আপডেট :

        ব্রাজিলে ভয়াবহ বন্যায় নিহত ৫৭, ঘরছাড়া ৭০ হাজার মানুষ

        ইসরায়েলে আল-জাজিরা টিভি বন্ধের সিদ্ধান্ত

        মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানে বিক্ষোভ

        ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থীদের ওপর ইসরাইলি সমর্থকদের হামলা

        যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শিক্ষিকা গ্রেপ্তার

        যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি ‘বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ’ বলে উল্লেখ উত্তর কোরিয়ার

        যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন কর্মকর্তার মৃত্যু

        বান্ধবী খুঁজে পেতে বিলবোর্ডে বিজ্ঞাপন, ব্যাপক সাড়া

        অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা বন্ধে রিট

        মানবপাচার মামলায় ৪ দিনের রিমান্ডে মিল্টন সমাদ্দার

        বাংলাদেশ ট্যুর গ্রুপ

        বাংলাদেশ ট্যুর গ্রুপ

        রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে

        চুক্তি চান না বরং বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইমরান খান

        চুক্তি চান না বরং বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত ইমরান খান

        এএফআইপি ভবন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

        সুন্দরবনের আগুন লাগার ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি

        সুন্দরবনের আগুন নেভাতে প্রচেষ্টা

        প্রাইজবন্ডে প্রথম পুরস্কার

        পাউবোর ৩৭০ বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন

খেয়ে তৃপ্তি মানেই শরীরে পুষ্টি নয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

খেয়ে তৃপ্তি মানেই শরীরে পুষ্টি নয়, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

খেয়ে তৃপ্তি মানেই শরীরে পুষ্টি মজুত- এই ধারণা একেবারেই ভুল। তাই খাওয়ার ব্যাপারে পুষ্টির চেয়ে মজাদার খাবারেই মানুষের ঝোঁক বেশি দেখা যায়। আবার অনেকে বুঝেও তা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু সুস্থ থাকতে শরীরে প্রয়োজনীয় পরিপূরকের চাহিদা খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে মেটানো অত্যন্ত জরুরি। একমাত্র পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমেই সেই মাইক্রো ও ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টের ও চাহিদা মেটানো সম্ভব। শরীরে জরুরি ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট গুলির মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হল প্রোটিন। প্রোটিন এক ধরনের অণু, যা বহু অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্নয়ে তৈরি। এই অ্যামাইনো অ্যাসিড দুই ধরনের হয়- এসেন্সিয়াল এবং নন এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড।

শরীর নিজে থেকেই যে অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি তৈরি করে সেগুলো হলো নন এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড আর যেগুলো আমরা বাইরে থেকে খাদ্যের মাধ্যমে শরীরকে জোগান দেই সেগুলোকে বলা হয় এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড, যার উৎস প্রোটিন জাতীয় খাবার। শরীরে ২০ ধরনের এই অ্যাসিড রয়েছে তার মধ্যে ৯টি এসেন্সিয়াল ও ১১টি নন এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড।

সবকটির উপযুক্ত উপস্থিতিতেই শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিনের চাহিদা মেটানো সম্ভব। পেট ভরানোর জন্য যেসব খাবার আমরা খাই তার বেশির ভাগই কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার। যেখানে প্রোটিনের মাত্রা খুব কম থাকে। যেমন- ভাত, রুটি, মুড়ি, পরোটা ইত্যাদি। এতে শরীরে কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা মিটলেও প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত প্রোটিনের চাহিদা মেটে না। শরীরে সবকটি এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড পৌঁছায় না। ফলে শরীরে উপস্থিত নন এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলোর সঙ্গে এই এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিডের যোগসূত্র অসমাপ্ত থেকে যায়। তাই শরীরে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ হয় না।

প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা

সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, তন্ত্র, কোষ এবং প্রয়োজনীয় অণুর কার্যকারিতা ঠিক রাখতে প্রোটিন অত্যন্ত জরুরি। প্রোটিনের ৫টি অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল—

১. প্রোটিন শরীরের গঠনের অতি প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। যা শরীরের প্রতিটি কোষকে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখতে সাহায্য করে।

২. মাংসপেশী এবং স্নায়ুর স্বাভাবিক গতিবিধি বজায় রাখতে, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে সিগন্যাল সঠিকভাবে পাঠাতে প্রোটিনের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। যা বিভিন্ন হরমোনকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে।

৩. শরীর থেকে রক্তক্ষরণ আটকায়, রক্ত জমাট বাঁধা (ব্লাড ক্লট) ও শরীরের বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে প্রোটিন জরুরি।

৪. আমাদের হার্টে অক্সিজেন পৌঁছায় একটি প্রোটিনের মাধ্যমে, যার নাম হিমোগ্লোবিন।

৫. শরীরের রোগ প্রতিরোধক তন্ত্রে কোনো অ্যান্টিজেন (রোগ উৎপন্নকারী জীবাণু-যেমন ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস) প্রবেশ করলে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, যা এই জীবাণুকে রোধ করে। এই অ্যান্টিবডিও একটা প্রোটিন।

ওজন বুঝে প্রোটিন মেপে

গর্ভবতী মহিলা ৭৮ (গ্রাম)। প্রসবের ৬ মাস অবধি ৭৪ (গ্রাম)। প্রসবের পর ৬ মাস থেকে এক বছর অবধি ৬৮ (গ্রাম)। সাধারণভাবে মাপকাঠি হল যার ওজন কেজিতে যত তার শরীরে ঠিক তত গ্রামই প্রোটিন প্রয়োজন। অর্থাৎ কারও ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তার শরীরে দিনে ৬০ গ্রাম প্রোটিন জরুরি। এর মূল কারণ হল যে খাদ্যে যত গ্রাম প্রোটিন উপস্থিত তার পুরোটাই শরীরে শোষিত হয় না। প্রত্যেকের দৈনন্দিন জীবনে খাটুনি (কম ঘুম, কায়িক পরিশ্রম বেশি ইত্যাদি) কত তার উপর নির্ভর করে প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা। তিন রকম অবস্থায় এই প্রোটিনের প্রয়োজনীতার হেরফের হয়।

যাদের কিডনির সমস্যা, তাদের কম প্রোটিন খাওয়া উচিত (৬০ কেজি বডি ওয়েট হলে ৪০—৪৫ গ্রাম প্রোটিন)। যারা খুব শারীরিক পরিশ্রম করেন যেমন মাটি কাটা বা যারা খুব ব্যায়াম বা খেলাধুলো করেন তাদের একটু বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। যারা অসুস্থতার কারণে শারীরিকভাবে খুব দুর্বল থাকেন তাদের একটু বেশি প্রোটিন খাওয়া দরকার।

কোন খাবারে কত প্রোটিন

অআমাদের দৈন্যন্দিন খাবারের মধ্যে কোন খাবার কতটুকু প্রোটিন রয়েছে তার সংক্ষিপ্ত তালিকা এখানে দেওয়া হলো। এর মাধ্যমে আপনি সহজেই প্রোটিনের গ্রহণের একটি নিজস্ব হিসেব তৈরি করতে পারবেন।

খাবার প্রোটিন (মিলিগ্রাম/১০০ গ্রাম)

মুরগির ডিম ১৩.৩

হাঁসের ডিম ১৩.৫

খাসির মাংস ২১.৪

মুরগির মাংস ২৫.৯

কাতলা মাছ ১৯.৫

চিংড়ি মাছ ১৯.১

ছোট চিংড়ি ২০.৫

বাটা মাছ ১৪.৩

ট্যাংরা মাছ ১৯.২

ইলিশ মাছ ২১.৮

গরুর দুধ ৩.২

ছানা ১৮.৩

মাসরুম ৩.১

কাঁচা ছোলা ১৭.১

ছোলার ডাল ২০.৮

মসুর ডাল ২৫.১

কাঠ বাদাম ২০.৮

কাজু বাদাম ২১.২

সয়াবিন ৪৩.২

সেদ্ধ চালের ভাত

(মিলে ছাঁটা) ৬.৪

সেদ্ধ চালের ভাত ৮.৫

(ঢেঁকি ছাঁটা)

গম ১১.৮

প্রোটিনের অভাব যা হয়

শরীরে প্রোটিনের অভাবে চুল পড়ার সমস্যা, গায়ের রং ফ্যাকাসে হয়ে যায়, পেটে জল জমে ফুলে ওঠে, পায়ের গোড়ালিতে জল জমে ফুলতে থাকে, ফুসফুসে পানি জমতে পারে, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেতে পারে, হঠাৎ রক্ত ধমনীতে জমাট বেঁধে যেতে পারে, প্রচণ্ড ক্লান্তি ভাব, হাড় বেরনো, দুর্বল চেহারা।

সাবধানতা

প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য অনেকে বাজারের প্রোটিন মিক্স পাউডার খান। কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই কোনো ওষুধ কোম্পানির তৈরি। এগুলো খাওয়ার ফলে অনেক সময় শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। জাঙ্ক ফুড বা ফাস্ট ফুডে প্রোটিন যেরূপে খাওয়া হয়, তাতে প্রচুর পরিমাণে নুন এবং ফ্যাট শরীরে প্রবেশ করে। স্বাদ ভাল লাগার ফলে অনেক সময় শুধু প্রোটিনই খাওয়া হয়, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রোটিন শরীরের ক্ষতি করে। শরীরে প্রোটিনের জোগান ঠিক রাখতে সেদ্ধ, অল্প তেলে বাড়িতে রান্না করা প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান।


এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত