নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন
যুক্তরাষ্ট্রের আসছে নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে রিপাবলিকান পার্টি। উইসকনসিনের মিলওয়াকি শহরে রিপাবলিকান দলের জাতীয় কনভেনশন থেকে ১৫ জুলাই ট্রাম্পের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়। ডেলিকেট গণনায় রিপাবলিকান দলের মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পরপরই ট্রাম্প তাঁর রানিং মেট হিসেবে ওহাইও অঙ্গরাজ্যের সিনেটর জেডি ভ্যান্সের নাম ঘোষণা করেন।
মাত্র ৩৯ বছর বয়সের জে ডি ভ্যান্স একসময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের কট্টর সমালোচক ছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে ক্যাপিটল হিলের ঘটনার পর ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেন তিনি। গত শনিবার পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলারে নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে হামলাকারী। গুলি ট্রাম্পের কানের ওপরের অংশে ফুটো করে চলে যায়।
পরবর্তী দিন রোববারই সম্মেলনে অংশ নিতে মিলাওয়াকিতে পৌঁছান তিনি। এর আগেই তাঁর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হামলা সত্ত্বেও দলের জাতীয় সম্মেলন নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী এগিয়ে চলবে। এবারের সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেন দলটির বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা (ডেলিগেট)। রিপাবলিকান পার্টির ২ হাজার ৩৮৭ জন প্রতিনিধি তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
মিলওয়াকি সম্মেলন কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে একের এক নেতাদের বক্তৃতা শুরু হয় সোমবারের উদ্বোধন পর্ব থেকেই। প্রথম দিনেই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প কোন বক্তৃতা না দিলেও সম্মেলন কেন্দ্রে উপস্থিত হয়েছিলেন। ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় ট্রাম্পকে দেখে উল্লসিত রিপাবলিকান সমর্থকদের মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে দেখা যায়। মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন স্লোগানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা উঁচিয়ে উল্লাস করছিলেন নেতা কর্মীরা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনি তহবিলে ধনকুবের ইলন মাস্ক মাসে ৪৫ মিলিয়ন ডলার দিবেন বলে সম্মেলনের প্রথম দিনেই ঘোষণা করা হয়েছে।
জে ডি ভেন্সের মতো তরুণ নেতাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে রানিং মেট করার মধ্য দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার রিপাবলিকান রাজনীতিতে তরুণদের উত্থানের পথ উন্মুক্ত করেছেন। যুব তরুণ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তার বিবেচনা ছাড়াও রিপাবলিকানদের জন্য সুদূর সুদূর প্রসারী ভাবনা থেকেই ভেন্সকে রানিং মেট হিসেবে নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রক্ষণশীল আমেরিকানদের পছন্দের এ তরুণ নেতা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পরের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করতে পারবেন শক্ত অবস্থান থেকে। বয়সের কারণেই এবারে নির্বাচিত হওয়ার পর ট্রাম্প আবার নির্বাচন করার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
ডেমোক্র্যাটদের জন্য শুধু আসছে নির্বাচনই নয়, আগামী দিনের দীর্ঘ সময় কঠিন হয়ে উঠছে। এবারের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ডেমোক্র্যাট দলের কোনো জাতীয় নেতার উত্থান হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরে দাঁড়ালেও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সাথে কাকে রানিং মেট করে নির্বাচনে অন্তত শক্ত লড়াই করা সম্ভব হবে , তা এ মুহূর্তেও স্পষ্ট নয়। আমেরিকার সর্বত্রই এখন আলোচনা হচ্ছে, অনেকের অপছন্দের হলেও ট্রাম্প এবং ভ্যান্সই যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট। অবশ্য এ নিয়ে চূড়ান্ত কথা বলার জন্য নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন