লস এঞ্জেলেসে বাফলার বর্ণাঢ্য বাংলাদেশ ডে প্যারেড এন্ড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসে ‘১৪তম বাংলাদেশ ডে প্যারেড এন্ড ফেস্টিভ্যাল’ সম্পন্ন হয়েছে। গত শনি ও রবিবার দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য এই আয়োজন করে বাংলাদেশ ইউনিটি ফেডারেশন অব লস এঞ্জেলেস (বাফলা)। প্রতি বছর এই আয়োজন করে থাকে প্রবাসী সংগঠনটি।
করোনা মহামারির কারণে দুই বছর পর এই আয়োজন করা যায়নি। তাই ২ বছর পর এই আয়োজনে অন্যরকম উচ্ছ্বাস ছিল প্রবাসীদের মাঝে।
বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রবাসী সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন লাল-সবুজের পোষাক, বাংলাদেশের পতাকা, দেশীয় নানা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী পোষাক, গ্রামীণ নানা উপকরণ নিয়ে হাজির হন প্যারেডে। দুই দিনের এই আয়োজন সম্পূর্ণ ছিল দেশীয় আমেজে। ছিল ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ড্যান্স ও বাচ্চাদের নিয়ে নানা আয়োজন।
ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠিত হয় প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত, লস এঞ্জেলেসের ভার্জিল মিডল স্কুলে। প্যারেড অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় দিন রবিবার। প্যারেডে অংশগ্রহণ করে প্রবাসী বিভিন্ন সংগঠন।
প্যারেড মার্শাল হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লস এঞ্জেলেসে পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ মিশেল মুর। প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী শিল্পপতি মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন এসেমব্লি ওমেন ক্রিস্টি স্মিথ ও লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট নুরি মার্টিনেজ। এছাড়া কমিউনিটি নেতৃবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী বলেন, মহান স্বাধীনতা আমাদের গর্বের বিষয়। আমরা সেই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করছি। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। দেশ থেকে অনেক দূরে থেকেও এখানকার প্রবাসীরা দেশকে অনুভব করেন বলে এই আয়োজন এখানে এত ঝাকজমকপূর্ণভাবে করা হয়। বাফলার এই আয়োজন এখানকার প্রবাসীদের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। এমন একটি আয়োজনের জন্য বাফলাকে অনেক ধন্যবাদ। সেই সাথে প্রবাসীদের প্রতি অনুরোধ, যখন যে অবস্থায় থাকবেন দেশকে মনে রাখবেন। দেশের মানুষের জন্য কাজ করবেন।
বাফলা প্রেসিডেন্ট শিপার চৌধুরী সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও এবারের প্যারেড আয়োজন করতে পেরে আমার সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করেছি বাফলার ঐতিহ্যের আলোকে একটি সুন্দর প্যারেড ও ফ্যাস্টিভ্যাল উপহার দেওয়ার। এতে বাফলা নেতৃবৃন্দ, ইসি কমিটি এবং সদস্য সংগঠনসহ বিভিন্ন ব্যক্তিও নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন, আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা সবার উপরে দেশকে, দেশের স্বাধীনতাকে বড় করে দেখি, তাই দেশের জন্য কিছু করতে চাই। মাতৃভূমির প্রতি এ আমাদের দায়বদ্ধতা।
অনুষ্ঠানে বাফলা পদক প্রদান করা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট মেজর (অব.) এনামুল হামিদকে। বাফলা এওয়ার্ড প্রদান করা হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট শামসুদ্দিন মানিক ও নজরুল আলমকে।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত হয় বার্ষিক স্মারক ‘অপরাজেয়’। দ্বিতীয় দিন প্রধান অতিথি মোয়াজ্জেম চৌধুরী, বাফলা প্রেসিডেন্ট শিপার চৌধুরী, জেনারেল সেক্রেটারি লে. জেনারেল (অব.) জিয়া ইসলাম, ক্যাবিনেট সদস্য ও সাবেক প্রেসিডেন্টদের নিয়ে ম্যাগাজিনের মোড়ক উম্মোচন করেন বাফলার পাবলিক রিলেশন সেক্রেটারি আব্দুস সামাদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ থেকে আগত কণ্ঠশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নি, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী শাহ মাহবুব, টেক্সাস থেকে আগত লাবনী এবং এমএ সোয়েব। প্যারেডে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে স্প্যানিশ ও কোরিয়ান ডান্স টিম।
শেয়ার করুন