বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আগাম প্রচার ঠেকাতে অপারগ
Billboard city of corporation Mayor polls
যত্রতত্র বিলবোর্ড-পোস্টার লাগিয়ে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আগামপ্রচার চললেও তফসিল ঘোষণার আগে সেইবিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে অপারগতা জানালনির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে কিছু করার নেইজানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ঠেলে দিয়েছেন নির্বাচনকমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।তিনি বলেছেন, তফসিল ঘোষণারমাধ্যমে প্রার্থী হওয়ার পরনির্বাচনী ব্যয়ে আগাম খরচেরবিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে সংশ্লিষ্টব্যক্তিদের।ঢাকা ও চট্টগ্রামসিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্যপ্রার্থীদের পোস্টার-বিলবোর্ডে এরইমধ্যে ছেয়ে গেছে দুই নগরী।যত্রতত্র পোস্টার কিংবা দেওয়াল লিখনঠেকাতে একটি আইন ২০১২ সালে প্রণীত হয়েছে।ওই আইনে আবার নির্বাচনের সময় ইসিরএখতিয়ারের বিষয়টিও রয়েছে।এতে সংসদ বাদে অন্য নির্বাচনেরবিষয়ে বলা হয়েছে, ইসি পরিচালিত এসবনির্বাচনের ক্ষেত্রে পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ ওসংশ্লিষ্ট স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদননিয়ে নির্ধারিত শর্তে দেওয়াল লিখনবা পোস্টার লাগানো যাবে।তবে এক্ষেত্রে অনুমোদিত পোস্টার বা দেওয়াললিখন নির্বাচন শেষ হওয়ার ১৫ দিনেরমধ্যে মুছে ফেলতে হবে।তবে তফসিল ঘোষণার পরই কেবল আইনবলে ইসি এই বিষয়ে ক্ষমতা প্রয়োগকরতে পারে বলে নির্বাচন কমিশনারশাহনেওয়াজ জানান।তিনি রোববার সাংবাদিকদের বলেন, “তফসিলেরআগে যারা প্রচারণা করছেন, তাদেরনজরদারি করবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এমুহূর্তে ইসির আইনে তা কভার করছে না।”আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত স্থান ছাড়া অন্যকোথাও দেওয়াল লিখন ও পোস্টারলাগানো হলে সর্বোচ্চ ৫০ হাজারটাকা জরিমানা, অনাদায়ে সর্বোচ্চ ৩০ দিনেরবিনাশ্রম কারাদণ্ড হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতেরমাধ্যমেও এ অপরাধের বিচার করা যাবে।তফসিল ঘোষণার পর থেকে আচরণবিধি প্রয়োগকরবে ইসি। নির্বাচনী আচরণবিধিতে প্রতীকবরাদ্দের পর প্রার্থীদের প্রচারের বিধানরয়েছে।ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রার্থীদের আগামপ্রচারে কমিশন অনেকটাই অসহায়। এবিষয়ে প্রার্থীদের পোস্টার-বিলবোর্ডসরিয়ে ফেলতে অনুরোধই কেবল জানাতে পারেনতারা।তফসিল ঘোষণার পরও আগাম প্রচারণামূলকপোস্টার-বিলবোর্ডথাকলে তা নজরদারিতে এনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে শাহনেওয়াজবলেছেন, প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্টদের আগামপ্রচারণার এই খরচও দেখাতে হবে।ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়রপ্রার্থীরা ২৩ লাখ ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ ৫০লাখ টাকা এবং ঢাকা দক্ষিণ ও চট্টগ্রামে ১৮লাখের বেশি ভোটারের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখটাকা ব্যয়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।কাউন্সিলররা ভোটার ভেদে সর্বোচ্চ ছয় লাখটাকা ব্যয় করতে পারবেন।নির্বাচনী ব্যয়সীমা লঙ্ঘন হলে সংশ্লিষ্টদেরবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেননির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ।টিভি ও গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপনদিয়ে প্রচারণামূলক কাজও ব্যয়ের সঙ্গে যুক্তকরা হবে বলে জানান তিনি।নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেল-জরিমানাসহ সর্বোচ্চ প্রার্থিতা বাতিলেরক্ষমতাও রয়েছে ইসির কাছে।ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেরতফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে রোববারেরমধ্যে কমিশন সভা আহ্বানকরা হতে পারে বলে জানিয়েছেনইসি কর্মকর্তারা।তারা বলছেন, প্রথমে ঢাকা সিটির তফসিলদেওয়া হতে পারে। পরে চট্টগ্রামের তফসিলঘোষণা করা হতে পারে।নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, “কমিশনসভায় বসে কবে তফসিল দেব এবং একসঙ্গে করব,না কি আলাদা করবো তা পর্যালোচনা করা হবে।পরীক্ষার ফাঁকে কবে ভোট দিতে পারব,তা বুঝে তফসিল দেব।”পদে থেকে প্রার্থী নয়আইন অনুযায়ী লাভজনকপদে থেকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সুযোগনা থাকলেও আগাম প্রচারে সংসদ সদস্যদেরওদেখা যাচ্ছে।ইসি কর্মকর্তারা বলেছেন, পদে থেকে মেয়ররাওনির্বাচিত করতে পারেন না। পদত্যাগকরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে।“সাংসদদেরও পদত্যাগ করতে হবে প্রার্থী হলে।তবে সিডিএ চেয়ারম্যান বা এ ধরনেরপ্রতিষ্ঠানে স্বপদে থেকে নির্বাচনের সুযোগরয়েছে স্থানীয় নির্বাচনে,” বলেন এককর্মকর্তা।প্রার্থী হতে হলে এবার সংশ্লিষ্টদের অবশ্যইটিআইএন নম্বর দিতে হচ্ছে। মনোনয়নপত্রে এসংক্রান্ত সংশোধনীও আনা হয়েছে।নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন,মনোনয়নপত্রে টিআইএন নম্বর যুক্তকরতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে মনোনয়নপত্রছাপা হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরশিগগির নতুন মনোনয়নপত্র করা হবে।সেক্ষেত্রে সব প্রার্থীকে টিআইএন নম্বরদিতে হবে।স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে সংশ্লিষ্টএলাকার ভোটার হওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায়কিছু কাউন্সিলর প্রার্থী ইসিতে ভোটারস্থানান্তরের আবেদনও করেছেন।ইসি কর্মকর্তারা জানান, তফসিল ঘোষণার পরভোটার এলাকা স্থানান্তরের সুযোগ নেই। এরআগে যারা আবেদন করেছে তাদের বিষয়ে কমিশনপর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবে।
শেয়ার করুন