রিপাবলিকানদের নাটকীয় জয়: ট্রাম্পের বাজেট বিলের ফ্রেমওয়ার্ক অনুমোদন
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
প্রবল টানাপোড়েনের পর মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে রিপাবলিকানরা বৃহস্পতিবার ২১৬-২১৪ ভোটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহু আলোচিত বাজেট ফ্রেমওয়ার্ক অনুমোদন করেছে। স্পিকার মাইক জনসনের নেতৃত্বে রিপাবলিকানরা রাতভর আলোচনার মাধ্যমে দলীয় বিদ্রোহীদের রাজি করাতে সক্ষম হন।
বিলটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ নামে পরিচিত, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সুরক্ষা সহ বহু ফেডারেল খাতে প্রায় ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব রয়েছে। একইসঙ্গে এতে রয়েছে নতুন কর ছাড় এবং সামরিক খাতে বড় অংকের বরাদ্দ।
স্পিকার জনসন জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর পাঁচ মিনিটের ফোনালাপে ট্রাম্প বিলটি দ্রুত পাসের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ট্রাম্প পরে সামাজিক মাধ্যমে লিখেন, "সবকিছুই দারুণভাবে এগোচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কর ছাড় আসছে!"
এই বিলটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এতে রয়েছে কর ছাড়, ব্যাপক অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন, এবং কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় সংকোচনের পরিকল্পনা। যদিও চূড়ান্ত বিল পাসে এখনো কয়েক সপ্তাহ বা মাস সময় লাগতে পারে।
তবে বুধবার পর্যন্ত অন্তত ডজনখানেক কনজারভেটিভ রিপাবলিকান এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছিলেন। অনেকে সরাসরি সিনেট নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরও গভীর কাটছাঁটের দাবি জানিয়ে। শেষে রাতভর আলোচনার মাধ্যমে স্পিকার জনসন ও তার টিম বিদ্রোহীদের রাজি করাতে সক্ষম হন।
তবে বিলটির বিরোধিতা করছেন ডেমোক্র্যাটরা। হাউস ডেমোক্র্যাট নেতা হাকিম জেফরিস বলেন, “এই বাজেট পরিকল্পনা বেপরোয়া ও নিষ্ঠুর। এটি ধনীদের কর ছাড় দিতে গিয়ে সাধারণ আমেরিকানদের অধিকার কেটে দিচ্ছে।”
বিলটির মূল লক্ষ্য ২০১৭ সালের কর ছাড় অক্ষুন্ন রাখা এবং নতুন কিছু কর ছাড় যুক্ত করা, যার মধ্যে রয়েছে টিপসহ আয়, সামাজিক নিরাপত্তার আয়— এসবের উপর কর বাতিল। এসব পরিবর্তনের ফলে পরবর্তী দশকে ব্যয় বেড়ে প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে।
ডিফেন্স খাতে বাড়তি ১৭৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে, পাশাপাশি ট্রাম্পের প্রস্তাবিত অভিবাসী বিতাড়ন কর্মসূচির জন্যও সমপরিমাণ বাজেট রাখা হয়েছে। তবে এসব খরচ মেটাতে স্বাস্থ্যসহ ঘরোয়া অনেক খাতে কাটছাঁট প্রস্তাব করা হয়েছে, যা নিয়ে রিপাবলিকান দলের মধ্যেও মতবিরোধ রয়েছে।
সিনেটের রক্ষণশীল সদস্যদের কেউ কেউ যেমন কেন্টাকির সেনেটর র্যান্ড পল, এই প্রস্তাবের অঙ্ক নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে মেইনের সেনেটর সুসান কলিন্স মেডিকেইড কাটছাঁট নিয়ে আপত্তি তুলেছেন।
এই বিলটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে দেশের ঋণসীমা বাড়ানোর প্রস্তাবও। হাউসের প্রস্তাবে ৪ ট্রিলিয়ন ডলার এবং সিনেটের প্রস্তাবে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণসীমা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে, যাতে করে ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে বিষয়টি নিয়ে আর ভোটাভুটি করতে না হয়।
এই বাজেট ফ্রেমওয়ার্ক এখন হাউস ও সিনেটের চূড়ান্ত আলোচনার দিকে যাচ্ছে, যেখানে পার্থক্যগুলো মেটাতে হবে। চূড়ান্ত ভোট হতে পারে গ্রীষ্মের মধ্যভাগে। তবে ট্রাম্প ও জনসনের নেতৃত্বে রিপাবলিকানরা এই বিলটিকে পাস করাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন