যৌন নিপীড়ন : ইবির সহকারী অধ্যাপক বরখাস্ত
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে কুষ্টিয়ার ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহকারী অধ্যাপককে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার নাম আসাদুজ্জামান। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।
শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফ ঢাকাটাইমসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ১০ এপ্রিল ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ওই ছাত্রী আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে আজ শনিবার জরুরি বৈঠক হয়। এতে আসাদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ওই ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন শিক্ষক আসাদুজ্জামান। দুই জনের মধ্যে কথোপকথনের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। কিন্তু এখন ওই শিক্ষক তাকে বিয়ে করতে চাইছেন না। এই অবস্থায় ওই তরুণী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক আসাদুজ্জামানের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ এলে এই সেল তা খতিয়ে দেখে। আসাদুজ্জামানের বিষয়টিও তারাই দেখছে।
ওই ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ওই সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নাসিম বানুকে আহ্বায়ক করে নয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষক আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। ২০১২ সালেও তার বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ উঠেছিল। তবে সে সময় তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সেটি নিশ্চিত করতে পারেননি ওই কর্মকর্তা।
সাইফুল ইসলাম (বামে) আবদুল হালিম প্রামাণিক (মাঝে) মীর মোশারেফ হোসেন (ডানে)
সাইফুল ইসলাম (বামে) আবদুল হালিম প্রামাণিক (মাঝে) মীর মোশারেফ হোসেন (ডানে)
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ নতুন নয়। গত ২৮ ডিসেম্বর এ ধরনের একটি অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমরান হোসাইনকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বরখাস্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই নাট্যকলা বিভাগের সে সময়ের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। পরের বছরের ৩০ জুন তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান আবদুল হালিম প্রামাণিক ওরফে সম্রাটকে বরখাস্ত করা হয় একই অভিযোগে।
২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল বরখাস্ত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেন (রাজীব মীর)।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
শেয়ার করুন