ব্যাংকের ভেতরে অচেতন হয়ে পড়ে ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, করছিলেন বমি
মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী ভারতীয় এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সদস্যদের সংবর্ধনা
একাত্তরের মিত্রবাহিনীর ভারতীয় এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নৌবাহিনীর সদস্যদের সংবর্ধনা দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ২৯জন এবং মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী চট্টগ্রাম বন্দরের ‘মাইন সুইপিংয়ে’ অংশ নেয়া সোভিয়েত ইউনিয়নের পাঁচজন সদস্যকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এ সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এ হান্নানসহ ভারতীয় হাইকমিশন, রাশিয়ান দূতাবাস, মুক্তিযুদ্ধ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভারত ও রাশিয়ার বন্ধুদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও রাশিয়ার অবদান ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’।ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, প্রায় এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়ে, খাবার দিয়ে, ট্রেনিং দিয়ে ভারত সহায়তা না করলে এত অল্প সময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারতো না। স্বাধীনতার কয়েক মাস পরই ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্যদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বন্ধুত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ভারত। আর রাশিয়ার সমর্থন আমাদের ন্যায্য অধিকারকে বিশ্বের দরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একাত্তরের বন্ধুদের বাংলাদেশ যথাযথ সম্মান করে । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ হওয়া ভারতীয় সেনাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় সম্মাননা প্রদান করা হবে’।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, ভারতীয় জনগণ ও ভারতীয় মিত্র বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যে সহায়তা করেছে তা বিশ্বে বিরল’।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জাতিসংঘে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভূমিকার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে যখন বাংলাদেশের বিজয় অবশ্যম্ভাবী তখন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র বিরতির প্রস্তাব তুললে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাতে ভেটো দেয়। চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন অপসারণ করে। এ সময় কয়েকজন সোভিয়েত সেনা নিহত হন। রক্তের বিনিময়ে ভারত, রাশিয়া আর বাংলাদেশের যে বন্ধন সৃষ্টি হয়েছে তা দৃঢ়তর হয়েছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, মিত্রবাহিনীর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেয়া ভারতের সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জি এস সিহতার নেতৃত্বে ভারতীয় এবং ভিক্তর কঝরিনের নেতৃত্বে রাশিয়ার নৌ সেনা মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসেছেন। পরে সকলে নৈশভোজে অংশ নেন।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন