সরকারের ঋণ ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে কোনো ঋণ গ্রহণ করেনি। বরং ৩ হাজার ৪৭ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে। তবে জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প খাত হতে নিট ১০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করেছে। যেখান থেকে মোট ৮ হাজার ৭০১ কোটি টাকা প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবের দায় পরিশোধিত হয়েছে । ফলে ব্যাংক বহির্ভূত উৎস হতে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা।
জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে রবিবার (২৯ জানুয়ারি) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের বাজেটের অগ্রগতি ও আয়-ব্যয় সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরেছেন।
বাজেট ২০১৬-১৭ : প্রথম প্রান্তিক (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন শীর্ষক সরকারি দলিল রবিবার সংসদে উপস্থাপিত হয়েছে।
সার্বিকভাবে সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনা বেশ সন্তোষজনক বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
পাশাপাশি, মুদ্রা ও ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে খেলাপী ঋণের হার কমিয়ে আনার কারণে বাজারে সুদের হারের এই নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি মনে করি।’
তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিখাতে অর্থনৈতিক কর্মতৎপরতা উজ্জীবিত হওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৫.৩ শতাংশ। অর্থবছর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১৬.৫ শতাংশ। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, বিগত অর্থবছরে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৬.৮ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রান্তিক বাজেট বাস্তবায়নের চিত্রে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে এবং উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমেছে রেমিট্যান্স। গত অর্থবছরের প্রান্তিক বাজেটের তুলনায় এবারের জুলাই- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত খাদ্য -বহির্ভুত মূল্যস্ফীতি পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশে উন্নিত হয়েছে। অপরদিকে, রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ কমেছে, যার পরিমাণ ৭০ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।
এদিকে জনজীবনে স্বস্তি বজায় রাখতে মূল্যস্ফীতিকে সহনীয় পর্যায়ে রেখেছি উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘খাদ্য বহির্ভুত মূল্যস্ফীতি বাড়লেও মূলত খাদ্য মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বর ২০১৫ সময়ের ৬.২৫ শতাংশ থেকে সেপ্টেম্বর ২০১৬ সময়ে ৪.৫৬ শতাংশে নেমে এসেছে।’ সন্তোষজনক কৃষি উৎপাদন, আর্ন্তজাতিক বাজারে জ্বালানী তেলের স্থিতিশীল মূল্য, অনুকূল মুদ্রা সরবরাহ পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে দেশব্যাপী পণ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বিধায় সামনের দিনেও মূল্যস্ফীতি বাড়বে না বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন