যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ার্ক পারমিট পাচ্ছে না ৫০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট
বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশিসহ ৫০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্টের বিরুদ্ধে জারিকৃত বহিষ্কারাদেশ স্থগিতের যে নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জারি করেছিলেন সেটি কার্যকরী হচ্ছে না। রিপাবলিকান পার্টির পক্ষ থেকে ২৬ অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত জোটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে টেক্সাসের ব্রাউন্সভিলে অবস্থিত ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের জজ এন্ডু এস হ্যানেন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেছেন। এর ফলে বিরাটসংখ্যক ইমিগ্র্যান্টের মধ্যে আবারও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।
ফেডারেল কোর্টের ওই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার জন্য খুব দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বিচার বিভাগকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানানো হয়েছে।
এদিকে, রিপাবলিকানদের এ ধরনের মনোভাবের সমালোচনা করেছেন কুইন্সের ফ্লাশিং-জ্যামাইকা নিয়ে গঠিত কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-এর কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং বলেন, ‘আমরা তথা ডেমক্র্যাটরা আমেরিকাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছি। অপরদিকে রিপাবলিকানরা টানছে পেছনের দিকে। সভ্যতার শীর্ষে অবস্থানকারী একটি জাতি-গোষ্ঠির জন্য এটি খুবই দু:খজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করেন গ্রেস মেং।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৭ সালে সর্বশেষ যে একটি বিশেষ ঘোষণা দিয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান। সে অনুযায়ী প্রায় ৩ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিলেন। এরপর অতিবাহিত হয়েছে ২৭ বছর। যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসকারী বিদেশীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সোয়া কোটি। এর সিংহভাগই শুধুমাত্র নিরাপদ জীবনের সন্ধানে আমেরিকায় এসেছেন। অনেকের সংসারে সন্তান জন্মেছে-যারা জন্মগতভাবে আমেরিকান হলেও মা-বাবার কারণে সদা দুশ্চিন্তায় জীবন কাটাচ্ছে। এহেন দুর্বিসহ পরিস্থিতির অবসানে প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন এবং জর্জ বুশও কোন পদক্ষেপ নেননি। কংগ্রেসও একটি বিল পাশ করেনি। এ অবস্থায় বারাক ওবামা তার নির্বাচনী অঙ্গিকার পূরণে গত নভেম্বর মাসে বিশেষ একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এর মাধ্যমে ৫০ লাখ অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট (যারা গুরুতর কোন অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন না বা নেই এবং কাজ করছেন এবং আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী সন্তানের মা-বাবা কিংবা গ্রীণকার্ডধারীর স্বামী/স্ত্রী)) ৩ বছর মেয়াদি ওয়ার্ক পারমিট পাবার কথা। কিন্তু ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এ আবেদন গ্রহণের কাজ শুরু হওয়ার আগের দিনই ফেডারেল জজের ওই নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি হয়। এর ফলে সমস্ত প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
শেয়ার করুন