বিতর্ক চর্চা তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে
জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট-২০১৭ এর লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানের অতিথি ড. মাহফুজুর রহমান, হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ, ব্যারিস্টার সুমাই
জাতীয় বির্তক প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা
গণতন্ত্র বিকাশে অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হয়। সেক্ষেত্রে বিতর্ক চর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, যা তরুণদের নেতৃত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাদের ভবিষ্যৎ জীবনে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। যুক্তিবিহীন সমাজ বা রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদেরকে ভুল পথে পরিচালিত করতে পারে। এক্ষেত্রে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে বিতর্ক চর্চা। বিতর্ক চর্চা পরমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়। উন্নয়নের সঠিক পথে অগ্রগামী হতে সহায়তা করে। তাই রাজনীতি, সমাজনীতি কিংবা পরিবেশের উন্নয়নে বিতর্ক চর্চার অবদান অনস্বীকার্য। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বছর ব্যাপী আয়োজিতব্য ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট-২০১৭ এর লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠ^ানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ এর চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি‘র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আম্বার গ্রুপ-এর পরিচালক ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব নওয়াজীশ আলী খান, এটিএন বাংলার সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান খান। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও এটিএন বাংলার যৌথ আয়োজনে এবছরের প্রতিযোগিতায় বাছাইয়ের মাধ্যমে ৩২টি বিশ^বিদ্যালয় অংশগ্রহন করার সুযোগ পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রধান উদ্দেশ্য হলো তরুণ প্রজন্মকে আগামীর নেতৃত্ব বিকাশে সহায়তা করা। তরুণ প্রজন্ম যারা আগামীর বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে তারা যেন বিশ্ব পরিমণ্ডলে বাংলাদেশকে সমুন্নত রাখতে পারে সেলক্ষ্যে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মত সৃজনশীল শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আজকের বিতার্কিকরাই আগামী দিনের পার্লামেন্টারিয়ান হবে। তারা বিতর্ক চর্চার মধ্য দিয়ে আগামীতে জাতীয় সংসদেও দেশের উন্নয়নের জন্য যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আগামী নভেম্বরে আন্তর্জাতিক বিতর্ক আয়োজনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের বিতার্কিকরা এ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় তাদের শাণিত মেধা ও নেতৃত্বের সাক্ষর রাখবে। তিনি ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্ট-২০১৭ এর আয়োজনের সাফল্য অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, প্রতিযোগিতাটি কোন রাজনীতিক দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠি বিরুদ্ধে নয়। এই প্রতিযোগিতায় গণতন্ত্রের ভবিষ্যত, ভোটের অধিকার, ন্যায্যতা ও ন্যায় বিচার, জঙ্গিবাদ, সুশাসন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা নিয়ে সমসাময়িক রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয় স্থান পাবে। বছরব্যাপি অনুষ্ঠিতব্য এ মক পার্লামেন্টের বিভিন্ন সেশনে সিনিয়র রাজনীতিবিদ, মন্ত্রী, এমপি, গবেষক-শিক্ষাবিদ, তরুণ নেতৃত্ব ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা অতিথি হিসেবে বিতার্কিকদের বক্তব্যের আলোকে তাদের মতামত প্রদান করবেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও আমাদের এ প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তরুণ প্রজন্মকে ভবিষ্যৎ জীবন গঠনে দিকনির্দেশনা দেবেন।
আম্বার গ্র“প-এর পরিচালক ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ বলেন, তরুণরা বিতর্কের মধ্য দিয়ে নতুন কিছু শিখবে, যৌক্তিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এবং তাদের চাকরি তথা কর্মজীবনেও সাফল্য বয়ে আনবে। আজকে যেসব তরুণরা বিপথগামী তারা এ ধরণের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সঠিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। তিনি মনে করেন, আমাদের তরুণরাই এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তারাই সারা বিশ্বে আমাদের লাল-সবুজের পতাকাকে তুলে ধরবে। তিনি বিতর্ক প্রতিযোগিতার মত সৃজনশীল কর্মকান্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবেন বলে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান এফডিসিতে বছর ব্যাপী এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন। নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে উদ্বোধনী প্রতিযোগিতায় সরকারী দল হিসেবে জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি এবং বিরোধী দল হিসেবে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি অংশ গ্রহণ করবে। প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ ও তৃতীয় স্থান অধিকারীসহ বিজয়ীদের নগদ অর্থ, ট্রফি, ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন