ফেসবুকে বেআইনি ড্রাইভার অ্যাকাউন্ট বেচাকেনা, ঝুঁকিতে নিরাপত্তা
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
ফেসবুকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ব্যাকগ্রাউন্ড চেক এড়িয়ে Uber, DoorDash-এর মতো রাইড-শেয়ার ও ডেলিভারি সেবার ড্রাইভার অ্যাকাউন্ট ভাড়া বা বিক্রির হিড়িক পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা Tech Transparency Project (TTP)-এর নতুন এক রিপোর্টে এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ফেসবুকে অন্তত ৮০টি গ্রুপে প্রায় ৮ লক্ষ সদস্য রয়েছে, যারা এসব অ্যাকাউন্ট কেনাবেচা করে থাকে। এসব অ্যাকাউন্টে যারা চড়ছেন বা যাদের বাড়িতে ডেলিভারি যাচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
একটি উদাহরণ হিসেবে TTP জানায়, চলতি বছরের ৩ জানুয়ারির একটি পোস্টে দেখা গেছে—মাত্র ৬৫ ডলারে Uber Eats অ্যাকাউন্ট ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ বিক্রেতাই ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে বলছে, যাতে লেনদেনগুলো জনসম্মুখে না আসে।
Facebook-এর মূল প্রতিষ্ঠান Meta বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রয়েছে বলে জানিয়েছে। তারা Fortune-কে জানায়, এই ধরনের কনটেন্ট তাদের নীতিমালার লঙ্ঘন এবং তা তারা খতিয়ে দেখছে। নিয়ম ভাঙা কনটেন্ট সরিয়ে ফেলা হবে।
TTP বলছে, এসব গ্রুপের নাম এতটাই স্পষ্ট যে কনটেন্ট মডারেশনের ঘাটতি চোখে পড়ছে। যেমন: “Doordash & Uber Account For Rent And Sell Group” নামের গ্রুপও ফেসবুকে সক্রিয় ছিল।
TTP-র মতে, “Meta সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তারা কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ছাড় দেবে, তবে এখনও তাদের স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমে বেআইনি কার্যকলাপ, বিশেষ করে প্রতারণা, ঠেকানোর কথা। কিন্তু বাস্তবতা বলছে—এটা কার্যকর হচ্ছে না।”
Uber ও DoorDash-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে ড্রাইভার হতে হলে বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স, ইনস্যুরেন্স ও পেছনের রেকর্ড যাচাই (ব্যাকগ্রাউন্ড চেক) করতে হয়। তাদের নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে—ড্রাইভার অ্যাকাউন্ট শেয়ার করা যাবে না।
এটাই প্রথম নয়—এর আগেও TTP অভিযোগ করেছিল যে, ফেসবুকে নকল পরিচয়পত্র (ID), পাসপোর্ট এবং Social Security কার্ডের মতো ব্যক্তিগত তথ্য কেনাবেচা হচ্ছে। সেই সময় Meta কিছু অ্যাকাউন্ট মুছে দেয়। এমনকি ২০২৪ সালে Instagram ও Facebook-এ প্রকাশিত প্রায় ৪৫০টি বিজ্ঞাপনে অবৈধ ওষুধ ও মাদক বিক্রির তথ্যও তারা তুলে ধরেছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের কালোবাজারি বন্ধ করতে Facebook-কে আরও কঠোর হতে হবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, না হলে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও পরিচয় চুরির ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলবে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন