আপডেট :

        একনেকে ১১ প্রকল্পের অনুমোদন

        স্টেকহোল্ডারদের অংশগ্রহণে সিকৃবিতে আলোচনা সভা

        বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাস করে না: ওবায়দুল কাদের

        নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মৃত্যু

        বিচারকবিহীন আদালত

        বাংলাদেশের গণতন্ত্র এগিয়ে নেওয়াই যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার

        সাবেক সংসদ সদস্য নজির হোসেনের মৃত্যু

        জাতীয় ছাত্র সমাজের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

        দ্বিতীয় টেস্টে নেই হাথুরু

        ‘ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডস বাংলা ২০২৪’

        গাজায় বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি: মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

        আত্মনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার চেষ্টা করতে হবে: সিসিক মেয়র

        রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় বেপরোয়া কিশোর গ্যাং

        মস্কো কনসার্ট হামলায় পশ্চিমা বিশ্ব ও ইউক্রেনের ইন্ধনের অভিযোগ রাশিয়ার

        র‍্যাবের পৃথক অভিযান, ১২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

        পদ্মা সেতুতে ভুটানের রাজা

        মার্কিন কূটনীতিককে তলব

        স্বাধীনতা দিবস বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের ফসল: প্রতিমন্ত্রী

        সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে: সংসদ স্পিকার

        বাল্টিমোর সেতু দুর্ঘটনা ভয়াবহ: বাইডেন

ভূমিকম্প মানুষের জন্য সতর্কবার্তা

ভূমিকম্প মানুষের জন্য সতর্কবার্তা

  
আজও দুপুর সোয়া একটার দিকে (২৬ এপ্রিল, ২০১৫) রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে শনিবার (২৫ এপ্রিল, ২০১৫) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এক মিনিটেরও বেশি স্থায়ীত্বের ভূমিকম্পে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি বহুতল ভবন হেলে পড়েছে। ভূমিকম্পের আতঙ্কে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

পাশ্ববর্তী দেশ ভারত পাকিস্তান ও নেপালে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পে সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে নেপাল। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৮০০ ছাড়িয়েছে। দেশটির সরকারি এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রোববার সকালে বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লক্ষ্মী প্রসাদ ধকল এএফপিকে বলেন, ‘শনিবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮০৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া আহত হয়েছে অন্তত ৪ হাজার ৭১৮ জন।’

ভূমিকম্পে ধসে পড়া ভবনগুলোর ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়ে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত আছে। মৃতের সংখ্যা  আরও বাড়তে পারে।’

আজ ও গতকাল সংঘটিত ভূমিকম্পের মতো প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের ওপর নেমে এসেছে এমন হাজারো দুর্যোগ ও বিপর্যয়। ভূমিকম্প, ভূমিধস, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা-সুনামিসহ নানা বিপর্যয় ও দুর্যোগে বিভিন্ন সময় প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ।

অনেকে বলে থাকেন, এগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রকৃতির খেলা, প্রকৃতির আক্রোশ, মানুষের বিরুদ্ধে প্রকৃতির প্রতিশোধের বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু পবিত্র কোরআনে কারিম ও হাদিস থেকে বুঝে আসে এসব আল্লাহর কুদরতের উজ্জ্বল নিদর্শন। এসবের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা অপরাধীদের শাস্তি দেন। প্রিয় বান্দাদের পরীক্ষা করেন। জীবিতদের জন্য তা হয় শিক্ষা। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘এ রূপই তোমার প্রতিপালকের শাস্তি। তিনি শাস্তি দেন জনপদবাসীদের, যখন তারা জুলুম করে। নিশ্চয়ই তার শাস্তি যন্ত্রণাদায়ক কঠিন।’ -সূরা হুদ : ১০২

পবিত্র কোরআনে কারিমে অন্য আরেক আয়াতে সুস্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে, মানুষের পাপকর্মের কারণেই জলে-স্থলে দুর্যোগ ও বিপর্যয় দেখা দেয়। এ বিষয়ে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণেই স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। যেন তিনি তাদেরকে তাদের কোনো কোনো কর্মের শাস্তি আস্বাদন করান। যাতে তারা ফিরে আসে।’-সূরা রুম : ৪১

ইতিহাসে উল্লেখ আছে, অতীতকালে বিভিন্ন অবাধ্য জাতিকে আল্লাহতায়ালা ভূমিকম্প, ভূমিধস ও এ জাতীয় নানাবিধ শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করেছেন। এসব পবিত্র কোরআনে উল্লেখ রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের প্রত্যেককেই আমি তার অপরাধের জন্য শাস্তি দিয়েছিলাম। তাদের কারো প্রতি আমি প্রেরণ করেছি পাথরসহ প্রচণ্ড ঝটিকা। তাদের কাউকে আঘাত করেছিল বিকট আওয়াজ, কাউকে ভূমিতে বিধ্বস্ত করেছি। কাউকে করেছি নিমজ্জিত। আল্লাহ তাদের প্রতি জুলুম করেননি। বরং তারা নিজেরাই নিজেদের প্রতি জুলুম করেছে।’ -সূরা আনকাবুত : ৪০

পবিত্র কোরআনের অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি কারুনকে তার প্রাসাদসহ ভূগর্ভে বিধ্বস্ত করলাম। তার পক্ষে এমন কোনো দল ছিল না, যারা তাকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারে এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না।’

প্রকৃতপক্ষে এ ধরনের দুর্যোগ আমাদের সবার জন্য সতর্ক সংকেত। আমরা অহরহ পাপাচারে লিপ্ত থাকি। এসব পাপাচারের জন্য যেকোনো মুহূর্তে আল্লাহর শাস্তি আমাদের ধ্বংস করে দিতেই পারে। ঝড়, ভূমিকম্প, বন্যা যেকোনো বিপর্যয়ে যেকোনো মুহূর্তে আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারি। মাঝেমধ্যেই দুর্যোগ দিয়ে আল্লাহতায়ালা সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক করে দেন। আমরা যেন নিঃশঙ্ক হয়ে নির্ভয়ে না থাকি। সদা-সর্বদা যেন সাবধান থাকি, সেটাই এসবের উদ্দেশ্য। পবিত্র কোরআনে কারিমের একাধিক আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট ভাষায় বলে দেয়া হয়েছে।

বস্তুত আমাদের গুনাহের কারণে ভূমিকম্প, বন্যা, ঝড়সহ অন্যান্য দুর্যোগ এসে থাকে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর বর্ণিত হাদিস থেকে বুঝে আসে, এসব দুর্যোগ কিয়ামতের আলামতও বটে।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, গনিমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) যখন ব্যক্তিগত সম্পদ বলে গণ্য হবে, জাকাতকে জরিমানা গণ্য করা হবে, দীনি উদ্দেশ্য ছাড়া (পার্থিব উদ্দেশ্যে) ইলম (জ্ঞান) অর্জন করা হবে। মসজিদে শোরগোল হবে, পাপাচারীরা গোত্রের নেতা হবে, নিকৃষ্ট লোকেরা সমাজের নেতা হবে, অনিষ্টের আশঙ্কায় কাউকে সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের বিস্তার ঘটবে, মদ্যপান করা হবে, এ উম্মতের শেষযুগের লোকেরা প্রথম যুগের লোকদের অভিশাপ দেবে, তখন তোমরা অপেক্ষা করবে অগ্নিবায়ু, ভূমিকম্প, ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি, পাথর বর্ষণের আজাব এবং আরো অনেক (কিয়ামতের) আলামতের; যা একের পর এক নিপতিত হতে থাকবে। যেমন একটি পুরনো মালার সুতো ছিঁড়ে গেলে একটার পর একটা দানা পড়তে থাকে। -তিরমিজি- ২/৪৪

বলতে দ্বিধা নেই, বর্তমানে হাদিসে বর্ণিত সমুদয় পাপাচার অহরহ হচ্ছে। সুতরাং বিপর্যয়-দুর্যোগ আসাটাই এখন স্বাভাবিক। এসব দুর্যোগ আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত। কিন্তু আমরা কি সতর্ক হই বা হবো?


শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত