এশিয়ান কাপ ফুটসাল বাছাই: জি গ্রুপে ইরানের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ছদ্মবেশ: রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার নতুন হাতিয়ার
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের অগ্রগতি মানবসভ্যতার জন্য যেমন আশীর্বাদ বয়ে এনেছে, তেমনি এটি নতুন ধরনের সংকটও তৈরি করছে। সাম্প্রতিক সময়ে এআই ব্যবহার করে তৈরি ভিডিও, অডিও এবং নানা ধরনের কনটেন্ট এতটাই বাস্তবসম্মত হয়ে উঠেছে যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই প্রযুক্তির অপব্যবহার বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে মারাত্মক উত্তাপ সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। সামনে নির্বাচন থাকায় এই শঙ্কা আরও প্রকট হচ্ছে।
এআই প্রযুক্তির সাহায্যে এখন সহজেই কোনো রাজনীতিবিদের মিথ্যা বক্তব্য বা ভুয়া ঘটনা তৈরি করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া যায়। এসব কনটেন্ট দেখে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছেন, যা সামাজিক বিভেদ ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশে, যেখানে ডিজিটাল লিটারেসির হার তুলনামূলকভাবে কম, সেখানে এআই-জেনারেটেড কনটেন্টের প্রভাব আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। বিরোধী দল বা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো, ভুয়া সাক্ষাৎকার তৈরি করা বা বানোয়াট স্ক্যান্ডাল ছড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাগুলো নির্বাচনী পরিবেশকে বিষিয়ে তুলতে পারে।
সমস্যা হলো, অনেক সময় এসব ভুয়া কনটেন্ট এত সুক্ষ্মভাবে তৈরি করা হয় যে, সাধারণ ব্যবহারকারীরা সহজেই প্রতারিত হচ্ছেন। এমনকি যারা প্রযুক্তি সম্পর্কে কিছুটা জানেন, তারাও কখনো কখনো ধোঁকা খাচ্ছেন। ফেসবুক, টুইটার বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে এই ধরনের কনটেন্ট দ্রুত ভাইরাল হয়, যা সামাজিক বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে তোলে। কিছু মানুষ বিষয়টি বুঝতে পারলেও অনেকেই এগুলো সত্য বলে ধরে নিচ্ছেন এবং অজান্তেই মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
এই সংকট মোকাবিলায় সচেতনতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কোনো কনটেন্ট দেখেই তাৎক্ষণিকভাবে তা বিশ্বাস করা উচিত নয়। সোর্স যাচাই, ফ্যাক্ট-চেকিং ওয়েবসাইট ব্যবহার এবং প্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যম থেকে তথ্য নিশ্চিত করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এআই-জেনারেটেড কনটেন্ট শনাক্ত করার জন্য টুলস ও প্রশিক্ষণের প্রসার ঘটানোও জরুরি। পাশাপাশি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও রিকোয়েস্ট করা উচিত ভুয়া কনটেন্ট দ্রুত শনাক্ত করে তা সরিয়ে ফেলা।
এআই প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনকে সহজ করছে, তেমনি এর অপব্যবহার রোধে সতর্ক থাকাও জরুরি। বিশেষ করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এই প্রযুক্তির নেতিবাচক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সচেতনতা, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা এবং নীতিনির্ধারকদের সমন্বিত উদ্যোগই পারে এআই-জনিত বিভ্রান্তি থেকে সমাজকে রক্ষা করতে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন