দুই শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র
ক্যালিফোর্নিয়ায় খরা: জলাশয় থেকে পানি তুলতে নিষেধাজ্ঞা
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের পানি সম্পদ বিভাগ রাজ্যের প্রধান নদী ও ঝর্ণাগুলো থেকে পানি উত্তোলনকে নিষিদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করতে যাচ্ছে। চলমান খরা মোকাবিলা করার জন্যে এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
এরকম সিদ্ধান্ত এর আগে কখনো নেওয়া হয়নি। গত বছরের খরাকে ইতিহাসের অন্যতম খারাপ খরা হিসেবে ধরা হয়। তখনো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এরকম কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
রাজ্যের পানি সম্পদ বিভাগ শুক্রবারে একটি জরুরী ঘোষণা জারি করে। ঘোষণাটিতে সান জোয়াকিন ও স্যাক্রামেন্টো নদী থেকে পানি উত্তোলন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বোর্ডটি এখনো প্রস্তাবটি পাশ করার জন্য ভোট দেয়নি। আগস্ট মাসের ৩ তারিখে প্রস্তাবটির পক্ষে-বিপক্ষে ভোট গ্রহণ করা হবে। পাশ হওয়ার ২ সপ্তাহ পর থেকে প্রস্তাবটি কার্যকর করা হবে।
বোর্ডটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আইলিন সোবেক জানান, প্রস্তাবটির মাধ্যমে খরার ভয়াবহতা বোঝা যায়। তিনি জানান যে সকলের চাহিদা পূরণ করার মতো অবস্থা এখন আর নেই।
তিনি বলেন ‘আমরা এই পদক্ষেপকে হাল্কা হিসেবে নিচ্ছি না। আমরা জানি, এই পদক্ষেপের কারণে অনেকেই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হবে। অবশ্যই খাওয়া ও অন্যান্য জৈবিক চাহিদার জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করা হবে।‘
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খাওয়ার পানির পাশাপাশি বিরল প্রজাতির মাছগুলোকেও রক্ষা করা চেষ্টা করছি।' রাজ্য কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে সতর্কবার্তা দিয়েছে যে এই বছর চিনুক স্যালমন মাছের অধিকাংশই সাক্রামেন্টো নদীতে মারা যেতে পারে'।
মার্চ মাসের শুরু থেকেই রাজ্যের পানি সম্পদ বিভাগ কৃষকদেরকে পানি শুকিয়ে যাওয়ার সতর্কবার্তা দিচ্ছিলো। মধ্য-জুনে আনুষ্ঠানিকভাবে পানি শূন্যতার নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, শুক্রবারের প্রস্তাবটি তোলা হয়েছে।
শুক্রবারে প্রকাশিত প্রস্তাবে হাজার-হাজার কৃষকের কৃষিকাজ প্রভাবিত হবে যাদের অধিকাংশই নদী থেকে পানি তোলার আইনি অধিকার রাখে। বেশিরভাগ কৃষক যারা রাজ্য জল প্রকল্প বা ফেডারেল সেন্ট্রাল ভ্যালি প্রকল্পের উপর নির্ভর করেন তারা ইতোমধ্যে নাটকীয়ভাবে হ্রাস করা বরাদ্দের সাথে লড়াই করছেন।
খাদ্য ও কৃষিজ সম্পদ বিভাগের সেক্রেটারি ক্যারেন রোস জানান যে প্রস্তাবটি পাশ করা হলে এই বছর কৃষিজ সম্পদের উৎপাদনের হার অনেক মাত্রায় কমে যাবে। কিন্তু তিনি এটিও স্বীকার করেন যে খরা মোকাবিলার জন্য এই পদক্ষেপের কোন বিকল্প নেই।
পরিবেশবিদরা ইতোমধ্যে রাজ্যকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। তাদের মতে, পর্যাপ্ত পানি না থাকলে অনেক বিরল প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে। এ ব্যপারে সোবেক জানান যে বোর্ডটি চাইলেও দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাচ্ছিলাম না তাড়াহুড়ায় এমন কোন পদক্ষেপ নিতে যা জনজীবনে বৈরি প্রভাব ফেলতে পারে। একান্ত জরুরী না হলে আমরা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতাম না।‘
গত খরার সময় বোর্ড কৃষকদের কয়েকটি আদেশ দিয়েছিলো যা পানি সরবরাহের ওপর প্রভাব ফেলেছিলো। এতে কৃষকরা বোর্ডের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলো যা তারা জিতেছিলো। তাই, বোর্ড এবার ধীরে সুস্থে এগুচ্ছে।
এলএবাংলাটাইমস/এমডব্লিউ
শেয়ার করুন