আপডেট :

        ডাকাতি করতে গিয়ে নিজেই বিপদে, রেসলারের হাতে মার খেয়ে গ্রেপ্তার

        হোয়াইট হাউসের ইস্ট উইং ভেঙে নতুন বলরুম নির্মাণের ঘোষণা ট্রাম্পের

        প্রশান্ত মহাসাগরে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌযানে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় হামলা, নিহত ৩

        লস এঞ্জেলেসে অভিবাসন অভিযানে গুলিবিদ্ধ টিকটক নির্মাতা ও মার্কিন মার্শাল

        দীপিকা-রণবীরের বেবি দুয়া: মায়ের চোখ নিয়ে ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে ছবি

        সরকারে দলীয় কেউ থাকলে সরিয়ে দিতে হবে: রিজভী

        গ্রিন টি না কি লাল চা, কোনটিতে উপকার বেশি

        থাইল্যান্ড সীমান্তে স্টারলিংকের অবৈধ ব্যবহার: মিয়ানমার স্ক্যাম সেন্টারের নতুন শক্তি।

        নিউইয়র্কের পেন স্টেশনে নবজাতক ফেলে যাওয়া মা গ্রেপ্তার

        অভিষেকে ৫ উইকেট ‘বুড়ো’ আফ্রিদির

        উবার ও লিফট চালকদের জন্য বাধ্যতামূলক ইউনিয়ন আলোচনার আইন পাশ করলো ক্যালিফোর্নিয়া

        যমুনায় এনসিপির সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ: ছাত্র-নাগরিক দলের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা

        দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় সাবেক প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে দম্পতির কারাদণ্ড

        ভয়াবহ ফ্রিওয়ে দুর্ঘটনায় অন্তত ৩ জন নিহত, ট্রাক চালক মাদকাসক্ত অবস্থায় গ্রেপ্তার

        পুতিনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করল হোয়াইট হাউস, ‘সময় নষ্ট’ করতে চান না ট্রাম্প

        ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস বলরুম নির্মাণে কে দিচ্ছেন অর্থ? ঘিরে রহস্য ও বিতর্ক

        পুতিনের সঙ্গে বৈঠক স্থগিত করল হোয়াইট হাউস

        অশোভন বার্তা ফাঁসের পর ট্রাম্পের মনোনীত প্রার্থী পল ইঙ্গ্রাসিয়ার পদত্যাগ

        এইচ-১বি ভিসাধারী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রাখলো ওয়ালমার্ট

        ম্যাকগাইভার এখন কোথায়?

প্রত্যাবাসন শুরুর আগেই রোহিঙ্গা ঠেকাতে তৎপর রাখাইনের উগ্র বৌদ্ধরা

প্রত্যাবাসন শুরুর আগেই রোহিঙ্গা ঠেকাতে তৎপর রাখাইনের উগ্র বৌদ্ধরা

মিয়ানমারের জাতিগত নিধন থেকে বাঁচতে গত বছরের আগস্ট থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এলেও এখনও ফেরত পাঠানো যায়নি একজনকেও। ঢাকা-নেপিডো চুক্তি সম্পন্ন হলেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনও শুরু হয়নি। কেউ ফিরে যাওয়ার আগেই সেখানকার রাখাইন জনগোষ্ঠীর উগ্রবাদী অংশ এর বিরোধিতা শুরু করেছে। মংডু জেলার ছয়টি স্থানে ফেরত নেওয়া রোহিঙ্গাদের বসতি স্থাপনের সিদ্ধান্তে সহিংসতার আশঙ্কা জানিয়েছে তারা। অরিগনভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ইউরোএশিয়ারিভিউ জানিয়েছে, ওই সম্প্রদায়ের পক্ষে একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল মিয়ানমার সরকারকে এরইমধ্যে তাদের আপত্তির জায়গাগুলো জানিয়েছে। রাখাইন প্রতিনিধিরা অবশ্য দাবি করছেন, তারা প্রত্যাবাসনের বিরোধী নয়, কেবল যথাযথ যাচাই-বাছাই নিশ্চিত করার পক্ষে।

পালিয়ে আসার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইনের মংডু জেলার ছয়টি স্থানে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার। এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে অবস্থান জানাতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানী সিত্তেতে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে এক বৈঠকে বসে রাখাইন সম্প্রদায়ের ৮০ জন নাগরিক প্রতিনিধি।

গত বছরের ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সমস্ত পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল। অতীতের ধারাবাহিকতায় স্থানীয়দের রোহিঙ্গাবিদ্বেষী করে তুলতে সেখানে সেনা-প্রচারণা হয়েছে এবারের নিধনযজ্ঞেও। মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকারের পক্ষ থেকে বারবার স্থানীয়দের রোহিঙ্গা-বিদ্বেষী মনোভাবের কথা সামনে আনার চেষ্টা করা হয়। তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে সমাজের অভ্যন্তরে সেনাবাহিনীর ছড়িয়ে দেওয়া বিদ্বেষকেই রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের কারণ হিসেবে শনাক্ত করেছে।

বৈঠকে রাখাইনদের নাগরিক প্রতিনিধি সোয়ে নাইং বলেছেন, ওই এলাকায় ১৯৪০-এর দশক থেকেই রোহিঙ্গাদের সঙ্গে স্থানীয়দের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ইউরোএশিয়া রিভিউকে তিনি বলেন, ‘স্থানীয় রাখাইন জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সেখানে পুনর্বাসিত করা হলে দুই সম্প্রদায়ের একত্রে বসবাস করা অসম্ভব।’ তিনি বলেন, ওই এলাকাটি উপকূলে অবস্থিত। সে কারণে সেখানে দেওয়াল নির্মাণ সম্ভব নয়। আর তাই বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে। সোয়ে নাইং বলেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে ফেরত আসা প্রত্যেককেই সরকার খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় নিশ্চিত করুক। কারণ, তাদের মধ্যে অনেক যোদ্ধা রয়ে গেছে। ফলে আমরা সার্বভৌমত্ব নিয়ে শঙ্কিত।’

বিদ্বেষী প্রচারণার মধ্য দিয়ে রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেখানকার রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষের ঘৃণার চাষাবাদ হয়েছে দীর্ঘদিন। বিদ্বেষের শেকড় তাই দিনকে দিন আরও শক্ত হয়েছে। মিয়ানমারের অধিবাসী হলেও রোহিঙ্গাদেরকে বেশিরভাগ রাখাইন বৌদ্ধ বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী বিবেচনা করে। সরকারের সঙ্গের বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব ও অন্যান্য অধিকারের দাবির পেছনে রাখাইনের ভূমি দখলের অন্য রাজনৈতিক এজেন্ডা থাকার অজুহাত তোলেন জাও উইন। দাবি করেন, জাতিগত রাখাইনদের নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের রাখাইনের ভূমি দখলের রাজনৈতিক এজেন্ডায় মিয়ানমার শঙ্কিত।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে শেষ থেকে মিয়ানমার সরকার ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কমপক্ষে ৪৫৫টি গ্রামের সব অবকাঠামো ও ফসলের ক্ষেত ধ্বংস করে দিয়েছে। এসব গ্রামের বেশিরভাগই ২৫ আগস্টের পর সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ৩৬২ গ্রামের মধ্যে ছিল। সম্প্রতি রাখাইন রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে ১৫ মিলিয়ন ডলারের অনুমোদন দিয়েছে মিয়ানমারের সংসদ। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড এডামস ২৩ ফেব্রুয়ারি বলেন, বুলডোজার ব্যবহার করে রোহিঙ্গা বসবাসের স্মৃতি ও আইনগতভাবে সেখানে কারা বসবাস করতো তার পরিচয় মুছে ফেলার হুমকি তৈরি করেছে মিয়ানমার।


এলএবাংলাটাইমস/আই/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত