১৩ মিলিয়ন ডলারের ফেডারেল প্রতারণা মামলায় ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির দোষ স্বীকার
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
হলিউড হিলসের এক সাবেক বাসিন্দা, যিনি “ভিনসেন্ট মিডনাইট” ও “ডিরেক্টর ভিনচেঞ্জো” নামেও পরিচিত ছিলেন, তিনি সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে একটি বড় মাপের ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগ প্রতারণার মামলায় দোষ স্বীকার করেছেন।
ভিনসেন্ট অ্যান্থনি মাজ্জোত্তা জুনিয়র (৫৪), বর্তমানে অ্যারিজোনায় বসবাস করছেন, তিনি মানি লন্ডারিং এবং ন্যায়বিচার ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র করার দুটি ফেডারেল অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন।
প্রসিকিউটররা জানান, মাজ্জোত্তা ও তার সহযোগী ডেভিড স্যাফরন মিথ্যা বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতেন—তারা বলতেন, স্বয়ংক্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা বিশাল মুনাফা পাবেন। পরে তারা প্রতারণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায় একটি নকল সরকারি সংস্থা তৈরি করে।
এই দোষ স্বীকারের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট অব ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি বিলাল এ. এসসালি।
ভিনসেন্ট মাজ্জোত্তার রায় ঘোষণার তারিখ: ১৫ ডিসেম্বর।
মানি লন্ডারিংয়ের সর্বোচ্চ শাস্তি: ১০ বছর
ন্যায়বিচার ব্যাহত করার সর্বোচ্চ শাস্তি: ৫ বছর
কীভাবে প্রতারণা করা হয়?
আদালতের নথি অনুযায়ী, মাজ্জোত্তা ও স্যাফরন মানুষের কাছ থেকে অর্থ তুলেছিলেন এই বলে যে, Mind Capital এবং Cloud9Capital নামে কোম্পানিগুলোতে তাদের বিনিয়োগ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত ট্রেডিং বট দ্বারা পরিচালিত হবে।
কিন্তু বাস্তবে তারা একটি পনজি স্কিম চালিয়েছেন—যেখানে নতুন বিনিয়োগকারীদের অর্থ পুরনোদের দেওয়া হয়, এবং বড় অংশ ব্যক্তিগত কাজে ব্যয় করা হয়।
কোম্পানিগুলো ভেঙে পড়ার পর, তারা Federal Crypto Reserve (FCR) নামে একেবারে মিথ্যা একটি সংস্থা তৈরি করেন। এরপর আবারও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে বলেন, FCR ওই ব্যর্থ কোম্পানিগুলোর তদন্ত করবে—যদিও বাস্তবে সেই কোম্পানিগুলোর পেছনেও ছিলেন তারাই।
কী বলছেন কর্মকর্তারা?
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের অপরাধ বিভাগীয় সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাথিউ গ্যালিওটি বলেন,
“ভিনসেন্ট মাজ্জোত্তা এক জটিল ক্রিপ্টো প্রতারণার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়েছেন এবং পরে নকল সরকারি সংস্থা বানিয়ে আরও প্রতারণা করেছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি এসসালি বলেন, “বিটকয়েন বা অন্যান্য নতুন ধরনের বিনিয়োগ আকর্ষণীয় মনে হতে পারে, কিন্তু অপরাধীরা এগুলোর অজানা দিক ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ঠকাতে পারে। সতর্কতাই সর্বোত্তম প্রতিরক্ষা।”
তদন্তের সময় বাধা সৃষ্টি
প্রসিকিউটররা জানান, ডেভিড স্যাফরন প্রথম গ্রেপ্তার হওয়ার পর, মাজ্জোত্তা প্রমাণ লোপাটে লিপ্ত হন।
তিনি স্যাফরনের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একটি iPad ও একটি সেফের ভেতরের জিনিস সরিয়ে ফেলেন।
এছাড়া, নিজের কোম্পানি Runway Beauty Inc.-এর নথিপত্র জাল করে নিজের সম্পৃক্ততা লুকানোর চেষ্টা করেন।
তদন্ত ও মামলা পরিচালনা
এই মামলার তদন্ত পরিচালনা করেছে IRS Criminal Investigation (IRS-CI)।
তাদের লস অ্যাঞ্জেলেস ফিল্ড অফিসের স্পেশাল এজেন্ট টাইলার হ্যাচার বলেন, “এই মামলার অভিযুক্তরা নিজেদের মার্কিন সরকারি সংস্থা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করেছে। আজকের দোষ স্বীকার প্রমাণ করে, আমরা জটিল আর্থিক অপরাধ উন্মোচনে অঙ্গীকারবদ্ধ।”
এই মামলায় সরকার পক্ষের মামলা পরিচালনা করছেন
মেজর ফ্রড সেকশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউএস অ্যাটর্নি জেমস সি. হিউজ, ক্রিমিনাল ডিভিশনের ফ্রড সেকশনের ট্রায়াল অ্যাটর্নি থিওডর নেলার এবং সিজি মুর।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন