দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট
হজ্জের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ
হেরমে পাক ও তার পার্শ্ববর্তী যেসব পবিত্র
স্থানগুলোতে হজ্জের আমল ও রুকন আদায়
করা হয় তা খুবই সম্মানের স্থান। এগুলো
প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন।
ইসলামের ইতিহাসের সাথে এগুলোর ঘনিষ্ঠ
সম্পর্ক রয়েছে। তা অবগত হওয়া প্রত্যেক
মুসলমানের জন্যে অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে
হজ্জ যাত্রীদের জন্যে। এর ফলে তারা
হজ্জের পুরো ফায়দা হাসিল করতে পারবেন।
হজ্জে তাদের সে আধ্যাত্মিক আবেগ অনুভূতি
সৃষ্ট হবে যা হজ্জের প্রাণ। সেসব স্থানের
নাম ও পরিচয় নিম্নে দেয়া হলো।
১. বায়তুল্লাহ
এ এক চতুষ্কোণ পবিত্র গৃহ যা আল্লাহর
আদেশে হযরত ইবরাহীম (আ) এবং হযরত
ইসমাঈল (আ) তৈরী করেছিলেন। এ আশায়
করেছিলেন যে, যতদিন দুনিয়া থাকবে
ততদিন তা সমগ্র মানবতার জন্যে হেদায়েত
কেন্দ্রস্থল হয়ে থাকবে। এখান থেকেই সেই
রাসূলের আবির্ভাব হয় যিনি সমগ্র বিশ্বের
জন্যে হেদায়াতের বিরাট দায়িত্ব পালন
করতে থাকবে। কুরআন সাক্ষ্য দেয় যে,
দুনিয়ায় আদম সন্তানের জন্যে আল্লাহর
ইবাদাতের জন্যে সর্বপ্রথম যে ঘর তৈরী করা
হয়েছিল তা এ বায়তুল্লাহ। এটা সমগ্র
বিশ্বের জন্যে কল্যাণ ও বরকতের উৎস ও
হেদায়াতের কেন্দ্র। হজ্জের সময় হেরেম
যিয়ারতকারীগণ এর চারদিকে পরম ভক্তি
শ্রদ্ধা ও বিনয় নম্রতা সহকারে তাওয়াফ
করে।
২. বাতনে উরনা
আরাফাতের ময়দানে এক বিশেষ স্থান যা
বাতনে উরনা অথবা উরনা প্রান্তর নামে
প্রসিদ্ধ। বিদায় হজ্জের সময় এ প্রান্তরেই
নবী (স) জনসমাবেশে ভাষণ দান করেন।
৩. জাবালে রহমাত
আরাফাতের ময়দানের এক বরকতময় পাহাড়।
৪. জাবালে কাযাহ
মুযদালফায় মাশায়ারুল হারামের নিকটে
একটি পাহাড়।
৫. জাবালে আরাফাত
ময়দানে আরাফাতের এক পাহাড়। এ
পাহাড়ের জন্যেই এ উপত্যকা বা প্রান্তরকে
আরাফাত বা ময়দানে আরাফাত বলা হয়।
৬. হুজফা
মক্কা থেকে পশ্চিম দিকে প্রায় একশ আশি
কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি স্থানের
নাম হুজফা। সিরিয়াবাসী এবং সিরিয়ার
পথে আগমনকারী সকলের জন্যে হুজাফ
মীকাত। হেরেমে আসার জন্যে সেখানে
ইহরাম বাধাতে হয়।
৭. জুমরাত
মিনায় কিছু দুরে অবস্থিত তিনটি স্তম্ভ
রয়েছে। এগুলোকে জুমরাত বলে। প্রথম স্তম্ভ
যা মসজিদে খায়েফের দিকে বাজারে
অবস্থিত তাকে বলে জুমরায়ে উলা।
বায়তুল্লাহর দিকে অবস্থিত দ্বিতীয় স্তম্ভের
নাম জুমরায়ে ওকবা। এ দুয়ের মধ্যে তৃতীয়
স্তম্ভ। তার নাম জুমরায়ে ওস্তা।
৮. হেরেম
যে মক্কা শহরে বায়তুল্লাহ এবং মসজিদুল
হারাম অবস্থিত তার আশে পাশের কিছু
এলাকাকে হেরেম বলে। হেরেমের সীমানা
নির্ধারিত আছে এবং তা সকলের জানা।
প্রথমে এ সীমানা নির্ধারণ করেন হযরত
ইবরাহীম (আ )। তারপর নবী (স) তার যামানায়
এ সীমানা নবায়িত ও সত্যায়িত করেন।
মদীনার দিকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার
হেরেমের সীমানা। ইয়ামেনের দিকে প্রায়
এগারো কিলোমিটার, তায়েফের দিকেও
প্রায় এগারো কিলোমিটার এবং এতো
কিলোমিটার ইরাকের দিকে। নবী (স) এর পর
হযরত ওমর (রা), হযরত ওসমান (রা) এবং হযরত
মুয়াবিয়া (রা) তাদের আপন আপন যুগে এ
সীমানা ঠিক রাখেন। আল্লাহর দীনের প্রতি
ভালোবাসা ও আনুগত্যের দাবি এই যে,
মুসলমান এ সীমারেখাগুলোর মহত্ত্ব, শ্রদ্ধা ও
সংরক্ষণের প্রতি পুরোপুরি লক্ষ্য রাখবে
এবং এ সীমারেখার ভেতর যেসব কাজ
নিষিদ্ধ তা করা থেকে বিরত থাকবে।
৯. হাতীম
বায়তুল্লাহর উত্তর পশ্চিমের অংশ হযরত
ইবরাহীম (আ )এর যুগে কাবা গৃহের শামিল
ছিল এবং পরবর্তীকালে সংস্কারের সময় তা
মূল গৃহের শামিল করা হয়নি। নবী পাকের
নবুয়াতের পূর্বে আগুন লেগে কাবা ঘরের
কিছু অংশ পুড়ে যায়। কুরাইশগণ পুনরায় তা
নির্মাণ করতে গেলে পুঁজি কম পড়ে যায় এবং
কিছু দেয়াল ছোট করে রেখে দেয়া হয়। এ
অসমাপ্ত অংশকে হাতীম বলে।হাতীম যেহেতু
বায়তুল্লাহরই অংশ, সে জন্যে
তাওয়াফকারীগণ হাতীমের বাহির দিক
দিয়ে তাওয়াফ করেন, যাতে করে হাতীমের
তাওয়াফ হয়ে যায়।
১০. যাতে ইরাক
মক্কা থেকে উত্তর পূর্ব দিকে প্রায় আমি
কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি স্থান যা
ইরাকবাসীদের জন্যে মীকাত নির্ধারিত
আছে এবং ঐসব লোকদেরও জন্যে ইরাকের
পথে যারা হেরেমে প্রবেশ করে।
১১. যুল হুলায়ফাহ
মদীনা থেকে মক্কা আসার পথে মদীনা
থেকে আট নয় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যুল
হুলায়ফা নামক স্থানটি। এটা মক্কা থেকে
কয়েকশ কিলোমিটার দূরে মদীনাবাসীদের
ও মদীনা থেকে আগমনকারীদের জন্যে
মীকাত।
১২. রুকনে ইয়ামেনী
বায়তুল্লাহর যে কোণ ইয়ামেনের দিকে
তাকে রুকনে ইয়ামেনী বলে। এটা অতি
বরকতপূর্ণ স্থান। নবী (স) বলেন, রুকনে
ইয়ামেনী এবং হিজরে আসওয়াদ স্পর্শ করলে
গুনাহ মাফ হয়ে যায়। (আত তারগীব)
১৩. যমযম
যমযম একটি ঐতিহাসিক কূপ যা বায়তুল্লাহর
পূর্ব দিকে অবস্থিত। হযরত ইবরাহীম (আ ) যখন
আল্লাহর হুকুমে হযরত ইসমাঈল (আ ) ও তার
মাতা হযরত হাজেরাকে মক্কায় বারিহীন
মরুভূমিতে এনে পুনর্বাসিত করেন তখন আল্লাহ
তাদের ওপর বিশেষ অনুগ্রহ প্রদর্শন করেন
এবং এ প্রস্তরময় প্রান্তরে তাদের জন্য
যমযমের এ ঝর্ণা প্রবাহিত করেন। হাদীসে এ
ঝর্ণা ও তার পানির বড়ো ফযিলত বয়ান করা
হয়েছে। নবী (স) বলেন, যমযমের পানি পেট
ভরে পান করা উচিত। এ যে উদ্দেশ্যে পান
করা হবে তা ফলদায়ক হবে। এ ক্ষুধার্তের
জন্যে খাদ্য, রোগীর জন্যে আরোগ্য।
১৪. সাফা
বায়তুল্লাহর পূর্ব দিকে একটি পাহাড়ের নাম
সাফা। এখন সে পাহাড়ের সামান্য চিহ্নই
বাকী আছে। তার বিপরীত বায়তুল্লাহর
উত্তরে মারওয়াহ পাহাড়। এ দুয়ের মাঝখানে
হেরেম দর্শনার্থীর সায়ী করা ওয়াজিব। এ
সায়ীর উল্লেখ কুরআন পাকে রয়েছে।
১৫. আরাফাত
আরাফাত মক্কা থেকে প্রায় পনেরো
কিলোমিটার দূরে এক অতি প্রশস্ত ময়দান।
হেরেমের সীমানা যেখানে শেষ সেখান
থেকে আরাফাতের সীমানা শুরু। আরাফাতের
ময়দানে পৌছা ও অবস্থান করা হজ্জের অতি
গুরুত্বপূর্ণ রুকন। এ রুকন ছেড়ে দিলে হজ্জ হবে
না। হাদীসে আরাফাতে অবস্থানের বড়ো
ফযিলত বলা হয়েছে।
১৬. কারনুল মানাযিল
মক্কা থেকে পূর্বমুখী সড়কের ওপর এক
পাহাড়ি স্থানের নাম কারনুল মানাযিল। এটা
মক্কা থেকে প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার
দূরে অবস্থিত। এটা নাজদবাসীদের জন্যে
এবং নাজদের পথে যারা হেরেমে প্রবেশ
করে তাদের জন্য মীকাত।
১৭. মুহাসসাব
মক্কা ও মিনার মধ্যবর্তী একটি প্রান্তর যা
দুটি পাহাড়ের মধ্যে অবস্থিত। আজকাল
একটি বসতিপূর্ণ হয়ে গেছে। এখন তাকে
মুয়াহেদা বলে। নবী (স) মিনা থেকে যাবার
সময় এখানে কিছুক্ষণ থেমে ছিলেন। কিন্তু
এখানে থামা হজ্জের ক্রিয়াকলাপের কিছু
নয়।
১৮. মুযদালফা
মিনা ও আরাফাতের একেবারে মাঝখানে
এক স্থানে নাম মুযদালফা। একে জমাও বলে
এজন্যে যে, ১০ই যুলহাজ্জের রাতে হাজীদের
এখানে জমা হতে হয়। মুযদালফায় অবস্থান
করা ওয়াজিব। অবস্থানের সময় ফজরের সূচনা
থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত।
১৯. মসজিদুল হারাম
মসজিদুল হারাম দুনিয়ার সকল মসজিদ থেকে
উৎকৃষ্ট। বরঞ্চ নামাযের প্রকৃত স্থানই এ
মসজিদ এবং দুনিয়ার সকল মসজিদ
প্রকৃতপক্ষে এ মসজিদেরই স্থলাভিষিক্ত। এ
হচ্ছে সেই মুবারক মসজিদ যার মাঝখানে
আল্লাহর সেই ঘর অবস্থিত যা দুনিয়ার
ইবাদাতের প্রথম ঘর এবং সমস্ত মানবতার
হেদায়াত ও বরকতের উৎস। নবী (স) বলেন, এ
মসজিদে এক নামায পড়ার সওয়াব অন্য
স্থানের এক লক্ষ নামাযের সমান।
২০. মসজিদে নববী
নবী (স) যখন হিজরত করে মদীনায় এলেন তখন
তিনি এখানে একটি মসজিদ তৈরী করেন।
নির্মাণ কাজে সাহাবীদের সাথ তিনি
নিজেও বরাবর শরীক ছিলেন। তিনি বলেন, এ
আমার মসজিদ। তিনি দশ বছর এ মসজিদে
নামায পড়েন এবং সাহাবায়ে কেরামও বহু
বছর এতে নামায পড়েন। এ মসজিদের ফযিলত
ও মহত্ত্ব বর্ণনা করে নবী (স) বলেন-
শুধুমাত্র তিনটি মসজিদের জন্যে মানুষ সফর
করতে পারে। মসজিদুল হারাম, মসজিদুল
আকসা ও আমার এ মসজিদ। (বুখারী ও মুসলিম)
তিনি আরও বলেন, যে ব্যক্তি আমার এ
মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামায এভাবে
আদায় করে যে, মাঝের এক ওয়াক্ত ছুটে
যাবে না, তাকে জাহান্নামের আগুন ও
অন্যান্য আযাব থেকে নাজাত দেয়া হবে।
এভাবে মুনাফেকি থেকেও তাকে অব্যাহতি
দেয়া হবে। (আত-তারগীব)
২১. মসজিদে খায়েফ
এ হচ্ছে মিনার একটি মসজিদ। মিনায়
অবস্থানকালে হাজীগণ এ মসজিদে যোহর,
আসর, মাগরিব, এশা ও ফজর নামায আদায়
করেন।
২২. মসজিদে নিমরাহ
এ হেরেম ও আরাফাতের ঠিক সীমান্তের
ওপর অবস্থিত। এ মসজিদের যে দেয়াল
মক্কার দিকে রয়েছে তাই হেরেম ও
আরাফাতের সংযোগস্থল। জাহিলিয়াতের
যুগে কুরাইশগণ আরাফাতে না গিয়ে
হেরেমের সীমার মধ্যেই অর্থাৎ মাশয়ারুল
হারামের পাশেই অবস্থান করতো এবং একে
নিজেদের বৈশিষ্ট্য মনে করতো। কিন্তু নবী
(স) বিদায় হজ্জে এ নির্দেশ দেন যে, তার
তাঁবু যেন নিমরাতে খাটানো হয়। তাই করা
হয়। এ স্থানেই মসজিদে নিমরা রয়েছে।
২৩. মাশয়ারুল হারাম
মুযদালফা প্রান্তরে এক উঁচু নিশানা রয়েছে।
তার ধার দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছে। এ
স্থানকে বলে মাশয়ারুল হারাম। এখানে
অধিক পরিমাণে যিকর ও তসবিহ পাঠের
তাকীদ করা হয়েছে। নবী (স) ঐ উঁচু স্থানে
ওঠে তসবিহ পাঠ ও দোয়া করেন। এটাও
দোয়া কবুলের একটি স্থান। কুরআন পাকেও
বলা হয়েছে যে, এখানে বেশী করে আল্লাহর
যিকির করতে হবে-
অতএব , তোমরা যখন আরাফাত থেকে ফিরে
আসবে তখন মাশয়ারুল হারামের নিকটে
আল্লাহর যিকর কর যেভাবে করতে বলা
হয়েছে।
২৪. মুতাফ
বায়তুল্লাহর চারদিকে যে ডিম্বাকৃতির স্থান
রয়েছে যার মধ্যে হাতীমও শামিল একে
মুতাফ বলে অর্থাৎ তাওয়াফ করার স্থান।
এখানে দিন রাত প্রতি মুহূর্তে মানুষ পতঙ্গের
ন্যায় বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে। শুধু
নামাযের জামায়াতের সময় তাওয়াফে
বিরতি থাকে।
২৫. মাকামে ইবরাহীম
বায়তুল্লাহর উত্তর পূর্ব দিকে কাবার দরজার
একটু দূরে একটা কোব্বা বানানো আছে। তার
ভেতরে এক পবিত্র পাথর আছে যার ওপরে
ইবরাহীম (আ ) এর দু পায়ের দাগ রয়েছে।
একেই বলা হয় মাকামে ইবরাহীম। এটি
অত্যন্ত পবিত্র ও বরকতপূর্ণ স্থান এবং
আল্লাহর বিরাট নিদর্শনাবলীর একটি।
আল্লাহ বলেন-
এবং মাকামে ইবরাহীমকে স্থায়ী
ইবাদাতগার বানিয়ে নাও।
তাওয়াফের সাত চক্কর শেষ করার পর
তাওয়াফকারী মাকামে ইবরাহীমের পাশে দু
রাকায়াত নামায পড়ে। নামাযের স্থান
মাকামে ইবরাহীম ও কাবার দরজার
মাঝখানে। ইমাম মালেক (র) বলেন, মাকামে
ইবরাহীম ঠিক ঐ স্থানেই আছে যেখানে
হযরত ইবরাহীম (আ ) রেখে গেছেন।
২৬. মুলতাযেম
বায়তুল্লাহর দেয়ালের ঐ অংশকে মুলতাযেম
বলে যা হিজরে আসওয়াদ ও কাবার দরজার
মাঝখানে অবস্থিত। এটা প্রায় ছয় ফুট অংশ।
এটি দোয়া কবুলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
মুলতাযেম শব্দের অর্থ হলো আবিষ্ট হওয়ার
স্থান অর্থাৎ বক্ষ, মুখমণ্ডল, হাত দিয়ে
আবেষ্টন করার স্থান। এভাবে আবেষ্টন করে
অত্যন্ত বিনয় ও আন্তরিক আবেগ সহকারে
এখানে দোয়া করা মসনুন।
২৭. মিনা
হেরেমের সীমার মধ্যে মক্কা থেকে প্রায়
পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি স্থান।
যুলহজ্জের আট ও নয় তারিখের মধ্যবর্তী
রাতে হাজীগণ এখানে অবস্থান করেন। নয়
তারিখে ভালোভাবে সূর্য উদয় হওয়ার পর
হাজীগণ এখান থেকে আরাফাতের দিকে
রওয়ানা হন।
২৮. মাইলাইনে আখদারাইনে (দুটি সবুজ
নিশানা)
সাফা মারওয়ার মাঝখানে মারওয়া যাবার
পথে বাম দিকে দুটি সবুজ চিহ্ন আছে। এ
দুটিকে বলে মাইলাইনে আখদারাইনে। এ
দুটির মাঝখানে দৌড়ানো মসনুন। তবে শুধু
পুরুষের জন্যে মেয়েদের জন্য নয়।
২৯. ওয়াদিয়ে মুহাসসার
মুযদালফা ও মিনার মাঝ পথে একটি স্থানকে
বলে মুহাসসার। নবী পাক (স) এর জন্মের কিছু
দিন পূর্বে হাবশার খৃষ্টান শাসক আবরাহা
বায়তুল্লাহকে ধূলিসাৎ করার দুরভিসন্ধিসহ
মক্কা আক্রমণ করে। যখন সে এ মুহাসসার
প্রান্তরে পৌঁছে তখন আল্লাহ তায়ালা
সমুদ্রের দিক থেকে বহু সংখ্যক ছোট ছোট
পাখীর ঝাঁক পাঠিয়ে দেন। এসব পাখীর
ঠোটে ও পায়ে ছোট ছোট পাথর ছিল। এসব
পাথর আবরাহার সৈন্যদের উপর এমন প্রবল
বেগে ও অবিরাম বর্ষণ করতে থাকে যে,
গোটা সেনাবাহিনী তসনস হয়ে যায়। হজ্জ-
যাত্রীগণ এ স্থান থেকে ছোট ছোট পাথর
কুড়িয়ে আনে এবং তাই দিয়ে রামী করে। এ
সংকল্পসহ রামী করা হয় যে, দীনে হক বরবাদ
করার দুরভিসন্ধি নিয়ে যদি কেউ অগ্রসর হয়
তাহলে তাকেও এভাবে তসনস করে দেয়া
হবে যেমন পাখীর ঝাঁক আবরাহার
সৈন্যবাহিনীকে করেছিল। হাজীদের উচিত
এখান থেকে ছোলার পরিমাণ ছোট ছোট
পাথর প্রয়োজন মতো সংগ্রহ করে নেয়া এবং
অবিলম্বে এ স্থান পরিত্যাগ করা। কারণ এ
হলো আযাবের স্থান।
৩০. ইয়ালামলাম
মক্কা থেকে দক্ষিণ পূর্ব দিকে ইয়ামেন
থেকে আসার পথে একটি স্থানের নাম। এ
মক্কা থেকে প্রায় ষাট কিলোমিটার দূরে।
ইয়ামেন এবং ইয়ামেনের দিক থেকে
আগমনকারীদের মীকাত এ স্থানটি।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতবাসী
হাজীদের এখানে ইহরাম বাধতে হয়।
শেয়ার করুন