আপডেট :

        পৌরসভা "খ" শ্রেণি থেকে "ক" শ্রেণিতেও উন্নীত হলো কিন্তু আলোর মুখ দেখছে না

        সর্বমোট ৫ হাজার ৪৫৬ জন সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে

        ৪৮ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ

        ৪৮ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া বিভাগ

        ২-৩ বছরের মধ্যে মহাকাশে যাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট

        ব্যাংক নির্বাহীদের সন্দেহজনক লেনদেন ও বিলিয়ন ডলার ঋণ খেলাপির জন্য তারল্য সংকটে ভুগছে বাংলাদেশ

        নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের মধ্যে অস্বস্তি ছিল

        জিসিসি গ্রান্ড ট্যুর’ নামে নতুন ভিসা চালু করতে যাচ্ছে উপসাগরীয় ছয় দেশ

        বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে লড়াই করা তরুণ কর্মীদের ক্ষমতায়ন পর্যন্ত বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র

        দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র নেই

        মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে ফাঁসির আসামিদের কনডেম সেলে না রাখার সিদ্ধান্ত

        নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া ৪৫ জনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে বিএনপি

        নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে প্রার্থী হওয়া ৪৫ জনকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছে বিএনপি

        ঢাকাসহ রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় আজ বৃষ্টি হতে পারে

        নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে প্রার্থিতা বাতিল

        গাড়ির জন্য মায়ের সঙ্গে অপেক্ষা করছিল ৪ বছর বয়সী শিশু, অতঃপর লরির ধাক্কায় মৃত্যু

        আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে

        আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে নারী উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে

        পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন

        দখলদার ইসরায়েলকে ১০০ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র সরবরাহ করতে চায় হোয়াইট হাউস

“এল এবাংলাটাইমস” এ জনপ্রিয় উপস্থাপিকা মৌসুমি বড়ুয়ার সাক্ষাৎকার

“এল এবাংলাটাইমস” এ জনপ্রিয় উপস্থাপিকা মৌসুমি বড়ুয়ার সাক্ষাৎকার

চ্যানেল আইয়ের এ সময়ের জনপ্রিয় উপস্থাপিকা মৌসুমি বড়ুয়া । অল্প কিছুদিন আগে
তিনি আমেরিকার লস এঞ্জেলেসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। “এল এ
বাংলাটাইমস”
এ তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জনাব আব্দুস সামাদ।


আমেরিকাতে প্রথম কবে আসেন?
অন্য অনেক দেশে গেছি। কিন্তু এবার ২০১৫ তে আমেরিকাতে প্রথম আসি।

আমেরিকার হলিউড ঘুরে আপনার অনুভূতি কি ?
বাফলা থেকে সিপার চৌধুরী ভাই, মোয়াজ্জেম চৌধুরী ভাই , আলী ভাই, আহমেদ বশির আংকেল আমার সাথে
যোগাযোগ করছেন । বশির আংকেল আমাদের পারিবারিক বন্ধু। তারা এক সাথে
যোগাযোগ করে ছিলেন। ওনারা অনেক দিন থেকে চ্যানেল আইর মিডিয়া পার্টনার ।
সব কিছু মিলিয়ে উনারা আমার দুজন গুরু শাইখ সিরাজ ও ফরিদুর রেজা সাগরের
সাথে যোগাযোগ করলেন। ওনাদের অনুমতিতে আমিও বলেছি যাবো। প্রবাসীদের আয়োজন
সম্পর্কে ধারনা ছিল যে চ্যানেল আইর পার্টনার নিশ্চয়ই আয়োজন ভাল হবে।
কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলাম তাঁদের আয়োজন অসাধারণ ।

লস এঞ্জেলেসের প্রবাসী
বাঙ্গালীরা যে এতো ভাল , উনারা মন থেকে বাংলাদেশ কে রিপ্রেজেন্ট করেন।
করার দরকার করা এমন নয়। সব্বাই প্রানপন চেষ্টা করেন যা আমি নিজে চোখে
দেখে আসলাম। ক্যালিফোরনিয়ার সকল বাঙ্গালীদের আমি সালাম দেই।  আমি
বাংলাদেশে এসে চ্যানেল আই কে আমার প্রোগ্রাম গুলোর কথা বলেছি।  শাইখ
সিরাজ স্যার তো আরও বলেছেন, উনি নিজেও তো গেছিলেন। যাওয়ার পর  হলিউড আমার
কাছে খুব সুন্দর লেগেছে। লস এঞ্জেলেসের বিভিন্ন জায়গা অনেক সুন্দর । আগে
শুনেছি সুন্দর , দেখে আরও সুন্দর জায়গা মনে হয়েছে। মনে হয়েছে স্বপ্নের
জায়গা এতো সুন্দর জায়গা , এতো সুন্দর মানুষ। সব্বাই মিলে মিশে আছেন।
সব্বাই সব্বাই কে রেসপেক্ট করেন।



কি কি এ্যাওয়ার্ড পেলেন ?
আমেরিকান সাহিত্যিক দের সংগঠন “আমেরিকান লিটারেলি লস এঞ্জেলেস”  থেকে
আমাকে একটি সংবর্ধনা দিয়েছেন। আমি ওটাতে নিজে সম্মানিত বোধ করছি। যদিও আমি
কবিতা লিখি না , সাহিত্য লিখি না।  বিশেষ করে ওখানে আছেন খোকা ভাইকে
ধন্যবাদ জানাই। বাফলা থেকেও আমাকে ক্রেস্ট দেয়া হয়েছে। তরঙ্গ থেকেও আমাকে এ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া আরও তিনটি এ্যাওয়ার্ড পেয়েছি সিটি মেয়র এরিক গারসিটি, কংগ্রেস
ম্যান ও কংগ্রেস ওমেন এর  । এগুলো আমার জীবনের বিশাল একটা পাওয়া।
আমি বিশেষভাবে বৈশাখী মেলা কমিটিকে ধন্যবাদ জানাই এমন একটি  উদ্যোগের
মধ্যে এ আয়োজন করেছেন। এ ছাড়া মেয়র এরিক গারসিটি, কংগ্রেস ম্যান ও
কংগ্রেস ওমেন কে আমার ধন্যবাদ জানাই।



দেশের বাইরে শাইখ সিরাজ ও অন্য দের সাথে  আর কোথায় উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান করেছেন ?

শাইখ সিরাজ স্যার, ফরিদুর রেজা সাগর স্যার , রুনা লায়লা মাডাম, সাবিনা
ইয়াসমিন মাডাম ও নতুন প্রজন্মের কিছু শিল্পীদের নিয়ে আমরা কাতারে ঈদে
দোহাতে অনুষ্ঠান করি ।  এই অনুষ্ঠান তা আমার জীবনের স্মরণীয় । কারন ,
বাংলাদেশের নাম করা ৪ জন গুনি মানুষ ঐ অনুষ্ঠানে ছিলেন। আমরা নিয়মিত
কাতারে প্রতি ঈদে দোহাতে অনুষ্ঠান করি ।
ইয়াহিদ ভুইয়া নামের একজন প্রবাসী বাঙ্গালী কাতারে এটি আয়োজন করেন। তিনি
কাতারে বাংলাদেশ কে রিপ্রেজেন্ট করেন। প্রতি বছর আমার সেখানে একবার যাওয়া
হয় । কারন, চ্যানেল আই সেখানে মিডিয়া পার্টনার।
আর এবার লস এঞ্জেলেস থেকে আমি ডালাসেও গিয়েছিলাম। সেখানে ছিলেন পার্থ দা।
উনি তো আমার পরিবারের সদস্য।  দাদা আমার কাজের অনেক বড় একটি উৎসাহ ।


লস এঞ্জেলেসে আসার পর চ্যানেল আইর সহকর্মীদের কেমন মিস করেছেন ?
ওরে বাবা । এতো মিস করেছি তা বলে বোঝানো যাবে না। ফেসবুক ছিল আমার ভাল
যোগাযোগের  মাধ্যম ।  আমার কলিগরা সব্বাই এতো ভাল যে প্রত্যেক টা মিনিটে
আমিও যেমন মনে করেছি ওরাও তাই। সব সময় সবার সাথে যোগাযোগ ছিল। আমার কাজ
গুলো নিয়ে আমার কলিগরা তখন আমাকে খুব সাহায্য করেছে। সব্বাই ভাই বোন
বন্ধুর মত। সব্বাই তুই তুই সম্পর্ক। সবাই বলে তুই চলে আয় ! তকে খুব মিস
করছি। তকে ছাড়া ভাল লাগছে না।  আমি ফেসবুকে ছবি দিতাম । সবাই দেখত ,
মন্তব্য করত।


 অন্যদিকে লস এঞ্জেলেসে সব বাঙ্গালীদের এতো ভালবাসা পেয়ে মনে হচ্ছিল যে
আমি দেশেই আছি। এখন দেশে সবাই আমাকে বলে , ওর লস এঞ্জেলেসে আরেকটি ফামেলি
হয়েছে। ওকে বকাবকি করিস না।  কেউ বেশী কিছু বললে সেখানে চলে যাবে
আমেরিকায়।


প্রবাসী দর্শকদের সম্পর্কে কিছু বলুন?
লস এঞ্জেলেসের দর্শকরা মানুষকে খুব সম্মান করতে জানে।  তাঁদের জেনারেশন
গুলো বাঙ্গালীদের জন্য কাজ করছে। যেমন , তুমি এল এ বাংলাটাইমসের আব্দুস
সামাদ । তুমি তোমার জেনারেশনের হয়ে কাজ করছো । বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যে
দৌড়ে দৌড়ে ছবি তুলছো । টা নিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে রিপোর্ট করছো।  আমি দেখেছি
তুমি অনেক সুন্দর করে রিপোর্ট গুলো কর। তুমিও তো অনেক বড় একটি দায়িত্ব
পালন করছো। আমি এল এ বাংলাটাইমস কেও খুব অ্যাপ্রিসিয়েট করি।

দেশী দর্শক দের নিয়ে কিছু বলুন?
আমি যখন আমেরিকাতে ছিলাম, আমার দেশী দর্শকরা আমাকে খুব মিস করেছেন। তারা
আমাকে বিভিন্ন কমেন্ট লিখেছেন। ইনবক্সে মেসেজ পাঠাতো । সব সময় বিভিন্ন
মাধ্যম থেকে জানাতো যে আমাকে খুব মিস করছেন।

সাংবাদিকতা নিয়ে কিছু বলুন?
সাংবাদিকরা শিল্পীদের কে পজিটিভ ভাবে দেখে। আর পজেটিভ ওয়েতে দেখলে
সাংবাদিক ও শিল্পীদের মধ্যে একটি সেতু বন্ধন সৃষ্টি হয়। এখন সময় অনেক
বদলেছে, পজেটিভ যে কোন কাজ করলে খুব ভাল হয়। আমি সব সাংবাদিক দের আমার
সালাম জানাই।

লস এঞ্জেলেসের কাউকে কিছু বলতে চান?
হ্যাঁ। কিছু মানুষ কে আমি ধন্যবাদ দিতে চাই। সিপার চৌধুরী ভাই, বিউটি ভাবী,
মোয়াজ্জেম চৌধুরী ভাই , আলী ভাই ও ভাবী, বশির আংকেল ও পারুল আন্টি, ফ্রেন্ডস
বাবু ভাই, এজাজ ভাই , খোকা ভাই,  কে আমার অনেক অনেক ধন্যবাদ ও
কৃতজ্ঞতা জানাই । উনারা আমার জন্য অনেক করেছেন।

যখন হলিউডে আসলেন তখন চ্যানেল আইয়ের জন্য কি কাজ করলেন?
হ্যাঁ আমি রইস ভুইয়া, হেনা মঞ্চনার নায়ক মইশেল মুসরো ইন্টারভিউ নিয়েছি।
এছাড়া জন্মদিনের কিছু কাজ করেছি। ঈদের পর সময় সুযোগ বুঝে চ্যানেল আইয়ের
পারমিশন নিয়ে ওগুলোর কাজ করবো।

সাইখ সিরাজ কি  লস এঞ্জেলেস কিছু করেছেন ?
হ্যাঁ , স্যার এখানে কৃষির উপর ডকুমেন্টরী তৈরি করেছিলে যা ইতি মধ্যে
প্রচার হয়ে গেছে।

আমেরিকাতে প্রবাসীদের নিয়ে আপনার বা চ্যানেল আইয়ের কি কোন পরিকল্পনা আছে ?
আমি পরে যখন আমেরিকা যাবো তখন প্রবাসী বাংলা কমিউনিটি নিয়ে বিশেষ একটি
অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা আছে। এবার সব কিছু গুছিয়ে যাবো।

ক্যালিফোর্নিয়ার নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের নিয়ে কি কিছু করার ইচ্ছা আছে ?
হ্যাঁ , আমার অফিসের সাথে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো । ওখানকার
বাচ্চা গুলো এত কম বাংলা বলার সুযোগ পায় , শুধু মাত্র নিজের বাসাতে, তার
পরও বাফলা, তরঙ্গ ও বৈশাখী মেলাতে ওদের পারফর্মেন্স ছিল দারুন। আমি
তাঁদের বাবা মা ও  কমিউনিটির সকলকে ধন্যবাদ জানাই বাংলা কালচার টা ওদের
মধ্যে প্রসার ঘটানোর জন্য। এরপর আমি আমেরিকা গেলে বাচ্চাদের নিয়ে
প্রোগ্রাম করবো।

আমেরিকার বাচ্চাদের কি ক্ষুদে গান রাজ বা সেরা কণ্ঠের মত কোন
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার সুযোগ আছে কি ?
সেরা কণ্ঠের সময় ঘোষণা দেয়া থাকে যে , দেশ বিদেশ থেকে রেজিস্ট্রেশন করার
জন্য । অনেকে এতে অংশ নিয়েছে এবং পারফর্মেন্স অনুযায়ী তারা অনেক দূর
গিয়েছে। তবে ক্ষুদে গান রাজ এর ব্যাপারে জেনে বলতে হবে বাইরে থেকে অংশ
নেওয়ার সুযোগ আছে কি না । যেহেতু ৬ টি মহাদেশ থেকে চ্যানেল আই দেখা যায়
তাই এ ব্যাপারে আশা করি পদক্ষেপ হতে পারে।

চ্যানেল আইয়ের ইম্প্রেস টেলিফিল্ম এর কি লস এঞ্জেলেসের হলিউডে কি কোন
মুভি করার পরিকল্পনা আছে ?
এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না। ফিল্মের বাপারটা নিয়ে কথা বলতে
চাচ্ছি না। আমাদের ডিপার্টমেন্ট গুলো আলাদা। ওটার জন্য ডিরেক্টর আছেন ।
তবে অনেক কিছুই প্লানিং আছে।



চ্যানেল আইয়ে কিভাবে আসলেন ? এতো জনপ্রিয় উপস্থাপিকা হলেন , এর পেছনে কার
কার অবদান বেশী ?


জনপ্রিয় হয়েছি কিনা জানিনা , আমার যা হয়েছে সৃষ্টি কর্তার জন্য হয়েছে।
আমার বাবা মা অসম্ভব রকমের সাপোর্ট । আমার বাবার নাম সৌমিক বড়ুয়া, মা
ঝর্না বড়ুয়া। বিশেষ করে আমার ভাইবোনরা আমাকে অনেক সহায়তা করেছে। আমার
পরিবারের সবাই সাংস্কৃতিক জগতে জড়িত । আমার বড় বোন শ্রাবণী ও তার স্বামী দেবাশীষ বড়ুয়া কানাডা থাকেন, তিনি, তার স্বামী বনফুল ও বাচ্চারা সেখানে আমাদের কালচার নিয়ে কাজ
করছেন । আবার আমার মেজ বোন ফাল্গুনী সেও চলে যাবে আমেরিকা। সে বর্তমানে
বাংলাভিশনে ডেপুটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।  আমার ভাই ডালিম কুমার
বড়ুয়া একজন মিউজিক ডিরেক্টর ও মিউজিসিয়ান । ও বিভিন্ন ইভেন্ট
ম্যানেজমেন্ট ফার্ম নিয়ে কাজ করছেন। ওর ওয়াইফ মুমু আমাকে খুব সাপোর্ট
করে। ওদের দুটি বাচ্চা আছে অরিজিত ও অহনা। আমাদের পরিবারে আরো দুটি সোনা মনি আছে প্রাপ্তি ও প্রান্তি।
আমার কাজ শেখার দুজন গুরু আছেন যারা কাজ না শেখালে আমি শিখতে পারতাম না ।
শাইখ সিরাজ ও ফরিদুর রেজা সাগর। তারা যদি আমাকে হাতে ধরে কাজ না শেখাতেন
তাহলে আমারএল এ বাংলাটাইমস এ সাক্ষাৎকার দেয়ার সৌভাগ্য হতো না। লস
এঞ্জেলেসেও কেউ আমাকে চিনতো না।
আর আমার এক খালা ছিলেন নাম কুমকুম বড়ুয়া। উনি ছোট বেলায় আমাদের নিয়ে গান
নাচ কবিতা, সুন্দর করে কথা বলা শেখাতেন । আমি লিয়াকত আলী লাকির একটি লোক
নাট্য দলে ছিলাম । সেটার হয়ে আমরা জার্মানি সফর করি।

চ্যানেল আই তে কখন যোগদান করেন?
আমি ২০০০ সালে চ্যানেল আইতে যোগদান করি । আমাকে উপস্থাপক হিসেবে তৈরি
করেন শাইখ সিরাজ ও ফরিদুর রেজা সাগর। সাপোর্ট দিয়েছে আমার ফামিলি আর
দর্শকরা । আমি তাঁদের সকলকে আমার সালাম জানাই।



উপস্থাপক কি ভাবে হলেন?
এটা একটা মজার ঘটনা। একদিন টিভিতে উপস্থাপক নেয়ার বিজ্ঞাপন দেখলে আমার
পরিবার থেকে আমাকে বলে আবেদন করতে। আমি বললাম পারব না আমি । কিন্তু ওরা
বললো, হোক না হোক আবেদন করে দেখো। তার আমি আমার মাকে সাথে নিয়ে গেলাম।
তখন আমাকে বলা হল, স্ক্রিন টেস্ট করতে হবে। আমি মাকে বললাম , কি যে হয়
বুজতে পারছি না। মা বলেন , যেটাই হোক তুমি ভাল করবে আমি জানি। সবাই আমাকে
খুব উতসাহ দিলেন। ১ লা অক্টোবর ২০০০ তারিখে চ্যানেল তে প্রথম কাজ করি।
এখন প্রায় ১৬ বছর হয়ে যাচ্ছে।

উপস্থাপক হয়ে আপনার অনুভূতি কি ?
ছোট বেলা থেকে আমি কথা বলি । কিন্তু প্রফেশন টা আমাড় এমন, এখন অনেক কথা
বলতে হয়। এখন কথা বলতে বলতে এমন হয়েছে যে , কথা না বলে থাকতে পারি না।
সবাই আমাকে অনেক ভালবাসে , অনেক আদর করে। শিল্পীরা সব্বাই এতো স্নেহ করেন
আমাকে বলে বঝাতে পারবনা।


আপনার জন্ম স্থান কোথায়?
আমার জন্মস্থান ঢাকায়। আর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম ।

আপনার লেখাপড়া কোথায় ?
সব ঢাকায়।
লস এঞ্জেলেসে মজার অভিজ্ঞতা?
মোয়াজ্জেম ভাই কে বাংলাদেশে দেখেছিলাম । কিন্তু সিপার চৌধুরী ও ভাবী কে
দেখেছিলাম না। দেখার ইচ্ছা ছিল। একদিন মোয়াজ্জেম ভাই ও ভাবী আমাকে উনাদের
বাসাতে দাওয়াত  করলেন । সেখানে শিপার ভাই ও বিউটি ভাবিকে দেখলাম।  দেখে
মনে হল যে , আমার বড় ভাই ও ভাবী আমাকে আপ্যায়ন করছে। খুব আন্তরিক অনারা ।
তারপর বশির আংকেলের সাথে দেখা অনেক দিন পর। আর অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা হলো,
মানুষ এতো দূরে থেকেও মানুষ মানুষকে এতো আপন করে নেয়। আর রইস ভুইয়া কে
দেখে ও জেনে আমি আরও অভিভুত ও গর্বিত। তিনি ক্ষমার মাধ্যমে নিজের মহত্ত্ব
প্রকাশ করেছেন।  সব কিছু মিলিয়ে সবাই অনেক অনেক ভাল।

বাংলাদেশ ও আমেরিকার জীবনে কি পার্থক্য দেখলেন ?
আমেরিকাতে সবাই যে নিয়ম টা মেনে চলে। সবাই একটা সিস্টেমে চলে। আমি রাস্তা
পার হবো সিগন্যাল আছে। সবাই ওটা মেনে চলছে। সবাই নিরাপদ ভাবে চলছে। আর
আমি কোথাও যাবো আমাকে রুল মেনে লাইন ধরে যেতে হবে । আমি অনেক ক্ষমতা শালী
কেউ , তাও আমাকে ঐ নিয়মের লাইনে থাকতে হবে। এই জিনিস গুলো আমার খুব ভাল
লেগেছে। আমি আশা করবো , আমাদের দেশে তো সব কিছু আস্তে আস্তে ভাল হচ্ছে,
আমাদের দেশেও যেন এমন নিয়ম মেনে হওয়া শুরু হয়।

কি কি মজার জিনিস দেখলেন ?
আমি হলিউডে গেছিলাম। সব চেয়ে বিস্ময়কর লেগেছে নর্থ হলিউডের যেখানে অস্কার
অনুষ্ঠান হয়, তারপর ইউনিভার্সাল স্টুডিও, গ্লিসিট পার্ক খুব ভাল লেগেছে।
সারাক্ষণ ই মজার মধ্যে ছিলাম। বিউটি ভাবী তো আমার একদম বান্ধবী হয়ে
গেছিলেন। সবাই আমাকে খুব আনন্দে রেখেছে। সবাই কে খুব মিস করি ।


 প্রবাসীদের জন্য কি করতে চান?
আসলে আমি সামান্য মানুষ। আমি কি বা করতে পারি। তবে প্রবাশিরা যদি কোন
কাজে আমাকে লাগাতে চায়, আমার সামর্থ্যের মধ্যে থাকলে আমি থাকবো তাঁদের
সাথে। আমাদের দেশের মানুষ বিদেশে গিয়ে দেশ কে যে কত ভালবাসে টা না দেখলে
বোঝা যাবে না। যেমন তরঙ্গ চেয়ার দেয়ার চেষ্টা করতেছে কাজী নজরুলের, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট
ইউনিভার্সিটি নর্থরিজে। তারা সব সময় কাজ করতে চায় কাজী নজরুল ইসলাম ও বাংলা
কালচার নিয়ে। এটা একটা বিশাল ব্যাপার । সিপার ভাই ও মোয়াজ্জেম ভাই কে আমি
ধন্যবাদ জানাই। এমন উদ্যোগের জন্য ।


আপনি চ্যানেল আইয়ের কোন কোন অনুষ্ঠানে আপনি উপস্থাপনা করছেন ?
আমি উপস্থাপনা করছি  “গানে গানে সকাল” নামে  বাংলাদেশ সময় সকাল ০৭টায়,
দুপর ১২.৩০ মিনিটে সরাসরি অনুষ্ঠান “তারকা কথন” , আর রবিবারে হয় “ওয়াল্টন
ঘরে ঘরে আমাদের পণ্য গানের উৎসব”। এটি মাঝে মাঝে করি। এছাড়া নজরুল জয়ন্তী
, রবীন্দ্র জয়ন্তী , বৈশাখী মেলা, ১৬ই ডিসেম্বর ২৬শে মার্চ , বৈশাখী
আড্ডা অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করি । চ্যানেল আইয়ের যে কোন আয়োজনে আমরা সবাই
এক সাথে কাজ করি। চ্যানেল আইয়ের কাছে আমি অনেক কৃতজ্ঞ। কারন চ্যানেল আই
না থাকলে বাংলাদেশের মিডিয়াতে আমার জন্ম হতো না।

আপনার কি উপস্থাপনার পাশাপাশি শিল্পী হওয়ার বা নাটকে অভিনয়ের কোন ইচ্ছা আছে কি ?
আমি তো সিনিয়র প্রোগ্রাম প্রডিউসার , তো আমি প্রোগ্রাম নিয়ে বেশী বাস্ত
থাকি। ওগুলো আসলে করা হয়ে ওঠেনি । আমার অনেক নাটকের অফার ছিল। কিন্তু কেন
করি নাই, চ্যানেল আইতে যখন জয়েন করি তখন একটি কথা দেয়া ছিল যে, চ্যানেল
আই ব্যতিত অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করবো না। চ্যানেল আইয়ের সেই নিয়ম টা আমি
ও আমরা মেনে চলি। চ্যানেল আইতে যারা কাজ করি তারা অন্য কোথাও কাজ করি না।
তাছাড়া আমার কাছে মনে হয়েছে , যে কোন মানুষের একটা পরিচয় থাকা ভাল। আমার
প্রোগ্রাম জিএম আমিরুল ইসলাম, প্রোগ্রাম প্রডিউসার অনন্যা রুমা, অপু ভাই,
ফারজানা ব্রাওনিয়া, সহিদুল আলম সাচ্চু, রেহানা সামদানি, ইনারা আমার কাজের
ক্ষেত্রে খুব সহযোগিতা করেন। সকল ডিরেক্টররা খুব হেল্পফুল ।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি ?
আমি বিভিন্ন সামাজিক ব্যাপার নিয়ে কাজ করতে চাই। পথ শিশু ও শারীরিক
প্রতিবন্ধি শিশুদের নিয়ে আমি কাজ করি। বিভিন্ন সচেতন মূলক কাজের জন্য
আমার অনেক গুলো প্লান আছে। বিভিন্ন গুনীজনদের নিয়ে ডকুমেন্টরী তৈরি করেছি
এবং আরও করবো।
আমার খুব খারাপ লাগে যখন দেখি আমাদের সমাজের বৃদ্ধ মানুষ গুলো শেষ বয়সে
এসে কষ্ট পাচ্ছে।  বৃদ্ধাশ্রমে থাকছে।  আমি তাদের জন্য কিছু একটা করতে
চাই। আমি একটি বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলতে চাই। আমি চাই না পরিবার চ্যুত হয়ে এই
মানুষ গুলো বৃদ্ধাশ্রমে থাকুক। তার পরও সমাজে কিছু বয়জ্যেষ্ঠ মানুষ
বিভিন্ন পরিস্থিতির শিকার হয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন তাদের জন্য আমার
হৃদয় কাঁদে । আমি চাই যেন বৃদ্ধাশ্রমের ব্যবহার যেন আমাদের সমাজে না করা
লাগে। সবাই যেন তার প্রিয়জনদের সাথে তার শেষ সময়টা কাটাতে পারে। যেহেতু
সব ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না , তাই আমার এই বয়স্ক নিবাস গড়ার খুব ইচ্ছা। সবাই
আমার এই ইচ্ছা বাস্তবায়নের জন্য দোয়া করবেন।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত