আপডেট :

        সিডনিতে হনুক্কা অনুষ্ঠানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ১৬; দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নিরাপত্তা জোরদার

        হলিউড পরিচালক রব রাইনার ও স্ত্রী মিশেল লস এঞ্জেলেসের বাড়িতে মৃত অবস্থায় উদ্ধার

        ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে গুলির ঘটনায় ‘পার্সন অব ইন্টারেস্ট’ আটক, জানিয়েছে পুলিশ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে উড়ে গেল বাড়ি, আহত ৬

        প্যানোরামা সিটিতে তিন গাড়ির সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ১

        ক্যালিফোর্নিয়ায় গ্রিন কার্ড আবেদনকারীকে সাক্ষাৎকারের সময় আটক করল আইসিই

        ক্যালিফোর্নিয়ার দাবানল: ভুক্তভোগীদের জন্য ৩৩.৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তায় ট্রাম্পকে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান নিউসমের

        অরেঞ্জ কাউন্টিতে বাইবেল স্টাডি নেতা গ্রেপ্তার: নাবালককে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ

        ক্যালিফোর্নিয়ায় ধর্মীয় গোষ্ঠীর নেতা ও শীর্ষ সদস্য গ্রেপ্তার: নিখোঁজ সদস্যের হত্যার অভিযোগ

        ট্রাম্পের চাপ উপেক্ষা করে ইন্ডিয়ানা রিপাবলিকানদের ভোটিং মানচিত্র বাতিল

        প্যাসিফিক নর্থওয়েস্টে বন্যা, হাজারো মানুষ সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি

        ক্যালিফোর্নিয়ায় অভিবাসীদের দেয়া ১৭ হাজার বাণিজ্যিক ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল

        মার্কিন ভিসামুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের পাঁচ বছরের সোশ্যাল মিডিয়া ইতিহাস জমা দেওয়ার প্রস্তাব

        ওয়ারেন কাউন্টির নারী ৪,২০০ ডলারের বেশি SNAP সুবিধা আত্মসাতের অভিযোগে গ্রেপ্তার

        মার্কিন বিচার বিভাগের সিভিল রাইটস ডিভিশন ‘ধ্বংসের মুখে’—২০০’র বেশি সাবেক কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ

        কেন্টাকি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গুলিতে শিক্ষার্থী নিহত, সন্দেহভাজন আটক

        যুক্তরাষ্ট্রে ১৯ দেশের অভিবাসন স্থগিত — আফগানদের জন্য অনিশ্চয়তা

        ট্রাম্প প্রশাসনে বড় পরিবর্তনের আভাস: নতুন বছরে বরখাস্ত হতে পারেন নোম, প্যাটেল ও হেগসেথ

        কোরিয়াটাউনে ভাড়াটিয়াদের গাড়ি টেনে নিয়ে পার্কিং স্থানে ঘর বানাতে চায় মালিক

        ট্রাম্প প্রশাসন জানুয়ারি থেকে ৮৫ হাজার ভিসা বাতিল করেছে: স্টেট ডিপার্টমেন্ট

প্রাচ্যের নতুন তারকা শেখ হাসিনা : খালিজ টাইমস

প্রাচ্যের নতুন তারকা শেখ হাসিনা : খালিজ টাইমস

সংযুক্ত আরব আমীরাতের (ইউএই) সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক পত্রিকা ‘খালিজ টাইমস্’ রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি মানবিক আবেদনের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তাঁকে প্রাচ্যের নতুন তারকা হিসেবে অভিহিত করেছে।

সংযুক্ত আরব আমীরাতে ইংরেজী ভাষায় প্রকাশিত সর্বাধিক জনপ্রিয় পত্রিকা খালিজ টাইমস-এ প্রকাশিত কলামিস্ট অ্যালন জ্যাকবের লেখা এক নিবন্ধে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাচ্যের নতুন তারকা হিসাবে উল্লেখ করে বলা হয়, প্রতিবেশি রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবন রক্ষায় সীমান্ত খুলে দিয়ে শেখ হাসিনা তাঁর যে সহমর্মিতা ও সমানুভূতি দেখিয়েছেন, সে জন্য এ সপ্তাহে তাঁর চেয়ে বড় কোন হিরো দেখছি না।

‘শেখ হাসিনা জানেন সহমর্মিতার নৈপুণ্য’ শিরোনামের এক কলামে জ্যাকব স্বীকার করেন, স্বৈরাচারী, ঘৃণিত গুরু এবং নামগোত্রহীন লোকদের নিয়ে লেখার আগেই আমাদের উচিৎ ছিল শেখ হাসিনাকে এই পাতায় উপস্থাপন করা।

জ্যাকব তাঁর কলামে লিখেন, লেখার বিষয় নির্বাচনের আগে সবসময়ে আমাকে কোন বিষয় এবং ব্যক্তিবর্গের ব্যাপারে ভাবতে হয়, এখানে স্বীকার করতেই হয় যে, এ সপ্তাহে আমার লেখার বিষয় দক্ষিণ ভারতের একজন অভিনেতা এবং রাজনৈতিক মাঠে তার আশাবাদী কর্মকান্ড নিয়ে লেখার বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল, কিন্তু আমি যখন বুঝতে পারলাম, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন প্রাচ্যের নতুন তারকা, তখন আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম।

তিনি বলেন, হ্যাঁ মিয়ানমারে একজন নোবেল বিজয়ীর উজ্জ্বলতা হারানোর বিষয় নিয়ে মিডিয়া অধিক ব্যস্ত থাকায় আমরা এই মহৎ সুযোগটি হারিয়েছি। গত সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক আবেদনটি অবজ্ঞা করায় একটি অপরাধের বোঝা আমাকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে বলেছেন, এতে তাঁর হৃদয় ভেঙ্গে গেছে।

জ্যাকব বলেন, বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতারা যখন কর্ণধার হন, তখন অভিবাসন সমস্যা নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত বিশ্বে আশার আলো জ্বলে উঠে। তাঁর কর্মকান্ড প্রথমে ক্ষীণ মনে হয়েছিল, তবে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গা সমস্যা প্রত্যক্ষ করতে খালিজ টাইমস্ যখন একজন রিপোর্টার পাঠালো, তখনি প্রকৃত সমস্যাটি সামনে চলে আসে। রিপোর্টারের বর্ণনায় উঠে এসেছে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর অবর্ণনীয় দুর্দশার চিত্র। ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীরা খাদ্যের জন্য অপেক্ষা করছে, জীর্ণ কুটিরে বসবাস করছে। এ ঘটনা আমাদের ব্যথিত করেছে।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, সাংবাদিকতা একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা, যেখানে ধারণা, জনগণ এবং তাদের অনুভূতি সঠিকভাবে তুলে ধরার মাধ্যমে এবং চিরন্তন বেদনার সঙ্গে একিভূত হয়।

জ্যাকব লিখেছেন, বিশ্ব গণমাধ্যম রোহিঙ্গা সংকটকে সু চি’র চোখে দেখার জন্য অপরাধী। দেশটির রাখাইন রাজ্য থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা দেশছাড়া হওয়া রোহিঙ্গাদের রক্ষা করতে সু চি-কে অসহায় মনে হয়েছে। অনেকেই অনুধাবন করতে পারেনি যে, দুই বছর আগে তার দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি নির্বাচনে বিজয়ী হলেও এখন পর্যন্ত দেশটির সামরিক জান্তাই মূল ক্ষমতায় রয়েছে।

সু চি তার দেশের একটি বিশাল জনগোষ্ঠীকে দেশ থেকে বিতাড়ন রোধের পরিবর্তে যা করছেন তা হচ্ছে তিনি নির্বাচনে সাফল্য ধরে রাখার চেষ্টা করছেন কিংবা বলা যায় তিনি ব্যালটের ফায়দা লুটছেন। সু চি এতদিন ধরে যে রাজনৈতিক সংগ্রামটি চালিয়ে এসেছেন তা সামাজিক ও মানবিক অঙ্গনে সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় তা থেকে তিনি বিচ্যুত হয়েছেন। তার সামরিক বাহিনী যখন রোহিঙ্গা নিধনে মেতে আছে তখন তিনি ফার্স্ট কাউন্সিলার হিসেবে ক্ষমতার জাঁকজমক ও সুযোগ-সুবিধায় আটকা পড়ে আছেন এবং এর থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।

প্রকৃতপক্ষে তিনি নিজে একটি কোটরে আবদ্ধ হয়ে আছেন এবং প্রতীকি নেতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি যখন মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে কথা বলছিলেন তখন তার মধ্যে কোন আবেগ ছিল না, তাকে বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। তিনি যখন সেনাবাহিনীর পক্ষ সমর্থন করে কথা বলছিলেন তখন তাকে তার পূর্বের সংগ্রামী জীবনের ছায়ামাত্র মনে হচ্ছিল।

জ্যাকব বলেন, ‘যখন তার সবচেয়ে বেশি উচ্চকন্ঠ হওয়ার দরকার ছিল, তখন তিনি সোচ্চার হতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই তথাকথিত এই আইকনের জন্য আমার সহমর্মিতা নেই বললেই চলে। গণতন্ত্র যখন পছন্দসই সংখ্যাগরিষ্ঠের পক্ষে যায় তখন এটি ত্রুটিপূর্ণ ও বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। আর জান্তা ও একনায়কদের সঙ্গে সন্ধি করা সহজ হয়ে যায়। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সু চি’র সুচিন্তিত নীরবতা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। আমাদের একটি সম্পাদকীয়তে আমি একথা বলেছি। আরও বলব। যখন মানবতার জন্য চিৎকার করে কথা বলা উচিৎ তখন কারও নিশ্চুপ থাকাটা আমার অপছন্দ।

জ্যাকব বলেন, সু চি কন্ঠস্বর যখন হারিয়েছেন এমন সময় শেখ হাসিনার সোচ্চার হয়ে ওঠা এক বিরাট স্বস্তি। সু চি ও শেখ হাসিনা তাদের নিজ নিজ দেশের মুক্তি সংগ্রামের মহানায়কের কন্যা। দু’জনেই খুব কাছ থেকে ট্র্যাজেডি দেখেছেন। যদিও ফারাকটা বিশাল। মানবতা যখন বিপন্ন তখন একজন নিছক দর্শক হয়ে থাকার পথ বেছে নিলেন, অপরজন দেখালেন অমায়িক দয়া। শেখ হাসিনার প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ছোট্ট দেশটিতে একবারে ৪ লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘে অধিবেশন চলাকালে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তিন লাখ শরণার্থী পেয়েছি, কিন্তু আমাদের স্থান সংকুলানের সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আরও বেশি শরণার্থী গ্রহণের বিশাল হৃদয় আমাদের রয়েছে।’

জ্যাকব লিখেছেন, এটা স্রেফ কোন অনুকম্পার বিষয় নয়, এতে ট্র্যাজিক পরিস্থিতিতে সাহস প্রদর্শিত হয়েছে।
তিনি বলেন, জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশগুলো থেকে ১২ লাখ শরণার্থী গ্রহণের সাহস দেখিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যতিক্রম, এর সম্পদ সীমিত। এটি বাংলাদেশ সরকারের কারণে সৃষ্ট কোন জন স্রোত নয়, তথাপি শেখ হাসিনা তার মানবিকতার জায়গা থেকে সরে যাননি।

এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত