মার্কিন ইতিহাসে দীর্ঘতম সরকারী শাটডাউন: অচলাবস্থার কারণ ও পরবর্তী ধাপ
যুক্তরাষ্ট্র-কিউবার দ্বিতীয় বৈঠক: চলছে দেয়া-নেয়ার চুলচেরা হিসেবনিকেশ
কিউবা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক অরি এই দুই রাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক নিষ্প্রাণ সম্পর্কে পুনরায় প্রাণপ্রতিষ্ঠা হতে যাচ্ছে, এ খবর এখন সবার জানা। আজ শুক্রবার ঐ প্রাণ প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতা রক্ষার্থেই ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় বৈঠকে বসেছে দুই দেশ। একদিনের এ বৈঠকের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর। আজ তা বাস্তবায়িত হতে চলেছে, সঙ্গে রয়েছে আন্তঃসম্পর্ক সহজীকরণ, পরস্পরের দেশে দূতাবাস প্রতিষ্ঠাকরণ এবং বন্দি বিনিময়করণ ইস্যু।
আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক প্রশ্নের কখনও জবাব সাধারণের কাছে মেলে না। এ কারণেই যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকায় এখনও রয়ে গেছে কিউবার নাম। উল্লিখিত বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় দুই দেশের প্রথামসারির নীতিনির্ধারকরা মুখ নেড়েছেন তো বটেই, তবে তার পূর্বে কিউবা সন্ত্রাসের মদদদাতা দেশের তালিকা থেকে অব্যাহতি চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। পুঁজিবাদী যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখে এসেছে। আর কিউবা তাদের অন্যতম।
যুক্তরাষ্ট্র প্রণীত সর্বশেষ এ সন্ত্রাসী-মদদদাতা তালিকায় কিউবার নাম থাকবে কী থাকবে না, তা পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন সিনেটররা। তবে এটিও জানা গেছে, কিউবার নাম কাটা পড়ার পূর্বে তালিকাটি কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হবে। কংগ্রেসের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত হবে ঐ তালিকাটি। তবে শেষতক নাম কাটা পড়বে এমনই আভাস দিয়েছেন ওবামা প্রশাসনের একাধিক সদস্য। আরও জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদের মদদদাতা তালিকায় কিউবার নাম থাকলো কী থাকলো না, তার ওপর কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের বিষয়টি আদৌ নির্ভর করছে না।
এ ইস্যু উত্থাপিত হওয়ার পর ইতিবাচক সমাধানের আশ্বাস এলে দ্বিতীয় দফায় তোলা হয় ব্যাংকগুলোর বাণিজ্যিক স্বাধীনতার প্রসঙ্গ। পরস্পরের ওপর থেকে বাণিজ্যিক অবরোধ পুরোপুরি তুলে নেয়ার নিয়মতান্ত্রিক পথে হাঁটবে দুই দেশ। সে কদরে কিউবার ব্যাংকগুলোর ওপর থেকে অবরোধ তুলে নেয়ার দাবি সঙ্গতভাবেই আলোচনায় আসে। যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা তখন জানান, ব্যাংকগুলোর ওপর থেকে অবরোধ পুরোপুরি তুলে নেয়ার পূর্বে দূতাবাস স্থাপনের শেষ কথায় আসা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কূটনৈতিক আন্তঃসম্পর্ক তার ওপরই কাগজে কলমে নির্ভর করছে। যুক্তরাষ্ট্র কিউবায় তার রাষ্ট্রদূতের নিরাপদ ভ্রমণের নিশ্চয়তা দাবি করেন। কিউবার অপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও যেন যুক্তরাষ্ট্র যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে সে নিশ্চয়তা প্রদানের আশ্বাস শুনতে চান। কিউবার তার ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানায়।
কিউবার রাজধানী হাভানায় অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকের পর ওয়াশিংটনে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো। এ নিয়ে দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেই সন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। আগামী এপ্রিল মাসের ১০ ও ১১ তারিখে দুই দেশের কূটনীতিকদের নিয়ে আরও একটি বৈঠক বসবে বলে ঘোষণা এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র-কিউবার মিত্রতাসূচনার পর আসছে বৈঠকেই প্রথমবারের মতো পরস্পর করমর্দন করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা এবং এককালের ‘রক্তপায়ী সেনাপতি’ আখ্যা অর্জনকারী কিউবার রাষ্ট্রপতি রাউল কাস্ত্রো; যিনি বিশ্বের জনপ্রিয়তম বিপ্লবীদের অন্যতম ফিদেল কাস্ত্রোর অনুজও বটে।
News Desk
শেয়ার করুন