ধর্মীয় উপাসনালয়ে অভিবাসন অভিযান চালাতে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায়
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত ধর্মীয় উপাসনালয়ে অভিবাসন অভিযান চালাতে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছেন। শুক্রবার ওয়াশিংটনের ইউএস ডিস্ট্রিক্ট জজ ড্যাবনি ফ্রেডরিখ ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর দায়ের করা মামলায় প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞার আবেদন নাকচ করে দেন।
ক্রিশ্চান ও ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্বকারী দুই ডজনের বেশি সংগঠন মামলাটি দায়ের করেছিল। তবে বিচারক বলেন, এ মামলায় বাদীপক্ষের ‘স্ট্যান্ডিং’ বা আইনি অবস্থান নেই, কারণ শুধুমাত্র অল্পসংখ্যক অভিবাসন অভিযানই গির্জা বা অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ের আশেপাশে ঘটেছে, এবং বর্তমানে প্রমাণ নেই যে উপাসনালয়গুলোকে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী কেলসি কর্করান বলেন, “আমরা এই রায় পর্যালোচনা করছি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ বিবেচনা করছি। আমরা সংবিধানের প্রথম সংশোধনী ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা আইনে রক্ষিত মৌলিক অধিকারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।”
ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলো দাবি করে, এই নীতিমালা তাদের ধর্ম পালন করার অধিকারে হস্তক্ষেপ করছে। তারা জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে গির্জায় উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
তবে বিচারক বলেন, উপাসনালয় কেন্দ্রিক নীতির কারণে এই হ্রাস হয়েছে, এমন সরাসরি প্রমাণ বাদীপক্ষ দেখাতে পারেনি। বরং অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থার (ICE) সামগ্রিক তৎপরতাই এই ভীতির মূল কারণ বলে মনে করছেন তিনি।
বিচারক ফ্রেডরিখ, যিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নিয়োগপ্রাপ্ত, রায়ে লেখেন, “প্রমাণগুলো দেখায়, উপাসনালয় নয়, বরং আশপাশের এলাকায় ICE অভিযানের আশঙ্কায় অভিবাসীরা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।”
২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি, ট্রাম্প পুনরায় ক্ষমতায় এসে অভিবাসী গ্রেপ্তারে ‘সুরক্ষিত এলাকা’ নীতিমালার অবসান ঘটান। তার প্রশাসন জানায়, এখন থেকে অভিবাসন কর্মকর্তারা “সাধারণ বোধ” ও “বিবেচনার” ভিত্তিতে উপাসনালয়ে অভিযান চালাতে পারবেন—সুপারভাইজারের অনুমতি ছাড়াই।
বাদীপক্ষ আদালতে কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করে, যেমন: জর্জিয়ার এক গির্জা থেকে এক অভিবাসীকে গ্রেপ্তার এবং আরেকটি গির্জার ডে-কেয়ারে ICE তল্লাশি। তারা আরও জানায়, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আশপাশে নজরদারি চালানোর কয়েকটি উদাহরণ রয়েছে।
এদিকে, দেশের অন্যান্য আদালতেও ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে মামলা চলছে। বৃহস্পতিবার, আরেক বিচারক অবৈধ অভিবাসীদের জন্য নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার অনুমতি দেন, যদিও সুপ্রিম কোর্ট এক ব্যক্তিকে ভুলবশত এল সালভাদরে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় তাকে ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে।
এই ‘সংবেদনশীল এলাকা নীতির’ বিরুদ্ধে আরও অন্তত দুটি মামলা হয়েছে। মেরিল্যান্ডের এক বিচারক কোয়াকার ধর্মাবলম্বীদের জন্য অভিবাসন অভিযান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। তবে কলোরাডোর এক বিচারক স্কুলে অভিবাসন গ্রেপ্তার সীমিতকরণ নীতির বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।
তবে বাদীপক্ষ মূল মামলাটি চালিয়ে যেতে পারবে বলে জানানো হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন