সিডনিতে হনুক্কা অনুষ্ঠানে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ১৬; দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় নিরাপত্তা জোরদার
ফের আলোচনায় সুপ্রিম কোর্ট
দীর্ঘ অবকাশ শেষে সুপ্রিম কোর্ট খুলছে মঙ্গলবার। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটিতে যাওয়ায় দেশবাসীর দৃষ্টি থাকবে সর্বোচ্চ আদালতের দিকে। আলোচিত বেশ কয়েকটি মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে কয়েক দিনের মধ্যে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল ও জেষ্ঠ্য আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য দিন নির্ধারণ ছিল। ওই অনুষ্ঠান বাতিল করেনি সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের বিভাগের রেজিস্ট্রার সৈয়দ দিলজার হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ওই অনুষ্ঠান এখনো বাতিল করা হয়নি।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে দেয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা চলমান অবকাশকালীন ছুটির পর প্রথম কার্যদিবস ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সাড়ে দশটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মূল ভবনের ভেতরে লনে অ্যাটর্নি জেনারেল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক এবং আইনজীবীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
সোমবার বিকালে রাষ্ট্রপতির কাছে এক মাসের ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। সংবিধান অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি অনুপস্থিতিতে জেষ্ঠ্য বিচারপতি ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। সেই হিসেবে বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করার কথা। তবে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন আইন মন্ত্রণালয় থেকে এখনো দেয়া হয়নি।
আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার চাকরির মেয়াদ শেষ হবে। তবে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং পর্যবেক্ষণে ‘অপ্রাসঙ্গিক’ বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে সরকার। এই ইস্যুতে সরকারের সঙ্গে প্রধান বিচারপতির কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা প্রকাশ্যেই প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে নানা মন্তব্য করেন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং প্রধান বিচারপতির প্রসঙ্গ যখন আলোচনার তুঙ্গে তখনই শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ। প্রধান বিচারপতি দেশের বাইরে সফরে যাওয়ায় বিষয়টি অনেকটা আলোচনার বাইরে চলে যায়। তবে সুপ্রিম কোর্ট খোলার আগের দিন প্রধান বিচারপতির এক মাসের ছুটি চাওয়ার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
আলোচিত মামলায় উত্তাপ থাকবে সর্বোচ্চ আদালতে
গত ২৭ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২৫ দিন সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ ছিল। মঙ্গলবার থেকে সুপ্রিম কোর্ট উভয় বিভাগ (আপিল ও হাইকোর্ট) এর নিয়মিত কার্যক্রম চলবে।
বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি নিয়ে উত্তাপ থাকবে উচ্চ আদালত। বিশেষ করে ষোড়শ সংশোধনী রাযের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব পাস করা হয়েছে। রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করতে খুটিনাটি পর্যাবেক্ষণ হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এছাড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল হওয়া রায় এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৫৪ সংসদ সদস্যের পদে থাকার বৈধতা প্রশ্নে খারিজ রিটের রিভিউ করার বিষয়ে গুঞ্জন রয়েছে।
নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির গেজেট প্রকাশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অবৈধ করে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল, আইন সচিব নিয়োগে বৈধতাসংক্রান্ত মামলা, রোহিঙ্গা নিয়ে রিটের শুনানি ও ভারতীয় চ্যানেল সম্প্রচারসহ গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো মামলার শুনানির জন্য রয়েছে।
এছাড়া এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় পুরাতন শিক্ষার্থীদের ৫ নাম্বার কাটার বিষয়ে শুনানি ও বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য আরও এক বছর সময় চেয়ে করা আবেদন আপিল বিভাগে হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদনের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
হাইকোর্ট বিভাগে ৪৮ বেঞ্চ পুনর্গঠন
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার দিয়ে ৪৮টি বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিস্তারিত সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে এসব বেঞ্চে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে।
৪৮টি বেঞ্চের মধ্যে ১৪টি রিট বেঞ্চ, ২৩টি ফৌজদারীসংক্রান্ত বেঞ্চ এবং ১১টি দেওয়ানি সংক্রান্ত বেঞ্চ রয়েছে।
গত ২৫ আগস্ট থেকে ২ অক্টোবর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে নিয়মিত বিচার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে এ সময়ে জরুরি মামলাসংক্রান্ত শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য অবকাশকালীন বেঞ্চে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। প্রধান বিচারপতি সুনির্দিষ্ট বিচারিক এখতিয়ার দিয়ে অবকাশকালীন বেঞ্চ গঠন করে দেন।
এলএবাংলাটাইমস/এন/এলআরটি
News Desk
শেয়ার করুন