আপডেট :

        স্কাই স্পোর্টসের বর্ষসেরা দলে জায়গা পেলেন হামজা চৌধুরী

        খাদ্যে কেমিক্যাল ব্যবহার বন্ধের দাবি ফরিদা আক্তারের

        ১২ কোটি টাকার অবৈধ জাল-মাছ বোঝাই নৌকা জব্দ করল নৌবাহিনী

        ফেনীতে ৩০০ বছরের প্রাচীন বিরল প্রজাতির বৃক্ষের সন্ধান

        আন্দোলনের নতুন কেন্দ্র: শাহবাগ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়

        সাবেক স্ত্রী মারিয়া: সিদ্দিক ছেলের মন নিয়ন্ত্রণ করেছে

        মিডিয়াকে স্বৈরাচারের হাতিয়ার বললেন শফিকুল আলম

        পতিতদের পুনর্বাসনের বিরোধিতা জনগণের, বললেন তারেক

        সড়কে নেমে পাকিস্তানিদের আনন্দ, চলছে মিস্টি বিতরণ

        এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে যমুনার দিকে মার্চ

        সান্তা আনা হাই স্কুলের সামনে সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা: কিশোরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের

        ২০২৬ সালের মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্যাসের দাম ৭৫% বাড়বে, এই দাবি নিয়ে নিউজমের অফিসের তীব্র প্রতিবাদ

        কম্পটনের পার্কে ১২ বছরের শিশু গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত, বন্দুকধারী পলাতক

        উষ্ণতার রেকর্ড ভাঙল Woodland Hills ও Burbank, জানালো NWS

        ‘গালফ অব আমেরিকা’ নাম পরিবর্তন নিয়ে গুগলের বিরদ্ধে মামলা করল মেক্সিকো

        শ্বেতাঙ্গ আফ্রিকানারদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণের পরিকল্পনা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সমালোচনা

        ডিএনসিসি: সমাবেশে স্প্রে ভেহিকেল নিয়ে অভিযোগ অবান্তর

        ভারতে ব্ল ক হলো বাংলাদেশের ৪ টিভি চ্যানেলের ইউটিউব

        শিক্ষকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় যশোর বোর্ডের প্রশ্নব্যাংক বন্ধ

        শিক্ষকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় যশোর বোর্ডের প্রশ্নব্যাংক বন্ধ

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ: রিফাতকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি কেন

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের বিশ্লেষণ: রিফাতকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি কেন

রিফাতকে বাঁচাতে কেন এগিয়ে আসেনি লোকজন তার উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ গণ মাধ্যম বিবিসি বাংলা। খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বরগুনা শহরে বুধবার দিনে-দুপুরে স্ত্রীর সামনে রিফাত হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা কাছে দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করেছেন কলেজ ছাত্র নুরুল ইসলাম রনি। হত্যাকাণ্ডের সময় রাস্তার উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে ঘটনা দেখেছেন তিনি।

রিফাতকে বাঁচানোর জন্য ভয়ে এগুতে পারেননি বলে তখন থেকে ভয়ানক মানসিক কষ্ট পাচ্ছেন।

"খুব খারাপ লাগছে। খুব কষ্ট পেয়েছি। ঠিকমতো ঘুম হচ্ছে না," টেলিফোনে বিবিসিকে বলেন নুরুল ইসলাম রনি, যিনি বরগুনা কলেজে বিএনপি সমর্থিত ছাত্রদলের একজন নেতা।

বুধবার সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে কলেজের সামনে রাস্তায় জনসমক্ষে যখন এই হামলা চলছিল, রনি বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ জটলা, চিৎকার শুনে তিনি এগিয়ে যান। তিনি বলেন, হামলাকারীদের বেশ ক'জনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবেও চিনতেন। বন্ধুদের মাধ্যমে নিহত যুবক নেয়াজ রিফাত শরিফকেও চিনতেন রনি।

"আমি রাস্তার উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে ওদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করছিলাম মারিস না মারিস না। ছেড়ে দে। কে শোনে কার কথা।"

এগোননি কেন? প্রতিরোধ করার চেষ্টা কেন করেননি? এই প্রশ্নে রনি বললেন সাহস হয়নি।

"ওদের হাতে ধারালো অস্ত্র। অত সাহস হয়নি। আরো যদি সাথে কেউ এগুতো, তাহলে হয়তো চেষ্টা করতাম। অন্য কেউ সাহস করলো না।"

রনি জানান, বহু মানুষ জড়ো হয়ে ঘটনা দেখেছে। পাশের কলেজের ছাদ থেকেও অনেক দাঁড়িয়ে দেখেছে। মোবাইল ফোনে ছবি তুলেছে। কিন্তু কেউ প্রতিরোধের চেষ্টা করেনি।

আশপাশে কত মানুষ তখন ছিল? রনি বললেন, "অনেক মানুষ। শ'খানেক হবে।"

"সবাই ভয় পেয়েছে। ওরা (হামলাকারীরা) যে কতটা ভয়ঙ্কর সবাইতো জানে।"

নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, "আমার আশাপাশে অনেক মানুষ ছিল। আমি চিৎকার করেছি, সবাইকে বলেছি - ওরে একটু বাঁচান। কিন্তু কেউ আমারে একটি সাহায্য করে নাই।"

বহু মানুষের চোখের সামনে দিনে দুপুর এমন একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে গেলেও কেন মানুষজন প্রতিরোধের চেষ্টা করলো না - এ নিয়ে সোশাল মিডিয়াতেও অনেকেই সমালোচনা করছেন।

লোকজন এখন হামলা থামানোর চাইতে ছবি তুলে ফেসবুকে দেওয়ার জন্য ব্যস্ত থাকে - এ ধরনের মন্তব্য করছেন অনেকেই।

ফিরোজ আহমেদ নামে একজন বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, "অপরাধীদের না ধরে, পুলিশকে ফোন না করে, মানুষজন ভিডিও করেছে, আমি এর তীব্র নিন্দা করি।"

তবে তার সাথে দ্বিমত পোষণ করে উৎসব খন্দকার নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, "ভিডিও ভাইরাল না হলে, ঘটনা কি এত দ্রুত প্রশাসনের নজরে আসতো?"

বরগুনার সাংবাদিক সোহেল হাফিজ বলেন, হামলাকারীদের প্রায় সবাই চিহ্নিত অপরাধী, তাদের সবাই চেনে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ ভয়ে এগুতে ভয় পেয়েছে।

"তাছাড়া তারা বেশ কয়েকজন ছিল, ধারালো অস্ত্রের সামনে মানুষ ভয়ে এগুতে পারেনি।"

"এদের (হামলাকারীদের) কয়েকজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। কয়েকজনের বিরুদ্ধে সাত/আটটি করে মামলা আছে। এদের একজনকে (সাব্বির আহমেদ নয়ন) তো শহরে সবাই নয়ন বন্ড নামে চেনে, নিজেকে সে জেমস বন্ড বলে ভাবে।"

বরগুনার একাধিক সূত্র বলছে, আসামীদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

বরিশালের সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম, যিনি বুধবারের হত্যাকাণ্ডের খবরাখবর দিতে এখন বরগুনায় রয়েছেন,তিনি বলেন, আজ (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর মসজিদের বাইরে তিনজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে তার কথা হয়েছে।

"সেদিন তারা কী দেখেছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন, কিন্তু ভয়ে নাম-পরিচয় বলতে চাননি। বোঝাই যায় তারা ভয় পাচ্ছেন।"

এই হত্যাকাণ্ডের মামলায় ১২ জন আসামীর মধ্যে বরগুনার পুলিশ এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত