মার্কিন ভিসামুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের পাঁচ বছরের সোশ্যাল মিডিয়া ইতিহাস জমা দেওয়ার প্রস্তাব
মার্কিন বিচার বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশন ‘ধ্বংসের মুখে’—২০০’র বেশি সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
মার্কিন বিচার বিভাগের (U.S. Justice Department) ২০০ জনের বেশি সাবেক কর্মকর্তা মঙ্গলবার এক যৌথ খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেছেন যে বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশনকে ধ্বংস করা হচ্ছে, এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সংস্থাটির দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করেছে। বিভাগের প্রতিষ্ঠার ৬৮তম বার্ষিকীতে প্রকাশিত এই চিঠিতে তারা অভিযোগ করেন, অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হারমিট ঢিলন যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, পুলিশ নৃশংসতা এবং ভোটাধিকারের বৈষম্যের বিরুদ্ধে চলমান গুরুত্বপূর্ণ মামলা—সবই বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা আরও দাবি করেন, সিভিল রাইটস তদন্তের পদ্ধতিও পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে যাতে তদন্তকারীদের বলা হচ্ছে “প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে, সেভাবেই তথ্য খুঁজে বের করতে।”
চিঠিতে সাবেক কর্মকর্তারা লিখেছেন, “আমাদের বেশিরভাগই ২০২৪ সালের নির্বাচনের পরও বিভাগে থাকার পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু এই প্রশাসন যখন আমাদের দীর্ঘদিনের কাজ ধ্বংস করে দিল, তখন বাধ্য হয়েই আমাদের চলে যেতে হলো। এখন আমরা বাধ্য হয়ে সতর্কবার্তা দিচ্ছি যে বিচার বিভাগের একসময়ের সম্মানিত এই ইউনিট প্রায় ধ্বংসের মুখে।” সিভিল রাইটস ডিভিশনটি ১৯৫৭ সালের সিভিল রাইটস অ্যাক্টের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়, যার লক্ষ্য ছিল বৈষম্যমূলক জিম ক্রো আইন তুলে দেওয়া এবং কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের অধিকার সুরক্ষা করা।
অভিযোগের জবাবে বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র বলেন, বন্ডি ও ঢিলন বিভাগটিকে তার “মূল উদ্দেশ্যে”—সকল আমেরিকানের অধিকার রক্ষায়—ফিরিয়ে এনেছেন এবং প্রমাণ ছাড়াই বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেন, নির্বাচন সুরক্ষা, জটিল কনসেন্ট ডিক্রি বাতিল এবং ক্যাম্পাসে ইহুদিবিদ্বেষ ও বর্ণভিত্তিক ভর্তি নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে বিভাগটির রেকর্ড “ঐতিহাসিক।”
মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো এত বিপুল সংখ্যক সাবেক কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কথা বললেন। চিঠির অন্যতম সংগঠক রবিন বিটনার বলেন, তারা চান আমেরিকান জনগণ জানতে পারুক কী ঘটছে এবং তাদের সক্রিয় হোক। বিটনার, যিনি শিশুদের নাগরিক অধিকার সুরক্ষায় বিভিন্ন তদন্ত পরিচালনা করতেন, বলেন—“আমরা প্রথমে জনগণকেই জানাতে চাই, কারণ তাদের অধিকারই আমরা রক্ষা করতাম।”
সাবেক কর্মকর্তাদের দাবি, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ঢিলন বিভাগের ঐতিহ্যবাহী প্রয়োগ অগ্রাধিকারকে বদলে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের সঙ্গে একীভূত করেছেন। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে পুলিশি নৃশংসতা বা গণশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বর্ণগত পৃথকীকরণ রোধে থাকা বিভিন্ন কনসেন্ট ডিক্রি বাতিল করা হয়েছে। ঢিলন সম্প্রতি X-এ পোস্ট করে বলেন, “সিভিল রাইটস ডিভিশনে কনসেন্ট ডিক্রিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অবসান ঘটেছে আমার দায়িত্ব নেওয়ার পর।”
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে বিভাগটি তার প্রায় ৭৫% আইনজীবী হারিয়েছে, যা তাদের মতে একটি “সমন্বিত প্রচেষ্টা”—যাতে দক্ষ কর্মীদের বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়। সাবেক কর্মকর্তা রিগান রাশ বলেন, বিভাগের নতুন অগ্রাধিকার “নিরপেক্ষ নাগরিক অধিকার রক্ষা নয়, বরং স্পষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যনির্ভর।”
মার্কিন বিচার বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার ভেতরে চলমান অস্থিরতা ও পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার করুন