বয়স ও স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্নের মাঝেই শারীরিক পরীক্ষায় যাচ্ছেন ট্রাম্প
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার তার বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন। ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন—যা তাকে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বয়সে শপথ নেওয়া প্রেসিডেন্টে পরিণত করেছে।
ট্রাম্প নিজেই তার সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আমি নিজেকে আগের চেয়ে ভালো অনুভব করছি, তবে তবুও এসব কাজ তো করতেই হয়!”
স্বচ্ছতার অভাবে সমালোচিত ট্রাম্প
যদিও ট্রাম্প তার পূর্বসূরি জো বাইডেনের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি নিজেই তার স্বাস্থ্যের তথ্য আড়ালে রেখেছেন বহুবার। মার্কিন প্রেসিডেন্টদের স্বাস্থ্য বিষয়ে যে স্বচ্ছতা প্রত্যাশিত, ট্রাম্প তা অনেক সময়ই উপেক্ষা করেছেন।
এবারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এটি হবে গত জুলাইয়ে পেনসিলভানিয়ার বাটলারে তার উপর হওয়া হত্যাচেষ্টার পর তার স্বাস্থ্য নিয়ে প্রথম প্রকাশ্য তথ্য।
সে সময় তিনি কোনো মেডিকেল রিপোর্ট না প্রকাশ করে বরং রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ও সাবেক হোয়াইট হাউস চিকিৎসক রনি জ্যাকসনের লেখা একটি বিবরণ প্রকাশ করেন। সেখানে বলা হয়েছিল, ট্রাম্পের ডান কানে গুলির আঘাত লেগেছে।
“২০০ বছর বাঁচতে পারতেন” ডা. রনি জ্যাকসন একবার ট্রাম্পের স্বাস্থ্য নিয়ে রসিকতা করে বলেছিলেন, “ওনার খাদ্যাভ্যাস ভালো হলে ২০০ বছর বাঁচতে পারতেন!”
২০২৩ সালের নভেম্বরে ডা. ব্রুস এ. অ্যারনওয়াল্ড একটি চিঠিতে বলেছিলেন, ট্রাম্প “চমৎকার শারীরিক ও মানসিক অবস্থায়” আছেন। তবে সেই চিঠিতে ওজন, রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল সম্পর্কিত কোনো তথ্য ছিল না—শুধু বলা হয়েছিল, ট্রাম্প তার ওজন কমিয়েছেন এবং কগনিটিভ পরীক্ষায় চমৎকার ফল করেছেন।
করোনা থেকে সুস্থ হলেও গোপন রেখেছিলেন বিস্তারিত
২০২০ সালে করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর ট্রাম্প ওয়াল্টার রিড হাসপাতালে ভর্তি হন। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে তার অবস্থা ভালো বলা হলেও পরবর্তীতে জানা যায়, তার অবস্থা ছিল উদ্বেগজনক।
তিনি সেই সময়ও কোনো সরাসরি প্রেস ব্রিফিং না করে ফক্স নিউজে একটি রেকর্ড করা “চিকিৎসা সাক্ষাৎকার” দিয়েছিলেন, যেখানে তার চিকিৎসক ছিলেন ফক্সের নিজস্ব বিশ্লেষক ডা. মার্ক সিগেল—যিনি এক সময় হিলারি ক্লিনটনের স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন।
পূর্বের ঘটনা: গোপনে শারীরিক পরীক্ষা
২০১৯ সালের নভেম্বরে ট্রাম্পের হঠাৎ ওয়াল্টার রিড সফরও জনসম্মুখে ঘোষণা করা হয়নি। তিন দিন পর তিনি বলেছিলেন, এটি ছিল “রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা”। পরে হোয়াইট হাউস জানিয়েছিল, এটি ছিল একটি “পরিকল্পিত অস্থায়ী চেকআপ”, যেটি সময়সূচির কারণে গোপন রাখা হয়েছিল।
ভাইরাল স্মৃতিশক্তির প্রদর্শন
২০২০ সালের জুলাইয়ে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প তার মানসিক সক্ষমতা প্রমাণ করতে গিয়ে বলেছিলেন,
“Person. Woman. Man. Camera. TV”
এই পাঁচটি শব্দ মনে রাখা এবং পুনরাবৃত্তি করাই নাকি তার কগনিটিভ দক্ষতার প্রমাণ!
কীভাবে হবে এবারের রিপোর্ট?
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এবারও হয়তো অতীতের মতোই একটি সংক্ষিপ্ত এবং ইতিবাচক স্বাস্থ্য রিপোর্ট প্রকাশ পাবে, যেখানে প্রকৃত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য থাকবে না। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই হবে তার স্বাস্থ্য নিয়ে জনসাধারণের প্রথম তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন