আপডেট :

        শনিবার খুলছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

        বৃষ্টি কামনায় ব্যাঙের বিয়ে নিয়ে প্রচলিত আছে নানা গল্পকথা

        ১৯৩ জন নারী ও কন্যা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

        কংগ্রেসকে পাকিস্তানের ‘মুরিদ’ বলে অভিযুক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

        নোবেল জয়ী বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস

        নাফ নদীতে মাছ শিকাররত ১০জন বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ

        টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে বিশ্বকাপের উদ্দেশে যাত্রা করবে টাইগাররা

        রাজধানীতে সন্ধ্যার মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস

        রাঙ্গামাটিতে স্বস্তির বৃষ্টি নামলেও এসময় বজ্রপাতে ৩জন নিহত

        কেউ কেউ আন্দোলন করে যাচ্ছে ফিজিক্যালি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে, আমরা কাউকে বাধা দিচ্ছি না

        কেউ কেউ আন্দোলন করে যাচ্ছে ফিজিক্যালি এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে, আমরা কাউকে বাধা দিচ্ছি না

        অতি বামদের কাছে আমার প্রশ্ন, তারা আমাকে উৎখাত করে কাকে ক্ষমতায় আনবে?

        মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী

        শ্রম অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতির পর্যায়

        কক্সবাজারের পেকুয়ায় বজ্রপাতে নিহত হলেন দিদারুল ইসলাম

        ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে

        ফিরছে নিহত আট বাংলাদেশির কফিনবন্দি লাশ

        বন্যহাতির আক্রমণে কিশোরের মৃত্যু হলো

        চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে একটি মহাসড়কের অংশ ধস

        চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংডং প্রদেশে একটি মহাসড়কের অংশ ধস

ঝমকালো আয়োজনে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অভিষেক অনুষ্ঠিত

ঝমকালো আয়োজনে জালালাবাদ এসোসিয়েশনের অভিষেক অনুষ্ঠিত

লস এঞ্জেলেস প্রবাসী সিলেটিদের সর্ববৃহৎ সামাজিক সংগঠন ‘জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ক্যালিফোর্নিয়া’র ২০১৬-১৭ সেশনের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক সম্পন্ন হয়েছে। গত রবিবার (১৩ মার্চ) লসএঞ্জেলেসের ভ্যানেশিয়ান প্যালেসে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়।

অভিষেক অনুষ্ঠানে কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসের কর্মকর্তাবৃন্দ, লস এঞ্জেলেস সিটির প্রতিনিধি, জালালাবাদের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ, সমমনা বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ লস এঞ্জেলেস প্রবাসী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাংলাদেশী প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। জালালাবাদের এই অভিষেক অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রবাসীদের মাঝে বিরাজ করে এক উৎসমুখর পরিবেশ। বাংলাদেশী প্রবাসীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় লস এঞ্জেলেসের ভ্যানেশিয়ান প্যালেস।

অনুষ্ঠানের শুরুতে আমেরিকা ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এসময় সবাই দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলা এই অনুষ্ঠানে পবিত্র কোরআন থেকে তেলায়াত মাহমুদ হোসাইন (মানিক)। গীতা পাঠ করেন নেপাল পাল। বাইবেল পাঠ করেন মারভিন রোপম অধিকারী।

প্রথমে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ২০১৪-১৫ সেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুনিম। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বাংলাদেশের মহান স্বাধনীতা যুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী বীর শহিদদের স্মরণ করেন। এরপর উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। সিলেট ছাড়াও দেশের অন্যান্য জেলার বাংলাদেশী যারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন তাদেরকেও তিনি স্বাগত ও অভিনন্দন জানান। নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

২০১৪-১৫ সেশনের সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু গত সেশনের বার্ষিক প্রতিবেদন সহকারে বক্তব্য রাখেন। তিনি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে তিনি ডায়াসে দাঁড়িয়ে সিলেট প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে সাংবাদিকসহ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার যারা উপস্থিত হয়েছেন সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি গত সেশনে জালালাবাদের এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাকে প্রদান করায় তিনি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এসময় তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব পালনে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমার সাথে কমিটিতে যারা ছিলেন সবাইকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। এজন্য আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এসময় তিনি লিখিতভাবে গত দুই বছরে বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন।
ইফতার মাহফিল, বাংলাদেশ ডে প্যারেড, একুশে উদযাপন, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণ, সিলেট থেকে আগত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সংবর্ধনা ও পিকনিক ইত্যাদি কর্মকান্ড তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমি সবসময় প্রবাসীদের ঐক্যের চেষ্টা করেছি। আশা করছি এভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে আমরা আমাদের কমিউনিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, শাহজালালের পূণ্যভূমিতে জন্ম নিয়ে সত্যিই আমি গর্বিত। আমি কুলাউড়ার সন্তান। সিলেট আমার অহংকার। সারা জীবন সিলেটের মাটি ও মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চাই।
এসময় তিনি তার স্ত্রী পারভীন জামান রিমাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান তাকে সময় দেয়ার জন্য। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী যদি আমাকে সাপোর্ট না দিতেন তাহলে আমি কমিউনিটির জন্য এই কাজ করতে পারতাম না। পরিবারের সব কাজ স্ত্রী সামাল দেয়াতে আমি জালালাবাদকে সময় দিতে পেরেছি এজন্য আমি আমার স্ত্রীর প্রতিও গভীর কৃতজ্ঞ।

২০১৪-১৫ সেশনের প্রেসিডেন্ট মাহতাব আহমদ তাঁর বক্তব্যে উপস্থিত সাবইকে ধন্যবাদ জানান। তিনি নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, আমি আশা করছি এই কমিটি সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে। কারণ এখানে অত্যন্ত দক্ষ ও উদ্যমী নেতৃবৃন্দ নির্বাচিত হয়েছেন। আমার বিশ্বাস, এদের হাত ধরে জালালাবাদ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। তিনি নতুন কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এসময় তিনি তার বিগত সেশননের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। বিশেষ করে জালালাবাদের ওয়েবসাইট, 501(C) এপ্লাই করেছেন (501(C)  এর কারণে এখন থেকে জালালাবাদের সকল অনুদান ট্যাক্সের আওতামুক্ত থাকবে)।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার গোলাম কিবরিয়া তাঁর বক্তব্যে বলেন, জালালাবাদের কমিটি নির্বাচনের এমন দায়িত্ব দেয়ার জন্য আমি এসোসিয়েশনের প্রতি কৃতজ্ঞ। যদি এতে কোনো ভুল হয়ে থাকে তবে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি একটি সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়ার। আপনাদের সহযোগিতায় তা সম্ভবও হয়েছে এজন্য সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

নির্বাচন কমিশনার আবুল হাসনাত রায়হান তাঁর বক্তব্যে বলেন, সিলেটীরা প্রবাসী কমিউনিটির ঐক্যের প্রতীক। এখানে জালালাবাদবাসী যে ঐক্যের নজির স্থাপন করেছেন তা সত্যিই বিরল। যেকোনো পদে নির্বাচন করার সবার যোগ্যতা আছে। কিন্তু সবাই নির্বাচনে না দাঁড়িয়ে অপরকে সমর্থন দেন।  অন্যকে সুযোগ দেয়ায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা লাগেনি। এটা হচ্ছে আমাদের সিলেটিদের আন্তরিকতার প্রমাণ। আশা করি এই ভ্রাতৃত্ব অটুট থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাবো।

অপর নির্বাচন কমিশনার বদরুল আলম সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জালালাবাদ প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করছে। যা আমাদের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য। আমি আশা করছি নতুন এই কমিটির মাধ্যমে জালালাবাদ আরোও এগিয়ে যাবে।

এরপর নির্বাচন কমিশনার আবুল হাসনাত রায়হান একে একে নির্বাচতি সকল নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণা করে মঞ্চে ডেকে নেন।  নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ পাঠ করান প্রধান নির্বাচন কমিশনার গোলাম কিবরিয়া। শপথ গ্রহণের পর আমেরিকান বাংলাদেশী নুতন প্রজন্ম ফুলের তোড়া দিয়ে নেতৃবৃন্দকে বরণ করে নেয়।

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক নজরুল আলম তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম.এ.জি ওসমানীসহ সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাকে স্মরণ করেন এবং তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এরপর তিনি নির্বাচন কমিশন, নতুন কমিটি, পুরাতন কমিটি, অনুষ্ঠানের অতিথিসহ উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। বিশেষ করে তাকে এই পদে নির্বাচিত করায় তিনি জালালাবাদবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এসময় তিনি সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কমিউনিটির সেবা করতে সময় দেয়ায় তিনিও তার স্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।

লস এঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট Herb J. Wesson Jr এর ডেপোটি রাউল কর্লোস তাঁর বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ জানান তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য। বিশেষ করে সিলেটবাসীর এই আয়োজনে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন বলে জানান।  এসময় তিনি জালালাবাদের নবনির্বাচিত সভাপতি আনওয়ার হোসেন রানা ও সেক্রেটারি নজরুল আলমকে সিটি কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট Herb J. Wesson Jr এর পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট প্রদান করেন।

ডিস্ট্রিক-৩০ থেকে ইউএস কংগ্রেসপ্রার্থী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কায়ছার আহমেদ তার বক্তব্যে জালালাবাদের নেতৃবৃন্দকে তাকে বক্তব্যের সুযোগ দেয়ায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমাদের প্রবাসীরা দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। যেভাবে দেশে বিদেশে সিলেটীরা নিজেদেরকে তুলে ধরছেন এরই ধারাবাহিকতায় একসময় আমেরিকারও বড় বড় অবস্থানে আসীন হবেন সিলেটের কৃতি সন্তানরা। তিনি ব্যক্তিগতভাবে কমিউনিটিকে সবধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এসময় তিনি কমিউনিটির কাছে তার নির্বাচনের জন্য দোয়া কামনা করেন এবং তিনি সবার কাছে অনুরোধ করেন যে, সবাই যেন নিজেরেদ আত্মীয় ও পরিচিতিজনকে তাকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেন।

ডিস্ট্রিক-৩১ থেকে ইউএস কংগ্রেসপ্রার্থী ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত রাজি রব বলেন, আমার জন্মস্থান হচ্ছে ভারত। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশি তাই এখাকার প্রবাসী কমিউনিটিকেও আমি আমার নিজের বলে মনে করি। আমি সবসময় আপনাদের পাশে আছি এবং থাকাবো। তিনিও নির্বাচনের জন্য সবার সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন। এখানে সুযোগ দেয়ায় জালালাবাদবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানান।  

হেমটামিক সিটি কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট, ডেপোটি মেয়র, সিলেটের কৃতি সন্তান শাহাব আহমদ বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। এসময় তিনি বলেন, জালালাবাদ এবং বাংলাদেশী ছাড়াও আমেরিকান কমিউনিটির সাথে আমাদের আরও সম্পৃক্ত হতে হবে। যাতে আগামীতে আমেরিকার রাষ্ট্রীয় ও প্রসাশনের বড় বড় পদে দাঁড়াতে পারে বাংলাদেশীরা। বিশেষ করে আগামী প্রেডিন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প যেভাবে মুসলমান ও অভিবাসীদের ব্যাপারে একের পর এক কটাক্ষ করে আসছেন। এর প্রতিবাদ করতে হবে ভোটের মাধ্যমে। তাই আমাদের সাবইকে ভোটার হতে হবে।

লসএঞ্জেলেস সিটি মেয়রের প্রতিনিধি ইউসুফ রব তার বক্তব্যে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনিও ৭টা সার্টিফিকেট জালালাবাদের সাবেক বর্তমান নেতৃবৃন্দকে প্রদান করেন। কমিউনিটির সেবায় নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে সার্টিফিকেট অর্জন করেন জালালাবাদের বর্তমান সভাপতি আনওয়ার হোসেন রানা, সেক্রেটারি নজরুল আলম, সদ্যসাবেক সভাপতি মাহতাব আহমেদ, সেক্রেটারি বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আলী আহমদ ফারিস, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মুনিম ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান।

পুলিশ পারমিট রিভিই প্যানেলের কমিশনার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মারুফ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, যারা অনেক কষ্ট করে এই আয়োজন করেছেন সবার প্রতি আমার অশেষ ধন্যবাদ। বিশেষ করে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর কারণে আমি আপনাদের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞ। এসময় তিনি বাংলাদেশী কমিউনিটির ইউনিটির প্রসংশা করেন। তিনি বলেন, কমিউিনিটির যাত্রা কিন্তু এখনও অনেক পথ বাকি। বাংলাদেশী প্রবাসীদের আমেরিকার মূল ধারার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হতে হবে। নতুন প্রজন্মকে আরও সচেতন করে তুলতে হবে। আমেরিকা হচ্ছে ‘ড্রিম অব কান্ট্রি’। নতুন প্রজন্মকে সচেতন করে তুলতে পারলে তারা একসময় এখানে মেয়র হবে, কাউন্সিলর হবে, কংগ্রেসম্যান হবে, এমনকি প্রেসিডেন্টও হতে পারে। কারণ তাদের প্রতিভা আছে। বর্তমানে আমেরিকায় যেভাবে মুসলমান এবং অবিভাসীদের লাঞ্চনা বঞ্চনা করা হচ্ছে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। নতুন প্রজন্ম তা পারবে এটা আমার বিশ্বাস।

লস এঞ্জেলেস নবনিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল প্রিয়তোষ সাহা বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড  তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই এগিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রবাসীরার যথেষ্ট অবদান রাখছেন। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান। কনসাল জেনারেলের সাথে উপস্থিত ছিলেন, ভাইস কনসাল মোহাম্মদ ইদ্রিস, সাবেক ভাইস কনসাল শামীম আহমদ ও কমার্শিয়াল কনসাল মনিরুজ্জামান।

অনুষ্ঠানের ঘোষিত প্রধান অতিথি কালীপ্রদীপ আমেরিকার বাইরে থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। তখন সর্বজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষাবীদ অধ্যাপক শামীম চৌধুরীকে প্রধান অতিথি করা হয়। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে নিজেকে সিলেটী হিসেবে বারবার পরিচয় দেন। এসময় তিনি আবেগতাড়ি হয়ে কয়েকবার ‘আমি সিলেটী হিসেবে গর্বিত’ বলে উচ্চারণ করেন। তিনি আরও বলেন,  ১০০ বছর আগে সিলেটিরা লন্ডনে প্রবেশ করেছিল বলে আজ সেখানকার মূল কমিউনিটির সাথে তাল মিলিয়ে সিলেটিরাও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। সেখানকার সংসদেও সিলেটি প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। শুধু লন্ডন নয় পুরো বিশ্বে সিলেটীরা ছড়িয়ে আছে। বাংলাদেশে যা রেমিটেন্স যায় যার অর্ধেক প্রায় শুধু সিলেটীরা পাঠিয়ে থাকে।  সিলেটের অইেশ ঐতিহ্যও রয়েছে। বর্তমানে ঢকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির নামও শাহজালাললের নামে। এখানে সিলেটিদের এই সংগঠনের নামও শাহজালালালের নামেই দেয়া হয়েছে। তাই সিলেট এসোসিয়েশন না হয়ে জালালাবাদ এসোসিয়েশন হয়েছে। এটাই সিলেটীদের ঐতিহ্যবোধের পারিচায়ক। এভাবে ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে চললে অনেক দূর এগুনো যাবে।

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আনওয়ার হোসেন রানা তাঁর বক্তব্যে বলেন, সিলেট হচ্ছে ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতিধন্য পূণ্যভূমি। এই সিলেটেই আমাদের জন্ম। তাই আমরা গর্বিত। আজ এখানেও সিলেটিদের মিলনমেলা বসেছে। আমি উপস্থিত সবাইকে আজকের এই আয়োজনে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আর সুন্দরভাবে এই এসোসিয়েশন পরিচালনার জন্য সবার সহযোগিতা কামান করছি।

অভিষেক উপলক্ষে ‘সুরমা’ নামে একটি স্মারক প্রকাশ করে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব ক্যালিফোর্নিয়া। অথিতিবৃন্দের বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি মঞ্চে ডেকে নেন সুরমা’র সম্পাদক ও এসোসিয়েশনের প্রচার সম্পাদক আব্দুস সামাদ, সম্পাদনা পরিষদের সদস্য সৈয়দ নাসির উদ্দিন জেবুল ও মো. আব্দুল মোনিমকে। তাদের নিয়ে অতিথিরা স্মারকটির মোড়ক উন্মোচন করেন। স্মারকটি সবার কাছে খুব প্রসংশনীয় হয়।

এরপর এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অতিথিবৃন্দ উপদেষ্টা পরিষদের ১১ জন সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল হাই, আতিক জামান, সালিক সুবহান, আব্দুল মালিক, মোহাম্মদ এ হান্নান, খায়রুল আই চৌধুরী, শফিকুর রহমান, এম.এ হামিদ খোকন, শিপার চৌধুরী, আহমেদ কবির, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি মাহতাব আহমেদ, সেক্রেটারি বদরুল আলম চৌধুরী শিপলু এবং ৩জন নির্বাচন কমিশনারের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। পূর্বঘোষিত প্রধান অতিথি কালীপ্রদীপের পক্ষে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন কমিউনিটি নেতা শামসুদ্দিন মানিক। পূর্বঘোষিত বিশেষ অতিথি মোয়জ্জেম হোসেন চৌধুরীর পক্ষে ক্রেস্ট গ্রহণ করেন তরঙ্গ অব ক্যালিফোর্নিয়ার সভাপতি শিপার চৌধুরী ও মেজর এনামুল হামিদ। সুলতানা লায়লা হোসেনের পক্ষে মোহাম্মদ ইদ্রিস ক্রেস্ট গ্রহণ করেন।

প্রবাসী শিল্পীদের অংশ গ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে অভিষেক অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়। নৃত্য পরিবেশন করেন এনি ও ইশা। গান পরিবেশন করেন বিউটি দাস ও রামশংকর তসিলদার।

সবশেষে অতিথিদের সম্মানে খাবার-দাবারেরও আয়োজন ছিল অনুষ্ঠানে।

উল্লেখ্য, জালালাবাদের নবনির্বাচিতন কমিটির নেতৃবৃন্দ হলেন, সভাপতি: আনওয়ার হোসাইন রানা, সহ-সভাপতি: ফয়জু সুবহান, আসাদুজ্জামান ও কাজল নুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক: মোহাম্মদ নজরুল আলম,
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক: সৈয়দ নাসির উদ্দিন জেবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক: সিদ্দিকুর রহমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক: নিজাম সুবহান, অর্থ সম্পাদক: শাহজাহান আহমদ, প্রচার সম্পাদক: আব্দুস সামাদ, সমাজ ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক: লায়েক আহমদ,
 সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক: মো. ফখরুল ইসলাম, খেলাধুলা বিষয়ক সম্পাদক: আব্দুল হাই, যুব বিষয়ক সম্পাদক: শাহিন হক, সহ-যুব বিষয় সম্পাদক: জহুরুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক: মরফিয়া আকসাদ।
কার্যনির্বাহী সদস্য: মাতাব আহমদ, জাসিম আশরাফি, বদরুল আলম চৌধুরী, আব্দুল বাসিত, আলি আহমদ ফারিশ, ফেরদৌস খান, নুরুজ্জামান জামান, মো. আব্দুল মুনিম ও আব্দুল আহাদ।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত