ইতালিতে ‘দাসের জীবন’ থেকে মুক্তি পেলেন ৩৩ শ্রমিক
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
উত্তর ইতালির একটি খামার থেকে ৩৩ শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের দাসের মতো কাজ করানো হতো। তাঁদের সবাই ভারতের নাগরিক। স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ বলছে, চাকরির লোভ ও সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখিয়ে ওই ৩৩ জনকে ইতালিতে নিয়ে আসেন দুই ভারতীয় গ্যাংমাস্টার। খুব সামান্য মজুরিতে সপ্তাহে ৭ দিন ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করতে বাধ্য করা হতো তাঁদের।
ইতালির পুলিশ ওই দুই গ্যাংমাস্টারকে প্রায় ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩০০ ডলারসহ গ্রেপ্তার করেছে।
খামারগুলোয় ইতালিয়ান ও অভিবাসীদের ওপর প্রায়ই শোষণের ঘটনা। দেশটিতে খেত, আঙুরবাগান ও গ্রিনহাউজে লাখো মানুষ কাজ করেন। কোনো চুক্তি ছাড়া উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হন তাঁরা।
গত মাসেই একটি খামারে কাজের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এক শ্রমিকের হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওই শ্রমিককে সড়কের পাশে ফেলে রেখে যায় মালিকপক্ষ। পরে গাড়ি চাপায় তাঁর পা গুঁড়িয়ে যায়। পরবর্তীতে তাঁর মৃত্যু হয়। এরই মধ্যে তাঁর নিয়োগকর্তাকে হত্যার অভিযোগে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
বিবিসিকে পাঠানো পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মৌসুমী কাজের ছাড়পত্র ও চাকরির জন্য গ্যাংমাস্টাররা ৩৩ শ্রমিকের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৭ হাজার ইউরো (১৮ হাজার ৫৫৪ ডলার) নিয়েছেন। ভারতীয় মুদ্রায় যা ১৫ লাখ রুপির সমান।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ইতালিতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই শ্রমিকদের পাসপোর্ট জব্দ করে নেওয়া হয়। থাকতে দেওয়া হতো জরাজীর্ণ কক্ষে। সেখান থেকে তাঁদের বের হতে দেওয়া হতো না।
প্রতি সকালে শ্রমিকদের গাদাগাদি করে গাড়িতে উঠিয়ে ভেরোনা অঞ্চলের গ্রামাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হতো। সেখানে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত তাঁদের সবজির বাক্সের মধ্যে লুকিয়ে রেখে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হতো।
উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের কাছে এরই মধ্যে পাসপোর্ট ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের জন্য নিরাপদ আবাসন ও কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে একটি অভিবাসন সংস্থা ও বিভিন্ন সামাজিক সেবা প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
পুলিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, ওই দুই গ্যাংমাস্টারের বিরুদ্ধে শোষণ ও দাস ব্যবসার অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/এজেড
শেয়ার করুন