আনাহাইমে কার ওয়াশ ও হোম ডিপোতে অভিবাসন অভিযান, আটক একাধিক ব্যক্তি
গত এক বছরে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে: যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার পরিস্থিতি “খারাপ” হয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এই বৈশ্বিক মানবাধিকার পর্যালোচনায় যুক্তরাজ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর বিধিনিষেধ এবং ইহুদিবিদ্বেষ থেকে প্রণোদিত সহিংসতার হুমকিকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সসহ হোয়াইট হাউসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পূর্ববর্তী মন্তব্যের সঙ্গেও এই সমালোচনা মিলে যায়।
ব্রিটিশ সরকার এক বিবৃতিতে জানায়, “গণতন্ত্রের জন্য মুক্ত মতপ্রকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমরা গর্বিত যে যুক্তরাজ্যে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্বাধীনতা রক্ষা করা হয়।”
প্রতিবেদনে ফ্রান্স ও জার্মানিতেও মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্যে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বক্তব্যকে “বিদ্বেষপূর্ণ” বা “আপত্তিকর” মনে করে তা সীমিত করার বিষয়টি উদ্বেগজনক। গত বছরের সাউথপোর্ট হামলার পর সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা “সরকারি সেন্সরের গুরুতর উদাহরণ” হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে ১৮ বছর বয়সী অ্যাক্সেল রুদাকুবানা টেলর সুইফটের নাচের ক্লাসে তিন কিশোরীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। পরের দিন শহরে এক শান্তিপূর্ণ শোকসভা হয়, তবে অনলাইনে রুদাকুবানা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ে, যা সহিংস বিক্ষোভে রূপ নেয়। গুজবে বলা হয়, তিনি ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে আসা একজন আশ্রয়প্রার্থী। দাঙ্গার পর যারা এসব মিথ্যা দাবি ছড়িয়েছে বা প্রতিশোধের আহ্বান জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টার্মার ঘোষণা দেন, দায়ীদের “আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির” মুখোমুখি করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা বারবার বক্তব্য দমন করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, অনলাইন বিধিনিষেধ রাজনৈতিক বা ধর্মীয় কারণে “অপছন্দের কণ্ঠস্বর”কে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তাঁর ভাষায়, “কারও বক্তব্য যতই অপছন্দনীয় হোক না কেন, তাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা বা জোর করে চুপ করানো কেবল আরও ঘৃণা, দমন ও বিভাজনকে উসকে দেয়।”
প্রতিবেদনে গর্ভপাত কেন্দ্রগুলোর বাইরে প্রতিবাদ নিষিদ্ধ করা ‘বাফার জোন’ আইন এবং স্থানীয় পরিষদ কর্তৃক ব্যবহৃত ‘পাবলিক স্পেসেস প্রোটেকশন অর্ডার’ সম্পর্কেও সমালোচনা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর স্কটল্যান্ডে ২০০ মিটার বাফার জোন কার্যকর হয়। এক মাস পর ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ১৫০ মিটার বাফার জোন চালু হয়। সেসময় সুরক্ষামন্ত্রী জেস ফিলিপস বলেন, “মানুষের আইনি অধিকার অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের পথে হয়রানি, নির্যাতন বা ভয়ভীতি বরদাশত করা হবে না।”
এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডের বোর্নমাউথে এক নারী গর্ভপাত ক্লিনিকের বাইরে “কথা বলতে চাইলে আমি এখানে আছি” লেখা সাইন হাতে দাঁড়ানোর জন্য দোষী সাব্যস্ত হন। লিভিয়া টসিসি-বোল্ট নামের ওই নারীর মামলাটি ভাইস-প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাধিকার ব্যুরো বিশেষভাবে উল্লেখ করে। ব্যুরো জানায়, রায়টি “হতাশাজনক” এবং “মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবার জন্য সুরক্ষিত থাকতে হবে।”
তবে প্রতিবেদনে ইতিবাচক দিকও উল্লেখ করা হয়েছে—যেমন সরকার কার্যকরভাবে সমিতি গঠনের স্বাধীনতা, যৌথ দর-কষাকষি এবং শ্রমিকদের ধর্মঘট বা অন্যান্য শিল্প আন্দোলনে অংশগ্রহণের অধিকার রক্ষা করেছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন