বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
১৫ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রে ফায়ারিং স্কোয়াডে প্রথম মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হচ্ছে
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলিনার একজন কয়েদি ব্র্যাড সিগমনকে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। ৬৭ বছর বয়সী সিগমন তার সাবেক প্রেমিকার বাবা-মাকে বেসবল ব্যাট দিয়ে হত্যা এবং প্রেমিকাকে অপহরণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। আগামী শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৬টায় (গ্রিনিচ মান সময় ২৩:০০) তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অপরাধ ও মামলার বিবরণ
২০০১ সালে সিগমন তার সাবেক প্রেমিকার বাবা-মা ডেভিড ও গ্লাডিস লার্কেকে তাদের নিজ বাড়িতে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেন। এরপর তিনি বন্দুকের মুখে প্রেমিকাকে অপহরণ করেন, যদিও সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তদন্তকারীদের কাছে সিগমন স্বীকারোক্তি দেন, "আমি যদি তাকে না পাই, তবে আর কাউকে তাকে পেতে দেব না।"
মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি
সিগমনকে একটি চেয়ারে বেঁধে রাখা হবে, যার নিচে একটি বেসিন রাখা থাকবে রক্ত সংগ্রহের জন্য। তার বুকে একটি লক্ষ্যবিন্দু চিহ্নিত করা হবে এবং মাথায় ব্যাগ পরানো হবে। পর্দার আড়ালে থাকা তিনজন স্বেচ্ছাসেবী বন্দুকধারী ১৫ ফুট দূর থেকে তার বুকে বিশেষ ধরনের গুলি ছুঁড়বে। এই গুলিগুলো আঘাতের সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে গিয়ে শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে।
গুলির পর একজন চিকিৎসক তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। সাক্ষীদের বুলেটপ্রুফ কাঁচের পেছন থেকে মৃত্যুদণ্ড প্রত্যক্ষ করার অনুমতি থাকলেও, ফায়ারিং স্কোয়াডের সদস্যদের পরিচয় গোপন রাখা হবে।
মৃত্যুদণ্ডের কারণ
সিগমনকে ইলেকট্রিক চেয়ার, লেথাল ইনজেকশন অথবা ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি লেথাল ইনজেকশনের কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ফায়ারিং স্কোয়াডকে বেছে নেন।
সাউথ ক্যারোলিনা ২০২৩ সালে একটি আইন পাস করে, যেখানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা সংশ্লিষ্ট দলের পরিচয় গোপন রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়।
আইনি বিতর্ক
সাউথ ক্যারোলিনা ২০২২ সালে ৫৪,০০০ ডলার ব্যয়ে ফায়ারিং স্কোয়াডের জন্য বিশেষ চেম্বার নির্মাণ করে। তবে রাজ্যটি এখনও মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে গোপনীয়তার কারণে সমালোচনার মুখে রয়েছে।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (ACLU) চলতি বছরের জানুয়ারিতে এই গোপনীয়তা আইন চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেছে। তারা দাবি করেছে, এই আইন জনগণের তথ্য জানার অধিকারকে সীমিত করে এবং মৃত্যুদণ্ডের কার্যকারিতা, নৈতিকতা ও বৈধতা নিয়ে আলোচনা বন্ধ করে দেয়।
চূড়ান্ত আপিল
সিগমনের আইনজীবীরা ২০০২ সালের তার আইনি প্রতিনিধিত্বের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং লেথাল ইনজেকশনে ব্যবহৃত ওষুধ সম্পর্কে আরও জানার সময় চেয়েছিলেন। তবে সাউথ ক্যারোলিনা সুপ্রিম কোর্ট এই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।
বিরল দণ্ডপ্রদান
যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৭৬ সালে মৃত্যুদণ্ড পুনর্বহালের পর মাত্র তিনজনকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সিগমন হবেন চতুর্থ ব্যক্তি এবং ২০১০ সালের পর প্রথম যাকে এই পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।
সাউথ ক্যারোলিনার কোনো গভর্নর ১৯৭৬ সালের পর থেকে কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ক্ষমা করেননি বলে জানিয়েছে ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টার।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন