মিশনারি পরিবারের ছেলে অভিযুক্ত, লস এঞ্জেলেসে ভয়াবহ পাহাড়ি আগুন লাগানোর অভিযোগ
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
লস এঞ্জেলেসের প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকায় ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মিশনারি পরিবারের এক ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করলেও জানা গেছে, তিনি একজন উবার চালক এবং মানসিকভাবে অস্থিতিশীল ছিলেন বলে ধারণা করছে কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহে লাগা এই আগুনে পুরো পাহাড়ি এলাকা লেলিহান শিখায় পুড়ে যায়। আগুনের কারণে শতাধিক বাসিন্দাকে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে হয়। লস এঞ্জেলেস ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানায়, আগুনটি ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হয়েছিল এবং এটি দ্রুত আশেপাশের শুকনো গাছপালা ও ঝোপঝাড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আগুন লাগার কিছুক্ষণ আগে এক ব্যক্তিকে পাহাড়ের ঢালে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়, যিনি পরে অভিযুক্ত হিসেবে শনাক্ত হন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন, তবে কয়েক একর পাহাড়ি এলাকা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
পুলিশের তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন মিশনারি পরিবারের সন্তান। তার বাবা-মা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় কাজে যুক্ত ছিলেন। কয়েক বছর আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে লস এঞ্জেলেসে বসবাস শুরু করেন এবং সম্প্রতি উবার চালক হিসেবে কাজ করছিলেন।
প্রতিবেশীদের মতে, তিনি বেশিরভাগ সময় একা থাকতেন এবং মাঝে মাঝে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন। কেউ কেউ জানান, আগুন লাগার কয়েক দিন আগেও তাকে পাহাড়ের গাছপালার মধ্যে কিছু একটা খুঁজতে দেখা গেছে।
লস এঞ্জেলেস পুলিশ জানিয়েছে, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে “ইচ্ছাকৃত অগ্নিসংযোগ,” “সম্পত্তি ধ্বংস,” এবং “জননিরাপত্তা বিপন্ন করা।” বর্তমানে তিনি লস এঞ্জেলেস কাউন্টি জেলে রয়েছেন, এবং তার জামিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ লাখ ডলার।
ফায়ার ডিপার্টমেন্টের একজন মুখপাত্র বলেন, “এই আগুনটি যদি আরও কিছু সময় ধরে নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকত, তাহলে পুরো প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকা ধ্বংস হয়ে যেতে পারত।”
তদন্তকারীরা এখন আগুন লাগানোর কারণ ও উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখছেন। পুলিশ বলছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি মানসিক চিকিৎসার আওতায় ছিলেন কি না, সেটিও তদন্তের অংশ হিসেবে দেখা হবে।
লস এঞ্জেলেস সিটি মেয়র এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি শুধু সম্পত্তি ধ্বংসের ঘটনা নয়, এটি মানুষের জীবনের ওপর সরাসরি হামলা।”
বর্তমানে পুরো এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি রোধে অতিরিক্ত টহল জোরদার করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার করুন