মা-বাবার হত্যাকারী ঐশীর মৃত্যুদণ্ড
রায় দেয়ার পর ঐশীকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হচ্ছে
মা-বাবাকে খুন করার দায়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসির
দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনার নৃশংসতা ও বর্তমান
সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তাকে সর্বোচ্চ
শাস্তি দেওয়া হলো বলে উল্লেখ করেছেন
বিচারক। পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর
স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার
ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ গতকাল
বৃহস্পতিবার জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা
করেন। রায়ে এই মামলার আসামি ঐশীর বন্ধু
আসাদুজ্জামান জনিকে বেকসুর খালাস এবং মিজানুর
রহমান জনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া
হয়েছে।
মা ও বাবাকে হত্যার দায়ে ঐশী রহমানকে
আলাদাভাবে ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয়। দুজনকে
হত্যার দায়ে তাকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা
হয়। জরিমানার টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে
আরো এক বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করতে
হবে বলে রায়ে বলা হয়।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, আসামি ঐশীর বিরুদ্ধে মা-
বাবাকে হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে
প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। এমন
নৃশংস ও জঘন্য হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া
উচিত। এ কারণে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
দেওয়া হলো। আসামির মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে
ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দণ্ড কার্যকর করারও নির্দেশ
দেওয়া হয় রায়ে। তবে ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪
ধারা মতে হাইকোর্টের অনুমোদনসাপেক্ষে
ফাঁসি কার্যকর করতে হবে বলে রায়ে উল্লেখ
করা হয়। এ জন্য মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে
নির্দেশ দেন আদালত।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামিপক্ষ থেকে দাবি করা হয়,
ঘটনার সময় ঐশী শিশু ছিল। কিন্তু মামলার কাগজপত্র
ও ঐশীর জন্ম-সংক্রান্ত কাগজপত্র পর্যালোচনা
করে ট্রাইব্যুনালের কাছে মনে হয়েছে,
ঐশী ঘটনার সময়ও সাবালক ছিল, এখনো সাবালক।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে আরো বলেন,
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি ঐশী ইচ্ছা করলে এই
রায়ের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-
এর ১৪ ধারা অনুযায়ী রায় ঘোষণার ৩০ দিনের
মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবে। এ
জন্য রায়ের অবিকল সত্যায়িত অনুলিপি দাবি করলে
আসামিকে দেওয়ারও নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
একই সঙ্গে রায়ের অনুলিপি ঢাকার চিফ
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ঢাকার
জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে পরবর্তী কার্যক্রম
গ্রহণের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, আসামি আসাদুজ্জামান জনি
প্রধান আসামি ঐশীর বন্ধু। মা-বাবাকে হত্যার জন্য
ঐশীকে এই আসামি সহযোগিতা করেছে বলে
অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে আনীত
অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে তাকে
বেকসুর খালাস দেওয়া হলো। অন্য কোনো
মামলা না থাকলে তাকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ
দেওয়া হয়। ঐশীর অন্য বন্ধু মিজানুর রহমান রনির
বিরুদ্ধে ঘটনার পর ঐশীকে আশ্রয় দেওয়ার
অভিযোগ আনা হয়। এই অভিযোগ
সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় তাকে দুই
বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। একই
সঙ্গে রনিকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে আরো এক
মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে
হাজতবাস শাস্তির মেয়াদ থেকে বাদ যাবে।
আইনজীবীরা জানান, মিজানুর রহমান রনি দুই বছর
ধরে কারাগারে আছে। সে এখন মুক্তি পাবে।
ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ : রায় ঘোষণার সময়
ট্রাইব্যুনাল বলেন, ঐশী অল্প বয়স্ক। বর্তমানে
দেশে শিশু নির্যাতনের হার বেড়ে গেছে। ঠিক
এই মুহূর্তে এমন একটি মেয়ের বিরুদ্ধে হত্যা
মামলার রায় দেওয়া কষ্টকর। তবু নৃশংসতম যে
হত্যাকাণ্ড তার বিচার তো করতে হবে।
ট্রাইব্যুনাল বলেন, আসামিপক্ষ থেকে দাবি করা হয়,
ঘটনার সময় ঐশী শিশু ছিল। কিন্তু মামলার কাগজপত্র
পর্যালোচনা, ঐশীর জন্ম-সংক্রান্ত কাগজপত্র
পর্যালোচনা করে ট্রাইব্যুনালের কাছে মনে
হয়েছে, ঐশী ঘটনার সময়ও সাবালক ছিল, এখনো
সাবালক।
ট্রাইব্যুনাল আরো বলেন, ঐশীর
আইনজীবীরা দাবি করেন, ঐশী মাদকাসক্ত ছিল।
ঘটনার দিন মাদকাসক্ত হয়ে মাতাল অবস্থায় ছিল। এই
অবস্থায় যদি খুনও করে থাকে তবে এটি
শাস্তিযোগ্য হবে না। কারণ তার কোনো হিতাহিত
জ্ঞান ছিল না। ট্রাইব্যুনাল বলেন, 'আমি মনে করি,
যদি অন্য কেউ মদ পান করিয়ে তাকে দিয়ে খুন
করাত তাহলে হয়তো সে জ্ঞাতসারে হত্যা
করেনি বলে ধরে নেওয়া যেত। কিন্তু এ
ক্ষেত্রে তা ঘটেনি। নিজে মাদকাসক্ত হয়ে
অপরাধ করলে তার শাস্তি তাকে পেতে হবে।'
রায়ে বলা হয়, ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করে মা-বাবাকে
হত্যা করেছে ঐশী। কারণ বেশ সময় নিয়ে
কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে
দুজনকে হত্যা করা হয়। প্রথমে মাকে পরিকল্পনা
অনুযায়ী খুন করা হয়। আগে বাবাকে খুনের
পরিকল্পনা ছিল না। পরে মাকে খুন করে বাঁচতে
পারবে না বলে বাবাকে খুন করে। বাবাকে খুন
করার আগেই বেশ সময় ধরে চিন্তা করে খুনটি
করা হয়। এরপর গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে খুনের
আলামত রক্ত ও রক্তমাখা জামাকাপড় ধুয়ে পরিষ্কার
করে এরপর বাসা থেকে নির্বিঘ্নে বেরিয়ে
যাওয়া প্রমাণ করে-মা-বাবাকে পরিকল্পনা করেই খুন
করা হয়েছে। এ কারণে ৩০২ ধারায় সর্বোচ্চ
শাস্তি দেওয়া হলো।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, বর্তমানে সামাজিক
প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা হয়েছে। এ সময় এমন
একটি নৃশংস, জঘন্য ও হৃদয়বিদারক ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তি না হলে বখাটে ও মাদকাসক্ত
ছেলেমেয়েরা উৎসাহিত হবে। তাদের নিরুৎসাহিত
করতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করাই বাঞ্ছনীয় বলে
ট্রাইব্যুনাল মনে করেন।
ট্রাইব্যুনাল রায়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার
সমালোচনা করেন। এতে বলা হয়, ঐশী
স্বেচ্ছায় থানায় আত্মসমর্পণ করে বলে নথি
পর্যালোচনায় দেখা যায়। সেখানে বাবা-মাকে
হত্যার কথা স্বীকার করে। এর পরও তাকে
রিমান্ডে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
দিতে বাধ্য করা হয়েছে, যা ঠিক হয়নি। এ জন্য
তদন্ত ত্রুটিপূর্ণ হয়।
দুইবার ফাঁসি : ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেন, একজনকে
খুন করা একটি অপরাধ। ঐশী তার মা-বাবাকে খুন
করেছে, দুটি অপরাধ করেছে। মাকে খুন করার
জন্য মৃত্যুদণ্ড ও বাবাকে খুন করার জন্যও একই
শাস্তি তার পাওনা। এ কারণে পৃথকভাবে ফাঁসির নির্দেশ
দেওয়া হলো। উচ্চ আদালতের অনুমোদন
সাপেক্ষে যেকোনো একটি কার্যকর হলেই
চলবে।
ঘটনার বিবরণ : ২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর
চামেলীবাগে নিজেদের বাসা থেকে পুলিশের
বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তাঁর
স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা
হয়। পরদিন গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে রমনা থানায়
আত্মসমর্পণ করে ঐশী। ঐশী জানায়, সে তার
মা-বাবাকে খুন করেছে। তার দুই বন্ধু জনি ও রনি
তাকে সাহায্য করেছে।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর দিন নিহত মাহফুজুর রহমানের
ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায়
একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি ওই সময় আলোচনার ঝড় তোলে। পরে
ঐশী ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে জবানবন্দি দিয়ে মা-বাবাকে খুন করার কথা
স্বীকার করেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, রাতে
কফিতে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় মা-
বাবাকে। তাঁরা অচেতন হয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে
কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ দুটি টেনে
বাথরুমে নিয়ে রাখা হয়। এ সময় সুমির সহযোগিতা
নেওয়া হয়। সকালে ছোট ভাই ওহী রহমান ও
গৃহকর্মী সুমিকে নিয়ে বাসা থেকে পালায় ঐশী।
সকালে পত্রিকায় মা-বাবার লাশ উদ্ধারের খবর পড়ে
রমনা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে সে। তবে
বিচার চলাকালীন স্বীকারোক্তি জোর করে
নেওয়া হয়েছে বলে সে আদালতকে জানায়।
তার দাবি, মা-বাবা যখন খুন হন তখন সে বাসায় ছিল না।
কারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তাও সে জানে না।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ ডিবির পরিদর্শক মো. আবু
আল খায়ের মাতুব্বর এই মামলায় ঐশীসহ চারজনের
বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন আদালতে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্যগ্রহণের মাঝপথে চার্জশিটে
ত্রুটি ধরা পড়ে। পরে গত বছরের ১৮
সেপ্টেম্বর সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
এ অভিযোগপত্রে নতুন করে ঐশীসহ
চারজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
গ্রহণকারী হাকিম এবং সুরতহাল প্রতিবেদনে
উল্লিখিত দুজনসহ সাতজনকে সাক্ষী হিসেবে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথমবার দাখিল করা
অভিযোগপত্রের আটজন সাক্ষীকে বাদ দেওয়া
হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়
গত বছরের ৩০ নভেম্বর।
ট্রাইব্যুনালের পরিবেশ : গতকাল রায় শুনতে
ট্রাইব্যুনালকক্ষে ভিড় করে বিপুলসংখ্যক
আইনজীবী, সংবাদকর্মী, সাধারণ মানুষ। রায়
ঘোষণার আগে ঐশী ও রনিকে ট্রাইব্যুনালে
হাজির করা হয়। অন্য আসামি জনি জামিনে থেকে
হাজির ছিলেন। ঐশী রায়ের আগে কিছুটা বিচলিত
থাকলেও রায় ঘোষণার পর একেবারে স্বাভাবিক
ছিল। তবে কারাগারে নেওয়ার সময় সে মুখ
ঢেকে রাখে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ট্রাইব্যুনালের
বিশেষ পিপি মো. মাহবুবুর রহমান। আসামি পক্ষে
ছিলেন মাহবুব হাসান রানা, চৌধুরী মো. গালিব
রাগিব প্রমুখ।
প্রতিক্রিয়া : রায় ঘোষণার পর পিপি মাহবুবুর রহমান
কালের কণ্ঠকে বলেন, এই রায়ে তিনি সন্তুষ্ট।
ঘটনার পারিপার্শিকতা, আসামির স্বীকারোক্তি,
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামতের সঙ্গে ঐশীর
ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন, সাক্ষীদের সাক্ষ্য
পর্যালোচনা করে ট্রাইব্যুনাল সঠিক রায় দিয়েছেন,
যা দৃষ্টান্তমূলক। এ রায়ের ফলে ছেলেমেয়েরা
মাদকাসক্ত হতে নিরুৎসাহিত হবে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মাহবুব হাসান রানা
বলেন, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের 'ও'
লেভেলের ছাত্রী ঐশী। এত কম বয়স্ক
মেয়েকে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া ঠিক হয়নি। এ রায়ের
বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
গৃহকর্মীর বিচার চলছে : এদিকে এ মামলার অন্য
আসামি ঐশীদের বাসার শিশু গৃহকর্মী খাদিজা
আক্তার সুমির বিচার চলছে শিশু আদালতে। গত
বছরের ২০ মে সুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
করে তাকে জামিন দেন ঢাকার শিশু আদালত। গত
বছরের ১ জুন গাজীপুরের কিশোর সংশোধন
কেন্দ্র থেকে মা সালমা বেগমের জিম্মায়
জামিনে মুক্তি পায় সুমি।
ঐশীকে দেখতে চান না তার নানি : আমাদের
রাজবাড়ী প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,
গতকাল সন্ধ্যায় রাজবাড়ী শহরের বিনোদপুর
কলেজপাড়ায় ঐশীর নানাবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়
বাড়িটি সুনসান। ওই বাড়িতে থাকা ঐশীর নানি সুফিয়া
বেগম বলেন, ঐশীর মা স্বপ্না রহমান ছিল তাঁর বড়
মেয়ে। ঐশী তার মা-বাবাকে হত্যা করে
পুলিশের হাতে ধরা দেওয়ার পর থেকেই
পুরোপুরি অসুস্থ হয়ে পড়েন সুফিয়া বেগম।
স্বপ্না খুন হওয়ার কয়েক বছর আগে তাঁর বাবা
আনিসুর রহমান মারা যান। আর স্বপ্নার একমাত্র ভাই
আনোয়ার হোসেন পলাশ হৃদরোগে আক্রান্ত
হয়ে এখন অনেকটাই শয্যাশায়ী। স্বপ্নার মৃত্যুর
পর ঢাকায় যাননি মা সুফিয়া। খোঁজ নেননি ঐশীর।
তবে স্বপ্নার একমাত্র ছেলে ওহি রহমানের
খোঁজ তিনি ঠিকই রাখেন। মাঝেমধ্যে ফোনেও
কথা বলেন। ওহি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে তার চাচা
মশিউর রহমানের কাছে থাকে।
সুফিয়া আরো বলেন, স্বপ্নার মৃত্যু তিনি এখনো
মেনে নিতে পারছেন না। এ কারণেই তিনি ঐশীর
খোঁজ নেননি। তিনি মনে করেন ঐশীকে
দেখলে তিনি আর ঠিক থাকতে পারবেন না।
আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তবে
তিনি কষ্ট পাচ্ছেন স্বপ্নার ছেলে ওহির জন্য। তিনি
মনে করেন, ঐশীর ফাঁসি কার্যকর হলে ওহি
পুরোপুরি একা হয়ে যাবে।
স্বপ্নার ছোট মামা মিজানুর রহমান বলেন, 'স্বপ্না ও
আমি ছিলাম কাছাকাছি বয়সী। ফলে আমার সঙ্গে ওর
ছিল সুসম্পর্ক। ছেলেবেলা থেকেই ও আমার
সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশত। আমি কোনোভাবেই
তার এ হত্যাকাণ্ড মেনে নিতে পারছি না।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐশীর এক মামি বলেন,
ঐশীরা যে ফ্ল্যাটে থাকত সে ফ্ল্যাটের জানালা
দিয়ে টুইন টাওয়ারে ডিসকো ক্লাবের সব কিছুই
দেখা যেত। ছোট্ট মেয়ে ঐশী ওই সব
দেখে নিজেকে ডিসকো ক্লাবের
মেয়েদের মতো গড়ে তুলতে গিয়ে বখে
যায়।
শেয়ার করুন