচ্চাদের কাঠের
গুটি, আখরোট এবং ডিম দ্বারা
হারজিতের খেলাও জুয়ার অন্তভুক্ত।
সাহাবায়ে কিরামদের উক্তি এবং
জুয়ার পুর্বোল্লেখিত সংজ্ঞা দ্বারা
প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান যুগের নিম্ন
বর্ণিত খেলাও জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। কুরআনে
কারীমের কঠিন শাস্তি এগুলোর উপরও
প্রযোজ্য হবে। ছেলে মেয়েদেরকে
এসব খেলাধুলা থেকে বিরত রাখা।
ঘোড়দৌড়:
বর্তমান যুগে ঘোড়দৌড়ের
প্রতিযোগীদের উপর বাজি ধরে ফিস
জমা দেয়া জুয়ার অন্তর্ভুক্ত। কেননা
এতে পরাজিত ব্যক্তির জমাকৃত টাকা
সম্পূর্ণরূপে গচ্ছা যায়। অপারদিকে
বিজয়ী ব্যক্তির জমাকৃত টাকা
সম্পূর্ণরূপে গচ্ছা যায়। অপরদিকে বিজয়ী
ব্যক্তি বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে
নেয়।
আজকাল বিভিন্ন রকমের লটারি
পরিলক্ষিত হয় ।এ সবই জুয়ার অন্তভূক্ত এবং
হারাম। এর শত শত পদ্ধতি মার্কেট ও
শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে চালূ রয়েছে।
তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ কয়েক প্রকারের হুকুম
লিখা হচ্ছে।
পত্রিকার কুইজ:
বর্তমান যুগে কুইজের নামে জুয়া
মহামরির আকার ধারণ করেছে। যাকে
দৈনিক, সাপ্তাহিক পাক্ষিক ও মাসিক
প্রভূতি পত্রিকা কর্তৃপক্ষ আয়ের একটি
উৎস বানিয়ে নিয়েছে। কুইজের
বিভিন্ন পদ্ধতি ছাপিয়ে প্রচার করা
হয় যে, এতে অংশ গ্রহণকারীগণ
নির্দিষ্ট শুভেচ্ছা ফি বা
রেজিস্ট্রেশন ফি সহ, উদাহরণস্বরূপ দশ
টাকাসহ নিধারিত তারিখের পূর্বে
পাঠাতে হবে। সঠিক উত্তরদাতাদের
মাঝে লটারির মাধ্যমে বিজয়ীদের
নামে পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। এতে
কেউ কেউ বড় ধরনের পুরস্কার প্রদানেরও
অঙ্গীকার করে থােক দশ টাকা
পরিমাণে অল্প বলে কেউ গায়ে
লাগায় না । বরং লোভের বশবর্তী হয়ে
তাদের সামনে থাকে লক্ষ লক্ষ টাকা
প্রাপ্তির স্বপ্ন। যার ফলে হাজার
হাজার লাখো লাখো জনতা এত
অংশগ্রহণ করে দশ টাকা পাঠিয়ে দেয়।
অনুরূপভাবে আধুনিককালের লটারির
টিকেট বিক্রি করে টিকেট
ক্রয়কারীদের মাঝে লটারির মাধ্যমে
যে পুরস্কার ঘোষণা করা হয় তাও জুয়ার
অন্তর্ভুক্ত।
প্রচলিত এই প্রকারের জুয়া হাজারো
গুনাহ’র সমষ্টি ।এতে আল্লাহও রাসূল সা.
এর হুকুমের বিরুদ্ধাচরণের জন্য জনগণকে
ঢাকঢোল বাজিয়ে আমন্ত্রণ জানানো
হয়। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারী কুরআনে
কারীমের হুকুমের বিরুদ্ধাচরণ করে
গুনাহে কবীরার অপরাধী সাব্যস্ত হয়।
উপরন্ত গুনাহ’র অশুভ পরিণতি
উদ্যোক্তদের উপর বর্তায় । যে কেউ এ
কাজে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা
করবে, সেও গুনাহ’র অংশিদারী হবে।
এভাবে একই সময়ে লক্ষ-কোটি মুসলিম
জনতা প্রকাশ্যে আল্লাহ এবং রাসূল
সা.-এর সুস্পষ্ট হুকুমের পরিপন্থী একটি
অকাট্য হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে যায়।
এতে হাজারো লাখো দ্বীনদার
মুসলিম ভাই -বোনও লিপ্ত। অতঃপর এর
ধারাবাহিকতা চলতে থাকে। আল্লাহ
তাআলা এই মহামারী থেকে সকলকে
মুক্তি দান করূন।আমীন!
বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বন্ধ
কোটা ক্রয়-বিক্রয়:
মার্কেট এবং প্রদর্শনীতে বন্ধ কোটা
বিক্রি করা হয়। কোনোটায় এক পয়সার
পন্যও থাকেনা, আবার কোনোটায় মোট
অংকের মালামাল থাকে। মানুষ এক
ভাগ্য পরীক্ষা হিসেবে ক্রয় করে
থাকে। এটাও সুস্পষ্ট জুয়া এবং হারাম।
বাচ্চাদের বিভিন্ন খেলাধুলা:
বিভিন্ন স্থানে বাচ্চারা বাদাম
আখরোট বা কাঁচের গুলি প্রভৃতি দ্বারা
হার-জিতের খেলাধুলা করে । এটাও
জুয়ার অন্তর্ভুক্ত এবং হারাম। কোনো
কোনো স্থানে টাকা দিয়ে ঘুড়ি
উড়িয়ে হার-জিতের খেলার আয়োজন
করা হয়। এটাও জুয়ার অন্ত ভুক্ত এবং
নাজায়েয।
সাট্টা-এর হুকুম:
(কলকাতা, বোম্বে প্রভৃতি শহরের
বাণিজ্য কেন্দ্র এটি অনুষ্ঠিত হয়)। কোন
ব্যবসায়ী কতগুলো টুকরি সাজিয়ে
রাখে। এগুলো কোনটায় মাল থাকে
আবার কোনটা খালি থাকে।
ব্যবসায়ী এগুলোর নিলাম ডাকে।
অপরদিকে চাঁদার মাধ্যমে টাকা জমা
করে একেক দল দাম বলে । সর্বোচ্চ
ডাককারী দলকে মালামাল দেয়া হয়।
অতঃপর তারা আবার এরটা বিশেষ
পদ্ধতিতে এসব টুকরি নিজেদের মধ্যে
বন্টন করে।তাতে কারো ভাগে পড়ে
মাল বোঝাই টুকরি আর কারো ভাগে
খালি। এই খেলা স্বভাবতই কিছু স্যংক
লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এই পদ্ধতির
খেলাকে উর্দূ বা হিন্দিতে সাট্টা
বলা হয়) সাট্টা এর কার্যক্রম জুয়ার
অন্তভূক্ত । সতরাং এর কার্যক্রমে কোন
ধরনের সহযোগিতা করা হারাম।
কবুতর খেলাঃ
কতিপর লোক টাকা দিয়ে হার-
জিতের মাধ্যমে কবুতর খেলা খেলে
থাকে। এ খেলা এমনিতেই নাজায়েয।
উপরন্ত টাকা দিয়ে হারজিত স্বাতন্ত্র
আরেকটি গুনাহ এবং সুস্পষ্ট হারাম।
মেলা প্রদর্শনীর টিকেটে পুরস্কার:
বিভিন্ন মেলা ও প্রদর্শনীতে
প্রবেশের জন্য টিকেট ক্রয় করতে হয়। উক্ত
টিকেটের নাম্বারের উপর লটারির
মাধ্যমে পুরস্কার দেয়া হয়। এটা জুয়ার
অন্তর্ভুক্ত নয়। কেননা, টিকেট
ক্রয়কারীগণ টিকেটের বিনিময়ে
মেলা ও প্রদর্শনীতে প্রবেশের অনুমতি
পেয়ে যায়। তবে এ বিষয়টি নিয়তের
উপর নির্ভরশীল । যে ব্যক্তি শুধুমাত্র
পুরস্কারপ্রাপ্তির উদ্দেশ্যে টিকেট ক্রয়
করে, সে ব্যক্তির নিয়তের কারণে এটা
এক ধরনের জুয়া হয়ে যাবে। আর যে
ব্যক্তির আসল উদ্দেশ্য মেলা ও
প্রদর্শনীতে প্রবেশ করা, পুরষ্কার
উদ্দেশ্য নয়, অতঃপর ঘটনাক্রমে পুরষ্কারও
পেয়ে গেলো এটা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত
হবে না। (জাওয়াহিরুল ফিকহ)
সেবামূলক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পুরস্কার
জুয়ার অন্তভুক্তঃ
আজকাল কতিপর জনকল্যাণ, সেবামূলক ও
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনগণ থেকে
স্বেচ্ছায় আর্থিক সহযোগিতা (চাঁদা)
প্রাপ্তির উদ্দেশ্য পাঁচ, দশ ও পঞ্চাশ
হাজার টাকার টিকেট (কুপন) চালু করে
সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করে
এবং তাদের প্রলুদ্ধ ও আকৃষ্ট করার জন্য এই
প্রতিজ্ঞা করে যে, নির্দিষ্ট
তারিখে লটারির মাধ্যমে
বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা
হবে। শরীয়তের দুষ্টিতে এ ধরনের
পুরস্কার প্রদান এবং গ্রহণ উভয়টি
নাজায়েয ও হারাম। কেননা, এ পুরস্কার
জুয়ার অন্তর্ভূক্ত । এর জায়েয পদ্ধতি
হলো, যে কেউ পুরস্কারের লোভ-
লালসা ব্যতীত আর্থিক সহযোগিতা
(চাঁদা) প্রদান করবে। এর উপর কোনো
ধরনের পুরস্কার ঘোষণা করবে না।
ম্যাচে বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান:
ম্যাচ বা টুর্নামেন্ট অংশগ্রহণ কারী
টিম থেকে টাকা নিয়ে সে টাকা
থেকে বিজয়ী টিম বা বিশেষ কোনো
খেলোয়াড়কে কাপ, ট্রফি ইত্যাদি
পুরস্কার দেয়া জুয়ার অন্তর্ভুক্ত এবং
নাজায়েয। এর থেকে বিরত থাকা
ওয়াজিব। তবে এ পুরস্কার যদি টিমে
বা খেলায় অংশগ্রণকারী ব্যতীত
তৃতীয় পক্ষ থেকে দেয়া হয়, তাহলে তা
প্রদান ও গ্রহণ উভয়টি জায়েয ও হালাল।
সারাংশঃ
জুয়া একটি নিকৃষ্ট অত্যন্ত ঘৃণিত
অপছন্দনীয়, গর্হিত ও শয়তানী কার্যক্রম।
শরীয়তের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ নাজায়েয
এবং হারাম। জাহেলী যুগে জুয়ার
কার্যক্রম ব্যাপক আকারে প্রচলিত ছিল।
তারা এর প্রতি এমন আসক্ত ছিল যে,
কখনো কখনো স্ত্রী-ছেলে
মেয়েদেরকেও বাজির উপকরণ
বানিয়ে ফেলত। অংশ বন্টন এবং
বিভিন্ন ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি জুয়ার উপর
নির্ভশীল ছিল। ইসলামী শরীয়ত
এটাকে হারাম এবং নিষিদ্ধ ঘোষণা
করেছে। জাহেলী যুগের জুয়ার কিছু
কিছু চুক্তির কথা হাদিস গ্রন্থে উল্লেখ
রয়েছে।
যথা,বাইয়ে মুযাবানা, মুলামাসা,
মুনাবাযা, বাইয়ে হাসাত, বাইয়ে
উরয়ান প্রভৃতি। হযরত শাহ ওয়ালী
উল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহ.)
হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা নামক
গ্রন্তে এ ধরনের চুক্তি নিষিদ্ধ হওয়ার
কারণ এবং জুয়ার আর্থ-সামাজিক
ক্ষতির ব্যাপারে খুব চমৎকারভাবে
আলোচনা করেছেন (হজ্জাতুল্লাহিল
বালিগা, ২/৯৮)।
আল্লাহপাক আমাদেরকে জুয়া এবং
লটারি না করে ইসলাম বিরোধী
কার্যকলাপের হাত থেকে রক্ষা করার
তাওফিক দান করুন- আমীন।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত