কর ফাঁকি দিতে মেয়েকে ‘পরামর্শক’ বানালেন ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে গত রোববার এক বড় বোমা ফাটিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর বিবরণী ফাঁসের এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বেরই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে বিষয়টি। প্রেসিডেন্টের কর ফাঁকি নিয়ে যখন সবাই হইচই করছে, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর প্রতিষ্ঠানের কিছু ব্যয়ের খাত বেশ আগ্রহের উদ্রেক করেছে। এমনই একটি হচ্ছে ‘পরামর্শক ফি’। ব্যাখ্যাতীত এই খাতে ২০১০-২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যয় করেছেন ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ডলারই গেছে মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের কাছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প করযোগ্য আয়ের পরিমাণ কম দেখাতে নিজ পরিবারের সদস্যকেই পরামর্শক হিসেবে দেখিয়েছেন। আর এভাবে তিনি এর ফি বাবদ একটি মোটা অঙ্কের অর্থকে ব্যবসায়িক ব্যয় হিসেবে দেখিয়েছেন। কর বিবরণীতে পরামর্শকদের কোনো পরিচয়ের উল্লেখ নেই। কিন্তু ২০১৭ সালে ইভানকা ট্রাম্প যখন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন, তখন তাঁর দেওয়া আর্থিক বিবরণীর সঙ্গে এই গোপন কর নথি মিলিয়ে দেখলে এর প্রমাণ মেলে।
সে সময় ইভানকা জানান, তিনি তাঁর মালিকানা রয়েছে এমন একটি পরামর্শক সংস্থার কাছ থেকে ৭ লাখ ৪৭ হাজার ৬২২ ডলার ফি হিসেবে পেয়েছেন। হাওয়াই ও ভ্যাঙ্কুভারে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মালিকানাধীন হোটেল প্রকল্প থেকে ঠিক এই পরিমাণ অর্থই পরামর্শক ফি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। অথচ ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন কোম্পানিতে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যুক্ত রয়েছেন ইভানকা। ফলে তিনি সেই প্রকল্প থেকে পরামর্শক ফি নিয়েছেন, যার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে তিনি রয়েছেন এবং যার লভ্যাংশের একটি অংশ যায় তাঁর পকেটে।
সিএনএনের এ সম্পর্কিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত দুটি প্রকল্পের ক্ষেত্রে ইভানকা ট্রাম্প একই সঙ্গে দুটি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। নিজের বাবার মালিকানাধীন কোম্পানিতে তিনি নিয়োগপ্রাপ্ত বড় কর্মকর্তার ভূমিকায় যেমন ছিলেন, তেমনি ছিলেন পরামর্শকের ভূমিকায়ও। দুই ভূমিকাতেই বড় অঙ্কের অর্থ তিনি পকেটস্থ করেছেন। আর এই ভূমিকার কারণে তাঁর বাবা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প করযোগ্য আয় থেকে সাড় ৭ লাখ ডলার কমিয়ে ফেলতে পেরেছেন।
এ বিষয়ে অবশ্য ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আইনজীবীর কাছ থেকে মন্তব্য চেয়েও পায়নি সিএনএন। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইভানকার নামে পরামর্শক ফি বাবদ এই অর্থ দেখানোটা অনৈতিক। নিউইয়র্ক টাইমস হয়তো এর চিহ্নটিই কেবল প্রকাশ্যে আনতে পেরেছে। কারণ, ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়ে পরামর্শক ফি বাবদ ট্রাম্পের দেখানো ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার কোথায়, কার কাছে গেছে, তার কোনো হদিস নেই। ইভানকার অংশটি বাদ দিলে বাকি আড়াই কোটি ডলার কার কাছে গেছে, তার কোনো খোঁজ নেই।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ইভানকা ট্রাম্পের কার্যালয় ট্রাম্পের প্রচার দলের সঙ্গে কথা বলা অনুরোধ করে সিএনএনকে। আর ট্রাম্পের প্রচার দলের মুখপাত্র টিম মারটাগ পুরো বিষয়টিকেই ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে উড়িয়ে দেন।
এলএ বাংলা টাইমস/এম/বিএইচ
শেয়ার করুন