খালেদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে প্রস্তুতি
বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্য পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরে জরুরি বৈঠক হয়েছে। আর সেই বৈঠকে বড় ধরণের ‘অভিযান’ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বৈঠকের প্রধান বিষয় ছিল খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং তামিল প্রস্তুতি।
বৈঠকে অংশ নেয়া পুলিশের এক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রিয়.কমকে জানান, ‘পুলিশ সদর দপ্তরে বুধবার দুপুরে শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়মিত বৈঠক ছিল। তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তারি পরওয়া জারির পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এরপর বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তারি পরওয়ানা এবং পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়।’
ওই কর্মকর্তা জানান, আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অর্ফানেজ ও জিয়া চ্যরিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার পরবর্তী তারিখ ৪ মার্চ। এরমধ্যে পুলিশকে এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে হবে। কারণ আদালত ওইদিন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের ব্যাপারে প্রতিবেদন চাইবেন। খালেদা জিয়াকে যেহেতু ‘পলাতক’ দেখানোর সুযোগ নেই তাই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতেই হবে।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল করতে সময়ের কোন বাধ্যবাধকতা আছে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘থানায় যেহেতু গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছে গেছে তাই তামিল যেকোন মুহূর্তে করা সম্ভব। আর সে বিষয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিতেই জরুরি বৈঠক।’
জানাগেছে, একই সঙ্গে বিএনপির আরো কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তারে প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। তাদের বুধবার রাতের মধ্যেই আটক করা হতে পারে। এটা খালেদা জিয়াকে আটকের পূর্ব প্রস্তুতি কী না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘সেরকমই।’
এদিকে খালেদা জিয়ার আইনজী এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া প্রিয়.কমকে বলেন, ‘আমরাও গ্রেপ্তারের আশঙ্কা করছি। আজ(বুধবার) রাতের মধ্যেই বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা আটক হবেন বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। টিএইচ খানের বাসা এরই মধ্যে ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পুলিশের টার্গেট বিএনপির আইনজীবী নেতাদের আটক করা। যাতে তারা খালেদা জিয়ার জন্য আইনী লড়াই চালাতে বা পরামর্শ না দিতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘সেই আশঙ্কা থেকেই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে আমারা বুধবার সন্ধ্যার পরই বৈঠক করে ফেলেছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সম্ভব হলে বৃহস্পতিবারই হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চালেঞ্জ করে রিট করব।’
তিনি জানান,‘ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা বিচারপতির বিরুদ্ধে আগেই খালেদা জিয়া অনাস্থা দিয়েছেন। তার শুনানি মুলতুবি আছে। খালেদা জিয়ার ওই আদালতে আত্মসমর্পনের প্রশ্নই ওঠেনা।’
প্রসঙ্গত, আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত ঢাকা- ৩ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার বুধবার এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এরইমধ্যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি রমনা, গুলশান ও ক্যান্টনমেন্ট থানায় পাঠান হয়েছে।
শেয়ার করুন