কিনে ফেলেও ব্যবহার নয়: নিষেধাজ্ঞায় ঝুলে আছে পুলিশের হেলিকপ্টার প্রকল্প
লস এঞ্জেলেসে দ্বিতীয় রাতের জন্য কারফিউ, শত শত গ্রেফতার
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন অভিযানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ ও অস্থিরতার প্রেক্ষিতে লস এঞ্জেলেসে টানা দ্বিতীয় রাতের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। শহরের ডাউনটাউনে মঙ্গলবার রাত ৮টা (স্থানীয় সময়) থেকে কারফিউ শুরু হওয়ার পরপরই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৩০ জন অনিবন্ধিত অভিবাসী এবং ১৫৭ জনকে হামলা, বাধা প্রদান ও পুলিশের উপর আক্রমণের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে পুলিশের উপর হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুই ব্যক্তিকে মলোটোভ ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে ফেডারেল আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৪,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য এবং ৭০০ মেরিন সেনাকে মোতায়েন করা হয়েছে। এসব বাহিনীকে অস্থায়ীভাবে আটক রাখার ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে।
লস এঞ্জেলেসের মেয়র ক্যারেন ব্যাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, কারফিউর লক্ষ্য হলো “তthose who are taking advantage of the president’s chaotic escalation”—মূলত যারা সহিংসতা ছড়াচ্ছে তাদের থামানো। তিনি বলেন, “এক সপ্তাহ আগেও সব শান্ত ছিল। কিন্তু শুক্রবার থেকে অভিবাসন অভিযান শুরু হওয়ার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়।”
মেয়র ব্যাস অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন অভিযান মানুষের মধ্যে “ভয়” এবং “অস্থিরতা” তৈরি করেছে এবং এটা একটি জাতীয় পরীক্ষার অংশ, যেখানে ফেডারেল সরকার কতটা স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা কেড়ে নিতে পারে তা নির্ধারণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার রাতে পুলিশ জানিয়েছে, তারা ব্যাপক গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০৩ জনকে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গের নির্দেশ না মানার জন্য, ১৭ জনকে কারফিউ লঙ্ঘনের জন্য, ৩ জনকে আগ্নেয়াস্ত্র বহনের জন্য এবং একজনকে পুলিশের উপর প্রাণঘাতী হামলার অভিযোগে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ডাউনটাউন এলাকায় ভাঙচুর ও লুটপাট রোধে কারফিউ আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ব্যাস। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেটও ছুড়েছে।
ন্যাশনাল গার্ড ও মেরিন সদস্যদের উদ্দেশ্য মূলত ফেডারেল সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়া এবং অভিবাসন অভিযানে সহায়তা। মেজর জেনারেল স্কট শেরম্যান জানান, এই বাহিনী সরাসরি গ্রেফতার করতে পারে না, তবে তারা পুলিশ আসা পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের আটক রাখতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এটি শহরকে “বিদেশি শত্রুর” দখল থেকে রক্ষা করার জন্য। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এই পদক্ষেপকে “গণতন্ত্রের উপর আঘাত” বলে উল্লেখ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন, “এরপর অন্য রাজ্যগুলোর পালা।”
প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, সেনা মোতায়েন ছিল “আইনগত ও সাংবিধানিক”। তবে বিরোধিতা ও সমালোচনার মধ্যেই লস এঞ্জেলেসে অস্থিরতা অব্যাহত রয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন