১৯৮৭ সালে নিখোঁজ হওয়া ক্যালিফোর্নিয়ার এক নারীর খণ্ডিত খুলি শনাক্ত
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
১৯৯৩ সালে পাওয়া একটি মানব খুলি ডিএনএ বিশ্লেষণের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছে ১৯৮৭ সালে নিখোঁজ হওয়া ক্যালিফোর্নিয়ার উত্তরাঞ্চলের এক নারীর অংশ হিসেবে। হম্বোল্ট কাউন্টি কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই নারীর নাম কাই জোসেফিন মেডিন, বয়স ছিল ৪৮ বছর।
১৯৮৭ সালের আগস্টে কাই নিখোঁজ হওয়ার পর তার স্বামী নিকোলাস মেডিন পুলিশকে জানান যে, তিনি ব্যবসায়িক সফরে গিয়েছিলেন এবং ফিরে এসে স্ত্রীকে আর বাসায় পাননি। তদন্তে জানা যায়, কাই ছিলেন হায়াম্পম স্কুলের একজন শিক্ষক এবং তার সহকর্মীরা বলেছিলেন, নিখোঁজ হওয়ার আগে তিনি ভালো মেজাজেই ছিলেন।
সন্দেহজনক নিখোঁজের ঘটনা ও রহস্যজনক প্যাকেট
তদন্তে কাইয়ের পার্স ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র বাড়িতে পাওয়া যায়, তবে তার কোনো খোঁজ মেলেনি। ফলে ট্রিনিটি কাউন্টি শেরিফ অফিস তার নিখোঁজ হওয়াকে "সন্দেহজনক" হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।
এর কিছুদিন পর, ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে হম্বোল্ট কাউন্টি শেরিফের দপ্তরে একটি প্যাকেট আসে, যাতে কঙ্কালের কিছু অংশ এবং একটি বেনামী চিঠি ছিল। চিঠিতে কাউন্টির পূর্ব অংশে আরও দেহাবশেষের অবস্থান জানানো হয়। তদন্তকারীরা গিয়ে সেই দেহাবশেষ উদ্ধার করেন এবং দাঁতের রেকর্ড ব্যবহার করে নিশ্চিত হন যে সেটি কাই মেডিনেরই দেহ। ১৯৮৮ সালে তার মৃত্যু সনদ ইস্যু করা হলেও, পুরো দেহ না পাওয়ায় তিনি "নিখোঁজ" হিসেবেই তালিকাভুক্ত ছিলেন।
সমুদ্রতটে পাওয়া খুলি ও আধুনিক ডিএনএ বিশ্লেষণ
১৯৯৩ সালে ট্রিনিদাদ হেডের কাছে এক ব্যক্তি সমুদ্র সৈকতে হাঁটার সময় একটি খণ্ডিত মানব খুলি খুঁজে পান এবং তা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। সে সময় ডিএনএ পরীক্ষায় কোনো মিল পাওয়া যায়নি।
এরপর দীর্ঘদিন পর, ২০২৪ সালে অজ্ঞাত দেহাবশেষ শনাক্তকরণ প্রকল্পে অর্থায়ন পেয়ে হম্বোল্ট কাউন্টি শেরিফ অফিস খুলি পাঠায় একটি বেসরকারি ল্যাবে। ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করে ফরেনসিক জেনেটিক জেনেওলজি পদ্ধতিতে সম্ভাব্য আত্মীয় খুঁজে পাওয়া যায়—একজন সম্ভাব্য কন্যার তথ্য মেলে।
ডিএনএ মিলিয়ে পরিচয় নিশ্চিত
“তদন্তকারীরা সেই কন্যার সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন,” জানায় কর্তৃপক্ষ। পরে ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস ডিএনএ নমুনা দুটি মিলিয়ে নিশ্চিত করে যে খুলি কাই মেডিনেরই।
আজও রহস্যে ঢাকা মৃত্যু
তার নিখোঁজ হওয়া ও মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়নি বা কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। কাইয়ের স্বামী নিকোলাস মেডিন ২০১৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
এই দীর্ঘ তদন্ত ও আধুনিক প্রযুক্তির সহযোগিতায় অবশেষে ৩৭ বছর পর মিলল নিখোঁজ কাই মেডিনের পরিচয়।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন