মা দিবসে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢালিউড তারকাদের আবেগঘন পোস্ট
এডিস মশার বিরুদ্ধে এবার রেডিয়েশন প্রযুক্তি
মশা মারতে বুঝি শেষ হয়ে এলো কামান দাগানো। এক ধাপ এগিয়ে এবার রেডিয়েশন প্রযুক্তির ব্যবস্থা করে ডেঙ্গু রোগ বিস্তারকারী এডিস মশা নির্মূলে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এর অংশ হিসেবে ঝাঁকে ঝাঁকে পুরুষ এডিস মশা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দেশের বিজ্ঞানীরা। সেই কর্মযজ্ঞে নিজের উৎসাহের কথাও জানালেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
শনিবার (৩ আগস্ট) এমন চিত্রই দেখা গেলো সাভারে পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে।
সাভারে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কীট জীবপ্রযুক্তি বিভাগে সকাল থেকেই ছিলো তোড়জোড়। কারণ মন্ত্রী আসছেন। অবশ্য তার আগেই সাংবাদিকদের ছবিতোলা, নানা রকম প্রশ্ন আর কৌতুহলের জবাবে ব্যস্ত বিজ্ঞানীরা।
ঘুরে ফিরে বিজ্ঞানীদের একটাই জবাব, ডেঙ্গু বিস্তারকারী এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের একটি কার্যকরী পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন তারা। বিষয়টি জেনে উদ্ভাবিত পদ্ধতি নিয়ে ‘অত্যন্ত সন্তোষ’ প্রকাশ করে পদ্ধতিটি শিগগির মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন মন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার প্রদান করা হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, আমরা আমাদের সামর্থ্য দিয়ে এগিয়ে এসেছি। ডেঙ্গু নিয়ে বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন। আশা করি, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের ভূমিকা সরকারের জন্যে সহায়ক হবে।
ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শেখ মাহফুজা মোমেন জানান, এসআইটি পদ্ধতিতে পুরুষ জাতীয় এডিস মশাকে গামা রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে বন্ধ্যাকরণ করা হয়। সেই মশা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন এলাকায় অবমুক্ত করা হলে সেখানে থাকা স্ত্রী এডিস মশার সঙ্গে মিলিত হবে। তবে পুরুষ মশা বন্ধা হওয়ায় স্ত্রী জাতীয় এডিস মশা যে ডিম/লার্ভা নির্গত করে তা থেকে এডিস মশার বংশবিস্তার হবে না। সেই ডিম/লার্ভা নিষিক্ত না হওয়ায় মশার প্রজনন না হলে স্বাভাবিকভাবেই মশার উৎপাদন হ্রাস পাবে।
খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. কাজলা সেহেলি জানান, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পদ্ধতি। তিনি জানান, ডেঙ্গু নিরসনে স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক (এসআইটি) পদ্ধতির প্রায়োগিক বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। এই কার্যক্রমকে মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং কার্যক্রমটি গতিশীল করাটাই এখন জরুরি।
পদ্ধতিটি পরিবেশ বান্ধব বলে পরিবেশে এর কোন বিরূপ প্রভাব নেই। এই পদ্ধতিতে শুধুমাত্র বন্ধ্যা পুরুষ মশাই প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে। যেহেতু পুরুষ মশা ডেঙ্গুর জীবাণু বহনে অক্ষম, তাই এর মাধ্যমে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটার কোন সম্ভাবনাই নেই। তদুপরি পুরুষ এডিস মশা মানুষকে কামড়ায় না। কাজেই কমিশনের এসআইটি পদ্ধতিটি দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর এই পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ সানোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ড.এম.আজিজুল হক, এনআইবির মহাপরিচালক ড. মোঃ সলিমুল্লাহ, এইআরই এর বিভিন্ন ইন্সটিটিউটের পরিচালকরা।
শেয়ার করুন