হ্যালোউইন ঘিরে আইএস-প্রভাবিত সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা: মিশিগানে দুই ব্যক্তি অভিযুক্ত
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যে হ্যালোউইন সপ্তাহান্তে ব্যাপক গুলিবর্ষণের পরিকল্পনা করার অভিযোগে দুই ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদ-সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন।
ফেডারেল প্রসিকিউটরদের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তরা হলেন মোহামেদ আলি এবং মাজেদ মাহমুদ। তারা ডেট্রয়েট শহরতলির এক এলাকায় হামলার সম্ভাব্য স্থান পর্যবেক্ষণ করেন এবং অনলাইনে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন।
আদালতের নথিতে উল্লেখ আছে, তৃতীয় এক অভিযুক্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি। প্রসিকিউশন জানায়, তারা সেমি-অটোমেটিক অস্ত্র, ১,৬০০ রাউন্ডের বেশি গুলি ক্রয় করেন এবং শুটিং রেঞ্জে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন।
তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে সোমবার ডেট্রয়েটে হাজিরা দেওয়ার কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি এক বিবৃতিতে বলেন, “এটি একটি বড় ধরনের আইএস-সংযুক্ত সন্ত্রাসী ষড়যন্ত্র।”
বন্ডি আরও জানান, “অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তদের কাছে একাধিক এআর-১৫ রাইফেল, কৌশলগত সামগ্রী এবং আমেরিকার মাটিতে হামলা চালানোর বিস্তারিত পরিকল্পনা ছিল।”
তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে তারা জানত বা যুক্তিসঙ্গতভাবে বিশ্বাস করেছিল—এই অস্ত্রগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হবে।
মার্কিন বিচার বিভাগ কর্তৃক দাখিল করা ৭৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে অভিযুক্তরা ফার্নডেল শহরতলির একটি এলাকা পরিদর্শন করেন, যেখানে বহু বার ও রেস্তোরাঁ রয়েছে।
আদালতের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “এই এলাকার বহু ক্লাব ও বার ইচ্ছাকৃতভাবে LGBTQ+ সম্প্রদায়ের সদস্যদের আকৃষ্ট করে।”
ফেডারেল এজেন্টরা আলি ও মাহমুদের ঠিকানায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি, গোপ্রো ক্যামেরা ও ট্যাকটিকাল ভেস্ট উদ্ধার করে।
যদিও আদালতের নথিতে পাঁচজনের নাম উঠে এসেছে, তবে ফেডারেল প্রসিকিউটররা কেবল আলি ও মাহমুদের নাম প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা গত বছর থেকেই এই গ্রুপটির ওপর নজরদারি শুরু করে। আদালতের অনুমতিতে কর্মকর্তারা অভিযুক্তদের ফোন, এনক্রিপটেড চ্যাট এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নজর রাখেন। এক এফবিআই তথ্যদাতা অভিযুক্তদের সঙ্গে গ্রুপ কলে অংশ নেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দিনে তারা কথোপকথনে “পাম্পকিন” শব্দটি ব্যবহার করত, যা হ্যালোউইন দিবসকে নির্দেশ করত।
ফেডারেল প্রসিকিউটরদের ভাষ্য, “তারা বুঝতে পারছিল এই হামলায় তাদের মৃত্যু ও তথাকথিত ‘শহীদত্ব’ হতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রে হ্যালোউইনের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে কুমড়া (পাম্পকিন) খোদাই করা সাধারণ প্রথা।
আদালতের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আলি, মাহমুদ এবং অজ্ঞাত ওই কিশোর হোয়াটসঅ্যাপে পরিকল্পনা সাজায়। সরকারের হাতে থাকা মেসেজগুলোতে দেখা যায় তারা “তারিখ”, “ঘটনা” ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করছে এবং বলছে, “আমরা এটা করব” ও “আমাকে সত্যিই পাম্পকিন করতে হবে।”
বিবিসি জানিয়েছে, নতুন প্রকাশিত আদালতের নথি নিয়ে অভিযুক্ত আলির আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তবে সপ্তাহান্তে সিবিএসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আলির আইনজীবী আমির মাকলেদ এফবিআইয়ের অভিযান ও গ্রেপ্তারকে “অতিরঞ্জিত” বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “আমার মক্কেল কখনো কিছু পরিকল্পনা করেননি বা কোনো সম্প্রদায়ের সদস্যকে ক্ষতি করার ইচ্ছা পোষণ করেননি।”
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
								
 										
										নিজস্ব প্রতিবেদক									
 								
							
									
									
 
 
												
												
												
												
													
												
													
												
													
												
													
												
													
												
													
												
শেয়ার করুন