আপডেট :

        হিট অ্যান্ড রান দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

        সিডিসির নতুন পরিচালক হিসেবে সুসান মনারেজের নিয়োগ চূড়ান্ত

        যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত কোটি মানুষ, ঘরে থাকার পরামর্শ

        জাতিসংঘে সরব বাংলাদেশ ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে

        আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের স্থানে নির্মাণ হচ্ছে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ টাওয়ার

        ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বাস খাদে পড়ে চালকের মৃত্যু, আহত ১০

        ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরের উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি: ক্রিসেন্ট সিটিতে সর্বোচ্চ ঝুঁকি

        চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতি, তবে শুল্ক চুক্তি ট্রাম্পের সম্মতির ওপর নির্ভর

        বিতর্কের মধ্যেই ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী বোভকে ফেডারেল আপিল আদালতের আজীবন বিচারক নিয়োগ

        রাশিয়ার কাছে ৮.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প: জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রে সুনামি সতর্কতা

        ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে ছোট বিমান বিধ্বস্ত: তিনজন নিহত

        চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত

        মিনিবাইকারদের অবরোধ, স্টান্ট, ও বিশৃঙ্খলা—অভিনেতার মুখে ঘুষি!

        স্টুডিও সিটিতে সড়কে বসে থাকা নারীকে গাড়িচাপা, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু

        লস এঞ্জেলেস কাউন্টি: পুলিশ পরিচয় গোপনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ

        বাড়ি থেকে ৩৮টি অবহেলিত কুকুর উদ্ধার, মালিকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা

        নিউ ইয়র্কে প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণকারী ছিলেন সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার স্কুলের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়

        ১৩ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল প্রতারণা মামলায় ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির দোষ স্বীকার

        উৎসব’ এখন আপনার হাতের মুঠোয়, ঘরে বসেই দেখুন!

        টি-২০ ক্রিকেটে ইতিহাস: মহেশ তাম্বের ৮ বলে ৫ উইকেটের বিশ্ব রেকর্ড!

ভয়াবহ পানি সংকটে তিস্তা : নিজেদের সুবিধা মতো পানি দিচ্ছে ভারত

ভয়াবহ পানি সংকটে তিস্তা : নিজেদের সুবিধা মতো পানি দিচ্ছে ভারত

তিস্তা এবার ভয়াবহ পানি সংকটে পড়েছে। পানি স্বল্পতার কারণে রংপুর ও দিনাজপুর জেলাকে সেচ সুবিধা থেকে বাদ রেখে সেচ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে এই দুই জেলায় ৫৭ হাজার হেক্টর জমি সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, এবার তিস্তার পানি দিয়ে সেচ দেওয়া সম্ভব নয়। চলতি বোরো মৌসুমে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের সেচ দিতে হবে। গত রোববার থেকে চলতি খরিপ-১ মৌসুমে (বোরো) দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের মাধ্যমে সেচ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।  সপ্তাহদুয়েক আগেও  এখানে পানি প্রবাহ ছিল আড়াই হাজার কিউসেক। গত সোমবার ছিল মাত্র ৭০০ কিউসেক। ফলে তিস্তা নদী এখন ধু-ধু বালুচরে পরিণত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে বোরো মৌসুমে নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৬৫ হাজার হেক্টরে সেচ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। কিন্তু সেচ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে তা আরো কমে এসে  সেচ দেওয়া  হয় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার মাত্র ৮ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানে লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।  দিনাজপুর ও রংপুরের ৫৭ হাজার হেক্টর জমি সেচ কার্যক্রম থেকে বাদ দিয়ে শুধু নীলফামারী জেলার ডিমলা, জলঢাকা, নীলফামারী সদর ও কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে সেচের আওতায় রাখা হয়েছে।

এর মধ্যে নীলফামারী সদরে ৮০০ হেক্টর, ডিমলা উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ২০০ হেক্টর। তবে উজানের প্রবাহ পাওয়া গেলে সেচের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র  ।

তিস্তা ব্যারেজ সেচ প্রকল্পের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাফিউল বারী জানান, চলতি রবি ও খরিপ-১ মৌসুমে শুরুতে সেচ দেওয়া হয়েছে জলঢাকা উপজেলার হরিশচন্দ্র পাট এলাকায়। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সেচ প্রদানের চেষ্টা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘উজানের প্রবাহ দিন দিন কমে আসায় তিস্তা নদীর পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারেজের কমান্ড এলাকায় স¤পূরক সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষকদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবার সেচ দিতে হবে।

তিনি আরো জানান, শুষ্ক মৌসুমে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড পরিমাণ কমছে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের সেচ প্রকল্পের জন্য ১০ হাজার কিউসেক পানি প্রয়োজন। কিন্তু সেচের জন্য পাওয়া যাচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ কিউসেক। আগামীতে পানি  প্রবাহের  পরিমাণ আরো কমবে।

ডালিয়া ব্যারেজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পানি স্বল্পতার কারণে রংপুর-দিনাজপুরে সেচ দেওয়া আপাতত সম্ভব  হচ্ছে না । তবে পানির প্রবাহ বাড়লে সেচ কমিটি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেচের আওতা বাড়াতে পারে।

সূত্রমতে, ভারত তার ৬৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাস¤পন্ন জলবিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমির সেচের চাহিদা মিটিয়ে যে পরিমাণ পানি ছাড়ে, তা দিয়ে বোরো মৌসুমে আমাদের সেচ চাহিদার অর্ধেকও পূরণ করা যায় না। ১৯৯৭ সালে বাংলদেশে শুষ্ক মৌসুমে তিস্তায় পানির প্রবাহ ছিল প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কিউসেক। তা ২০০৬ সালে নেমে আসে ১ হাজার ৩৪৮ কিউসেকে এবং ২০১৬ সালে পানির প্রবাহ এসে দাঁড়ায় মাত্র ৭০০ কিউসেকে।

১৯৯৩-৯৪ শস্যবছর থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি উপজেলায় ব্যাপকভাবে আউশ ও আমন উৎপাদনের মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে তিস্তার পানি দিয়ে সেচ কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ২০০৬-০৭ শস্যবছর থেকে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে বোরো মৌসুমেও সেচ কার্যক্রম প্রসারিত করা হয়। আমন মৌসুমে মোট সেচযোগ্য ৭৯ হাজার ৩৭৯ হেক্টর এলাকার প্রায় স¤পূর্ণটাই সেচের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বোরোর ক্ষেত্রে পানির দুষ্প্র্রাপ্যতায় সেচ-সাফল্যের চিত্র একেবারেই হতাশাজনক।

শুকনো সময়ে যে সামান্য পরিমাণ পানি ভারতের প্রত্যাহারের পর তিস্তা নদীতে পাওয়া যায়, তার সবটুকুই সেচ চাহিদা মেটানোর লক্ষে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের সেচ খালের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এর দরুণ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা ব্যারেজের পর থেকে ৯৭ কিলোমিটার বিস্তৃত তিস্তা নদীতে এক কিউসেক পানিও থাকছে না। এ কারণে তিস্তা অববাহিকার বাংলাদেশ অংশের এই বিশাল পরিমাণ নদীগর্ভ পরিণত হচ্ছে বালুচরে।


এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত