আপডেট :

        ব্যাংকের ভেতরে অচেতন হয়ে পড়ে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, করছিলেন বমি

        কোচ হতে চান মাহমুদ উল্লাহ-মুশফিক, জানান আমিনুল

        রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু হবে সোমবার

        লস এঞ্জেলেসে গোপন নাইটক্লাবে অভিযান, ৩৬ জন চীনা ও তাইওয়ানি নাগরিক আটক

        ক্যালিফোর্নিয়ার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড ফাইনালে ট্রান্সজেন্ডার অ্যাথলেটের জয়

        বাবা-মা হলেন তারকাজুটি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও পিয়া চক্রবর্তী

        চার বছর ধরে মায়ের ভুল কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন, পরিবারের মামলা

        নর্থ হলিউড মেট্রো স্টেশনের বাইরে ছুরিকাঘাত ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ৩ জন হাসপাতালে

        ব্যাল্ডউইন পার্কে বন্দুকধারীর গুলিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত, অপরজন হাসপাতালে

        মমতা বাংলাদেশিদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত খুলে রেখেছেন: অমিত শাহ

        ট্রাম্পের পররাষ্ট্র নীতিতে হতাশা বাড়ছে

        যুক্তরাজ্যের নাগরিকের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি রপ্তানির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

        শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ৮০০০ পাতার অভিযোগ

        ইরানকে পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র

        বিসিআই-এর আয়োজনে রিভারসাইড কাউন্টির পেরিস শহরে বাৎসরিক বৈশাখী মেলা ২০২৫

        পিএসজির ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ে প্যারিসে আনন্দের বন্যা

        প্রথমবারের অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘নজরুল রক কনসার্ট’

        আজ নয় আগামীকাল নতুন টাকা পাবেন গ্রাহকরা

        সিলেটে বিপৎসীমা ছাড়িয়ে গেছে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি

        ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তির প্রস্তাব

হাসন রাজার ১৬২তম জন্মদিন আজ

হাসন রাজার ১৬২তম জন্মদিন আজ

মরমি কবি হাসন রাজা ১৬২তম জন্মদিন আজ। হাসন রাজা একজন মরমী কবি এবং বাউল শিল্পী। বাংলার দর্শনচেতনার সঙ্গে সঙ্গীতের এক অসামান্য সংযোগ ঘটিয়েছে এই মরমী সাধনা।  অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে লালন শাহ্‌ এর প্রধান পথিকৃৎ। এর পাশাপাশি নাম করতে হয় ইবরাহীম তশ্না দুদ্দু শাহ্‌, পাঞ্জ শাহ্‌, পাগলা কানাই, রাধারমণ দত্ত, আরকুম শাহ্‌, শিতালং শাহ, জালাল খাঁ এবং আরো অনেকে। তবে দর্শনচেতনার নিরিখে লালনের পর যে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ নামটি আসে, তা হাসন রাজার।

দেওয়ান হাসন রাজার জন্ম ২১ ডিসেম্বর, ১৮৫৪। মৃত্যু ৬ ডিসেম্বর, ১৯২২। আর বাংলা সনের হিসাবে জন্ম  ৭ পৌষ, ১২৬১। মৃত্যু ২২ অগ্রহায়ণ, ১৩২৯। সুনামগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী সুরমা নদীর তীরে তেঘরিয়া গ্রামেই জন্ম।

হাসন দেখতে সুদর্শন ছিলেন। বহু লোকের মধ্যে চোখে পড়ার মতো। উঁচু দেহ, দীর্ঘভূজ ধারাল নাসিকা, জ্যোতির্ময় চোখ এবং একমাথা কবিচুল। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করেননি। তবে স্বশিক্ষিত। তিনি সহজ-সরল সুরে আঞ্চলিক ভাষায় প্রায় সহস্রাধিক গান রচনা করেন।

‘মাটিরও পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়া রে কান্দে হাসন রাজার মনমুনিয়া রে’ আবার ‘লোকে বলে বলেরে ঘর-বাড়ি ভালা নাই আমার- কি ঘর বানাইমু আমি শূণ্যেরও মাঝার’, আবার ‘আমি না লইলাম আল্লাজির নাম না কইলাম তার কাম- বৃথা কাজে হাসন রাজায় দিন গুজাইলাম’ আবার ‘সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা বানাইলো সোনা বন্ধে আমারে পাগল করিল- আরে না জানি কি মন্ত্র করি জাদু করিল’ এই গানগুলোই হাসন রাজাকে চিনিয়ে দেয় আমাদের। সুনামগঞ্জের মরমি গীতিকার বিত্তশালী পরিবারের সন্তান ছিলেন। যৌবন ছিল মৌজ-ফুর্তিতে ভরপুর। বিলাসবহুল সৌখিন জীবনে অভ্যস্ত হাসন আসক্ত ছিলেন নারীসঙ্গে। অবশ্য পরিনত বয়সে পৌঁছে আমূল বদলে গেলেন হাসন। তা এতটাই মানুষের মনের ঘৃণার স্থলটি জয় করে নিলেন ভালবাসায়।

হঠাৎ করেই আধ্যাত্মিকতায় পেয়ে বসে হাসন রাজাকে। আমূল বদলে যান হাসন রাজা। বদলে যায় তার জীবন দর্শন। বিলাস প্রিয় জীবন তিনি ছেড়ে দিলেন। নিজের ভুল ত্রুটি শুধরাতে শুরু করলেন। রাজসিক পোশাক-আশাক ছেড়ে দিলেন। শুধু বর্হিজগত নয়, তার অন্তর্জগতেও এলো বিরাট পরিবর্তন। বিষয়-আশয়ের প্রতি তিনি নিরাসক্ত হয়ে উঠলেন। মনের মধ্যে এলো এক ধরনের উদাসীনতা। বৈরাগ্য। সাধারণ মানুষের খোঁজ-খবর নেয়া হয়ে উঠলো তার প্রতিদিনের কাজ। আর সকল কাজের উপর ছিল গান রচনা। তিনি আল্লাহ্র প্রেমে মগ্ন হলেন। তার সকল ধ্যান ধারণা গান হয়ে প্রকাশ পেতে লাগলো। আধ্যাত্মিকতায় তিনি পুরোদস্তুরই নিমজ্জিত হলেন। জীব-হত্যা ছেড়ে দিলেন। কেবল মানব সেবা নয়, জীব সেবাতেও তিনি নিজেকে নিয়োজিত করলেন। এই হাসন যেন আগের হাসনের পুরোপুরিই বিপরীত।

হাসন রাজা মুখে মুখে গান রচনা করতেন, আর তার সহচরবৃন্দ কী নায়েব-গোমস্তা সে সব লিখে রাখতেন। তার স্বভাবকবিত্বে এসব গানে জন্ম নিত। হাসন রাজার গানে অনেক উজ্জ্বল পংক্তি, মনোহর উপমা-চিত্রকল্পের সাক্ষাৎ মেলে। তার কিছু গান, বিশেষ করে লোকে বলে, বলেরে, ঘরবাড়ি ভালা নাই আমার, মাটির পিঞ্জিরার মাঝে বন্দী হইয়ারে, আঁখি মুঞ্জিয়া দেখ রূপরে, সোনা বন্ধে আমারে দেওয়ানা বানাইল, মরণ কথা স্মরণ হইল না হাসন রাজা তোর, আমি যাইমুরে যাইমু আল্লার সঙ্গে, কানাই তুমি খেইর খেলাও কেনে, একদিন তোর হইব রে মরন রে হাসন রাজা- সমাদৃত ও লোকপ্রিয় শুধু নয়, সঙ্গীত-সাহিত্যের মর্যাদাও লাভ করেছে।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত