সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে ক্ষুধা, দারিদ্রতা ও কুসংস্কারকে মোকাবেলা করতে -ড. মুহম্মদ ইউনুস
নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামীর পৃথিবীকে সুন্দর, সমৃদ্ধ ও দারিদ্র্যমুক্ত করতে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরই দায়িত্ব নিয়ে এ পৃথিবীকে নতুন করে সাজাতে হবে। সুশিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি সামজিক ব্যবসার মাধ্যমে ক্ষুধা, দারিদ্রতা ও সকল কুসংস্কারকে মোকাবেলা করতে হবে। তিনি গত শনিবার রাতে লস এঞ্জেলসে এক সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সদ্য প্রতিষ্ঠিত এঞ্জেলসে লিটল বাংলাদেশ ইমপ্রুভমেন্ট ইনক এর ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।লস এঞ্জেলসের হলিউডের ইউনিভার্সেল স্টুডিও’র শেরাটন হোটেলে লিটল বাংলাদেশ ইমপ্রুভমেন্ট ইনক চেয়ারম্যান লেখিকা জেসমিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনায় বাংলাদেশি ছাড়াও আমেরিকা, ভারত, ফিলিপাইন, চীন, ম্যাক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। এতে লস এঞ্জেলসের মেয়র এরিখ গাসিটির একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। সভায় ডেপুটি মেয়র রিখ কোল ড. ইউনূস ও লিটল বাংলাদেশ এর বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। সভায় বেশ কয়েকজন কংগ্রেসম্যান বক্তব্য রাখেন।অন্যান্যের মধ্যে লিটল বাংলাদেশ ইমপ্রুভমেন্ট ইনক এর নির্বাহী পরিচালক মুজিব সিদ্দিকী, মিকাইল খান বক্তব্য রাখেন। লস এঞ্জেলস এর ডেপুটি মেয়র রিখ ড. মুহম্মদ ইউনূসের হাতে লিটল বাংলাদেশের অনারারী গভর্নরের সম্মাননাপত্র ও চাবি তুলে দেন। প্রফেসর ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রোপট এবং এর মাধ্যমে ুদ্র ঋণ প্রদানের পাশাপাশি সেনিটেশনসহ আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের নানা উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি সোশ্যাল বিজনেস এর উপর দীর্ঘ লেকচার প্রদান করেন। সোসাল বিজনেস নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বর্ণনা করেন, ১৯৮৩ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠিত করেন। বর্তমানে তার পুঁজি সাড়ে আট বিলিয়ন ডলারে রুপান্তরিত হয়েছে। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শতকরা ৯৭ ভাগই নারী।তিনি বলেন, আমি যখনই কোন সমস্যার সন্ধান পেয়েছি তখনেই বিজনেসের মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করেছি।তিনি আরও বলেন, সমস্যামূলক সমাধানের ব্যাবসায় ব্যাক্তিগত কোন লাভ্যংশ গ্রহণ করা হয় না। সমাধানের পথ সৃষ্টি করাই তাদের ল্য এবং উদ্দেশ্য। নি:স্বার্থভাবে মানবকল্যাণে মাইক্রো ক্রেডিট প্রকল্প নির্মাণ করেছেন। ড. ইউনূস গ্রামীণ পদ্ধতিতে সামাজিক ব্যাবসার ফান্ড সৃষ্টি করেছেন। তিনি ব্যাবসাকে দুই ভাবে বিভক্ত করেছেন। সামাজিক ব্যাবসা ও শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনের ব্যাবসা।সামাজিক সমস্যাকে ব্যাবসায়িক ভাবে রূপদানের উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, যেখানেই গরীব মানুষ রয়েছে, সেখানেই অসুস্থ্য মানুষের অবস্থান রয়েছে। পুষ্টিহীনতার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের কোম্পানী সৃষ্টিতে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক ব্যাবসার পথ সৃষ্টি করার আহ্বান জানান।
শেয়ার করুন